child

সন্তান অমনোযোগী বা পড়া মনে রাখতে পারছে না? কী কৌশলে মেটাবেন সমস্যা?

সন্তানের পড়াশোনার বিষয় নিয়ে ভাবতে বসলেই অমনযোগিতার কথাই হয়তো বার বার আপনার কপালের ভাঁজকে আরও চওড়া করছে। এর সমাধানও আছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৪:২৯
Share:

অমনোযোগের অসুখ কব্জা করতে কিছু কৌশল অবলম্বন করুন। ছবি: শাটারস্টক।

অফিস থেকে ফিরেই ছেলের স্কুলের ডায়েরি দেখে চোখ কপালে রিয়ার। প্রতি দিন বাড়ি ফিরে নিজের সব শখ-আহ্লাদ সরিয়ে ছেলেকে নিয়ে পড়াতে বসে নিয়মিত। তবু নতুন ক্লাসে ওঠার পর থেকেই ক্রমে মনোযাগ হারাচ্ছে ছেলে। যা যা বাড়িতে পড়ছে, পড়া ধরলে তার সব ঠিকঠাক উত্তর দিলেও স্কুলে পড়াশোনার পারফর্ম্যান্স ক্রমেই তলানিতে ঠেকছে। অগত্যা রোজ স্কুলের ডায়েরিতে শ্রেণি শিক্ষিকার অভিযোগ।

Advertisement

কথা বলেও কাজ হচ্ছে না ছেলের সঙ্গে। সেও বুঝতে পারছে না কেন ভুল হচ্ছে এত? অমনোযাগই কি এর জন্য শুধু দায়ী? না কি মনে রাখতে না পারাটাও একটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে?

রিয়া একা নয়, এ সমস্যা আজকাল ঘরে ঘরে। আপনিও হয়তো সারা দিনের শেষে সন্তানের পড়াশোনার বিষয় নিয়ে ভাবতে বসলেই অমনযোগিতার কথাই হয়তো বার বার আপনার কপালের ভাঁজকে আরও চওড়া করছে। শাসন বা বার বার তিরস্কার কিন্তু এই অমনোযোগের অসুখকে কব্জা করতে পারে না। তার জন্য দরকার কিছু জরুরি কৌশল। দেখে নিন কোন কোন উপায়ে এই অমনোযাগিতাকে কব্জা করা সম্ভব।

Advertisement

আরও পড়ুন: মাথা যন্ত্রণা হয় মাঝে মাঝেই? মিথ ভুলে এ সব মেনে চললে ওষুধ ছাড়াই আরাম পাবেন

পড়াশোনার সময় সঙ্গ দিন সন্তানকে।

সন্তান কিছুটা বড় না হওয়া পর্যন্ত পড়তে বসলে তার সামনে থাকুন। এমন একটা সময় তার পড়ার জন্য বরাদ্দ করুন, যাতে অফিস সামলে সেই সময়টা আপনিও বাড়িতে থাকেন। সামনে থাকলে ওর ভুলে যাওয়ার কারণ, কোথায় ঘাটতি সে সব বোঝা অনেক সহজ হবে। শিশুর ক্ষেত্রে ছবি ও ব্লকের সাহায্য নিন। পড়ার বিষয়টা ছবি এঁকে, প্রয়োজনে আলাদা আলাদা রং ব্যবহার করে বোঝান। পড়াশোনার ক্ষেত্রে ভিজ্যুয়াল কোনও দৃশ্যও খুব কাজে আসে। তাই ইতিহাস বা নাটক বোঝাতে বসলে সেই ঘটনার উপর নির্মাণ কোনও নাটক বা সিনেমার দৃশ্যও দেখাতে পারেন। এতে মনে থাকবে বেশি। তবে সাহিত্য নির্ভর হলে তবেই তা দেখাবেন। বইয়ের গল্প পরিবর্তন করা নাটক-সিনেমায় সে সময় আস্থা রাখবেন না। সন্তান যা পড়ছে, সেটা আপনাকে পাল্টা বোঝাতে বলুন। এটা করতে সক্ষম হলে বুঝবেন, পড়া বুঝতে বা মনে রাখতে তার আর সমস্যা হবে না।​ পড়া বুঝে লিখে ফেলতে বলুন এক বার। লিখে ফেললে সহজেই মনে রাখতে পারবে তা। ইতিহাস বা সাহিত্যকে গল্পের ছলে বুঝিয়ে বলুন সন্তানকে। মনে রাখা যায় এমন কিছু কৌশল আছে। যেমন, কোনও কোনও সাল-তারিখ বা বানান, রসায়নের পর্যায় সারণী— এ সব মনে রাখার সহজ কিছু কৌশলগত ফর্মুলা আছে। নেট থেকেও সে সব জানা যায়। নিজে তা এক জায়গায় করে সন্তানকে বুঝিয়ে দিলে তো ভালই, একান্ত তা না পারলে অন্য কারও সাহায্য নিন বা ওকেই বলুন নেট ঘেঁটে সে সব জোগাড় করে নিতে। শিশু একাগ্র না হলে তাকে একটানা পড়াবেন না। সন্তানের ওতেই মনঃসংযোগের ঘাটতি দেখা যায়। বরং পড়ার মাঝে মাঝে ওর পছন্দের কিছু করতে দিন। এতে আনন্দ পাবে, মন ভাল রেখে পড়লে মনে রাখতেও পারবে সহজে।

আরও পড়ুন: শিশুকে টিফিন দেওয়ার সময় এই ভুল আপনিও করেন? অসুস্থ করে তুলছেন অজান্তে

সাফল্য আনতে সাহায্য নিন নেটের।

পড়া পারলে এই কিনে দেব, ওই কিনে দেব এ সব লোভ দেখানো ছোট থেকেই বন্ধ করুন। এতে মনঃসংযোগ তো বাড়েই না, উল্টে ওর মধ্যে নিজের দায়িত্ব-কর্তব্যের প্রতি দায়বদ্ধতা আসে না। যা করে, তা পুরস্কারের লোভে করে। অ্যাবাকাসের সাহায্য নেওয়া, পড়াশোনাকে খেলার ছলে সহজ করে তোলার পরেও ওর মনঃসংযোগ বাড়াতে না পারলে মনোবিদের সাহায্য নিন। কয়েকটা কলসাল্ট সিটিং ওর ভিতরের সমস্যাকে সামলে দিতে পারবে সহজেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement