ত্বকের ক্ষতি রুখতে কিছু অভ্যাসে বদল আনুন। ছবি: শাটারস্টক।
চেহারার ন্যূনতম যত্নটুকু করেন, অথচ ত্বক ক্রমশই নিষ্প্রাণ হচ্ছে। তার স্বাভাবিক জেল্লা হারাচ্ছে মুখ। এমন অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়। আর তা থেকে পরিত্রাণ পেতে স্যাঁলোতে যাওয়ার সময় বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ত্বক নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষাও। আর এতে ব্যবহৃত নানা রাসায়নিকের প্রভাবে ক্রমেই সমস্যা বাড়ছে ত্বকের।
আসলে ত্বকের যত্ন নিলেও এমন কিছু ছোটখাটো ভুল আমরা প্রায়ই করি, যার প্রভাবে জেল্লা হারায় চামড়া— এমনটাই মত রূপ বিশেষজ্ঞ শর্মিলা সিংহ ফ্লোরার। ত্বক ভাল রাখতে কেবল যত্ন নিলেই চলে না, দরকার কিছু জরুরি বিষয়ে সতর্ক হওয়াও।
দৈনিক জীবনযাপনে আপনিও কি এমন কিছু ভুল করে বসছেন, যার প্রভাবে আপনারও ত্বক সমস্যায় পড়ছে নিয়ত? কয়েকটা সহজ নিয়ম মেনে চললেই মিটতে পারে সে সমস্যা। ত্বককে প্রাণবনত রাখতে কোন কোন স্বভাব আজই ছাড়তে হবে জানেন?
আরও পড়ুন: দাঁড়িয়ে জল খান? কী কী বিপদ ডেকে আনছেন জানেন?
ধূমপান: ত্বকের যত্নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা ধূমপান। শুধু হৃদরোগ বা ফুসফুসের ক্যানসার ডেকে আনাই নয়, ত্বকেরও প্রভূত ক্ষতি করে সিগারেটের নিকোটিন। এ ছাড়া সিগারেটের কার্বন মনো অক্সাইড ত্বকেল অক্সিজেন পৌঁছনোর পথেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ত্বক শুকনো হয় দ্রুত।
তেল-মশলা: খাবারের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করা তেল-মশলার পরিমাণ কমাতে না পারলে ত্বকের ক্ষতি প্রতিরোধ প্রায় অসম্ভব। শরীরের অরিকিক্ত তেল ত্বকের কোষের মুখগুলিকে আটকে দেয়। এর প্রভাবে ব্রণর শিকার হতে হয় অনেককেই।
ব্লিচ ও স্ক্রাব: ফরসা হওয়ার ইচ্ছায় ব্লিচ ও স্ক্রাব করান অনেকেই। প্রথমেই মনে রাখতে হবে, গায়ের রং বদলানো অসম্ভব। ঘষেমেজে তাকে চটকদার বা জেল্লাদার করা যায় মাত্র। তাই ব্লিচ বা স্ক্রাবিংয়ে ফরসা হওয়া যায়— এই মিথ ঝেড়ে ফেলুন। বরং বয়স ৪০ ছোঁওয়ার আগে ব্লিচ করার কোনও প্রয়োজন নেই। তাও খুব বুঝে এবং ত্বকের অবস্থার উপর নির্ভর করে করানোই বুদ্ধিমানের কাজ। ঘন ঘন ব্লিচ বা স্ক্রাবিং ত্বককে ফরসা তো করেই না, উল্টে ত্বককে কালচে করে দেয়।
আরও পড়ুন: খুসখুসে কাশিতে জেরবার? ওষুধ না নিয়ে কেবল এই সুস্বাদু খাবারেই মিলবে সমাধান!
গরম জল: সারা শীতকাল জুড়ে গরম জলে মুখ ধোন? পারলে আজই ছাড়ুন এই অভ্যাস। গরম জল ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতাকে নষ্ট করে ও ত্বকের প্রয়োজনীয় তেলকে সরিয়ে দেয়। ফলে চামড়া কুঁচকে যাওয়া থেকে রুক্ষ হওয়া— সবটাই ঘটে গরম জলের কারণে।
ইচ্ছামতো ওষুধ: চিকিৎসকের পরামর্শ না মেনে ইচ্ছামতো ওষুধ কেনেন নিজেই? শরীরের জন্য তো বটেই, ত্বকের জন্যও খুব ক্ষতিকর এই স্বভাব। বেশ কিছু বাজারচলতি প্রচলিত ওষুধ অনেক সময় ত্বকের নানা ক্ষতি করে। সকলের ত্বকের প্রকৃতিও সমান হয় না। সব ত্বকের সঙ্গে খাপ খায় না সব ধরনের ওষুধ। অথচ সে সব না জেনেই যথেচ্ছ ওষুধ কেনার এই ‘অসুখ’ ক্ষতি করে ত্বকেরও।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রসাধনী: বিজ্ঞাপনী চমক বা লোকমুখে শুনেই প্রসাধন কেনার স্বভাব আছে? তা হলে সতর্ক হোন। প্রত্যেকের ত্বকের প্রকৃতি আলাদা হওয়ায় সব প্রসাধন সামগ্রী সকলের ত্বকের সঙ্গে খাপ খায় না। তাই এ সব খুঁটিনাটি না জেনে, প্রসাধনীতে ব্যবহৃত উপাদান না জেনে তা কিনে ফেলা মোটেও উচিত কাজ নয়। তাই প্রসাধনী কেনার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আপনার ত্বকে কোন কোন উপাদান নিরাপদ— তা জেনে তবেই কিনুন নতুন কোনও প্রসাধনী।