সন্ধে ৭টার পর কী ভাবে সময় কাটালে জীবনে বদল আসবে? ছবি: শাটারস্টক।
শরীর ভাল রাখার অর্থ কেবল ফিট থাকা নয়, সেই সঙ্গে মনকেও চাঙ্গা রাখতে হবে বইকি। মন শরীরের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। অথচ মনের শুশ্রুষা আড়ালেই থেকে যায়। দৈনন্দিন জীবনে নানা অনিয়ম মানসিক স্বাস্থ্যকে বিপর্যস্ত করে তোলে। ব্যস্ত জীবনে মনের তো দূর, শরীরের যত্ন নেওয়ার পর্যন্ত সময় পাওয়া যায় না। কর্মক্ষেত্রের প্রত্যাশা পূরণের চাপ, ভবিষ্যৎ চিন্তা, ব্যক্তিগত সমস্যা, অপছন্দের কাজ করা, সময়ের অভাবে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া, অতিরিক্ত ক্লান্তি— মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হওয়ার প্রধান কিছু কারণ। মানসিক ক্লান্তির এই যে গূঢ় সমস্যা, তার শিকড় কিন্তু একটি বা দু’টি নয়। বরং অনেকগুলি। মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে তাই মেনে চলুন কয়েকটি বিষয়। জেনে নিন, সন্ধে ৭টার পর কোন কাজগুলি করলে মন থাকবে চাঙ্গা, জীবনে আসবে বড় বদল।
নিজের সঙ্গে সময় কাটান: সারা দিন দৌড়ঝাঁপের পর খানিকটা সময় নিজের সঙ্গে কাটান। একটু চিন্তা করে দেখুন, সারা দিনের মধ্যে কোন কাজটা ভাল হয়েছে, কোন কাজটা আরও ভাল হতে পারত। নিজের মনেই এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজে দেখুন। উত্তরগুলি ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন। ভবিষ্যতে সফল হওয়ার জন্য কিন্তু এই উপলব্ধিগুলিই কাজে আসে।
ডিজিটাল ডিটক্স: কাজ থেকে ফিরেই মোবাইল ঘাঁটার অভ্যাস কমবেশি সকলেরই আছে। ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, টুইটার— ক্রমাগত নেটমাধ্যমের ব্যবহারের ফলে বিষণ্ণতা, একাকীত্ব, ঈর্ষা, উদ্বেগ জন্মায়। ফলে জীবনের প্রতি অসন্তোষ তৈরি হতে পারে। সারা ক্ষণ ফোনের সংস্পর্শে থাকার ফলে মনের উপরেও তার প্রভাব পড়ে। এতে চিন্তাভাবনার পরিসরও ক্রমশ সঙ্কীর্ণ হয়ে আসে। কাজের প্রয়োজনে প্রযুক্তির কাছে মাথা নত করা ছাড়া উপায় থাকে না। মনোবিদরা বলছেন, প্রয়োজন ছাড়া নেটমাধ্যম থেকে দূরে থাকাই ভাল। প্রযুক্তির ব্যবহার ঘুমের ঘাটতি তৈরি করে। তাই প্রয়োজন ছাড়া সমাজমাধ্যম ব্যবহার না করাই ভাল। সে কারণে বাড়ি ফিরে খুব প্রয়োজন না হলে ফোন থেকে দূরে থাকুন।
পরের দিনের পরিকল্পনা করে রাখুন: আগে থেকেই পরের দিনের পরিকল্পনা করা থাকলে কাজ করতে খুব সুবিধা হয়। তাই পরের দিনের কাজগুলির পরিকল্পনা আগে থেকেই লিখে রাখুন। পরের দিন কী খাবার হবে, টিফিনে কী নিয়ে যাবেন— এই সব কিছু আগে থেকে পরিকল্পিত থাকলে কাজ করতে সুবিধা হয় অনেকটাই।
নিজেকে গুরুত্ব দিন: অন্যকে সময় দিতে গিয়ে বা কাজের ব্যস্ততায় নিজের খেয়াল রাখার ফুরসত পান না অনেকেই। এখানেই ভুলের শুরু। সব কিছু ঠিক থাকবে, যদি আপনি ভাল থাকেন। তাই সব থেকে আগে নিজের প্রতি সচেতন হন। নিজের ভাললাগা, পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব দিন। উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতা দূর করার অন্যতম উপায় হল নিজেকে ভালবাসা। তা হলে দেখবেন, কোনও সমস্যাই আর খুব গুরুতর বলে মনে হচ্ছে না। তাই বাড়ি ফিরে নিজের ভাল লাগার কাজগুলি করতে সময় খরচ করুন। বই পড়ুন, গান শুনুন, মন চাইলে ছবি আঁকুন।
যোগাসন: মন শান্ত রাখতে যোগাসনের কোনও তুলনা নেই। অনেকের শরীরচর্চা করতে ভাল লাগে না, তাঁরা বাড়ি ফিরে কিছুটা সময় যোগাসন করতে পারেন। যোগ ব্যায়াম আর প্রাণায়াম শরীরের পাশাপাশি মনকেও চাঙ্গা করবে।