মেদ ঝরিয়ে ফেলুন প্রোটিন ডায়েটে। ছবি: শাটারস্টক।
ভাত-রুটি মুখে রোচে না, যত ভালবাসা মাছ-মাংসে। সন্তানের প্রতি এ অভিযোগ মা-বাবার নতুন নয়। আর এতেই তাদের চেহারা মুটিয়ে যাচ্ছে বলেও মনে করেন অনেকেই। রাস্তার খাবার, মানসিক চাপ ইত্যাদি মোটা হওয়ার শতেক কারণ বলে মেনে নিলেও, প্রোটিনের প্রশ্নে কোনও নম্বর দিচ্ছেন না আধুনিক বিজ্ঞান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাই-প্রোটিন ডায়েট থাকলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় না, বরং উল্টোটাই হয়।
পুষ্টিবিদ মালবিকা চক্রবর্তীর মতে, ‘‘ প্রোটিন জাতীয় খাবার অল্প খেলেই পেট ভরে যায়। ফলে বেশি পরিমাণে বা অবাঞ্ছিত খাবারের প্রয়োজন হয় না। এ ছাড়া প্রোটিন হজমেও তুলনামূলক ভাবে বেশি সময় লাগে। তাই খিদে পায় কম।’’
প্রতি দিন ঘুরিয়েফিরিয়ে পাতে রাখুন কিছু প্রোটিন। বাদ দিন কার্বোহাইড্রেট ও বেশ কিছুটা ফ্যাট। লো ফ্যাট আর নো কার্বস এই ডায়েটেই শরীরের ওজন কমিয়ে ফেলুন বেশ কিছুটা। মেদ ঝরাতে নানা কসরত ও শরীরচর্চার পাশাপাশি খাবার পাতে কোন কোন প্রোটিনে জোর দিতে হবে জানেন কি?
আরও পড়ুন: মেজাজ হারান প্রায়ই? রাগ বাগে আনুন এ সব কৌশলে
সয়া প্রোটিনে শরীরের মেদ যেমন ঝরে তেমনই শরীর গঠনের কাজটিও সুষ্ঠু ভাবে হয়।
ডিম
অমলেট, ডিমের ডালনা, ডিম পাউরুটি বাঙালির ডিমপ্রীতিতে মিশে গিয়েছে আজ। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন এই ডিম পাতে রাখতেই হবে ওজন ধরে রাখতে। তার প্রধান কারণ ডিমে আছে জরুরি অ্যামিনো অ্যাসিড, আয়রণ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তবে খুব মশলাদার পদ্ধতিতে অমলেট বা ডিমের কারি নয়, বরং ওজনে হ্রাস টানতে আস্থা রাখুন পোচ, সেদ্ধ ডিম বা হাফ বয়েলে।
সয়া প্রোটিন
ডায়েটে রাখুন কটেজ চিজ বা সোয়াবিনের টোফু। এক মাসেই বুঝতে পারবেন ম্যাজিক। কটেজ চিজের ক্যালশিয়াম হারকেও সমৃদ্ধ করবে আপনার। সয়াবিন এমনিতেই উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের সবচেয়ে বড় উৎস। এতে শরীরের মেদ যেমন ঝরে তেমনই শরীর গঠনের কাজটিও সুষ্ঠু ভাবে হয়।
দই
ঘরে পাতা দইয়ে রয়েছে প্রচুর প্রোবায়োটিক, প্রোটিন, জিঙ্ক ও ফসফরাসের মতো উপাদান। বাজে কোলেস্টরেল রুখতে এর কোনও বিকল্প নেই। মেটাবলিজম বাড়াতে ও চেহারাকে টোনড করে তুলতে চিনি ছাড়া টক দইয়ের কোনও জবাব নেই।
আরও পড়ুন: এই সব খাবারও মাইক্রোওয়েভে গরম করেন? বিপদ ডেকে আনছেন কিন্তু
ওজনে হ্রাস টানতে আস্থা রাখুন পোচ, সেদ্ধ ডিম বা হাফ বয়েলে।
বাদাম
আমন্ড বা ওয়ালনাট স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের অন্যতম উৎস। শরীরের ওজন ধরে রাখতে রোজ একমুঠেো বাদাম রাখুন সন্ধের ডায়েটে। তবে বাদামে ফ্যাটও থাকে অনেকটা। তাই আমন্ড, ওয়ালনাট, চিনেবাদাম মিশিয়ে ২৫ গ্রাম মতো বাদাম রাখুন ডায়েটে।
মাছ
অনেকেই মাছ নিয়ে ভুল ধারণায় ভোগেন। কিন্তু মাছে-ভাতে বাঙালি প্রবাদটি অক্ষরে অক্ষরে সত্য। তেলযুক্ত মাছ মানেই মোটা হচ্ছি এই ধারণাকে একদম বাতিল করুন। বরং মাছের তেলের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসি়ড ও মাছের মধ্যে থাকা প্রোটিন আপনার শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতেই দেবে না। সামুদ্রিক মাছও বেশ ভাল। রোগা হতে গেলে সঙ্গের ভাতটা বর্জন করুন। বরং আটার রুটিতে ভরসা রাখুন, তাও এক বারে দু’টির বেশি নয়। বরং তরকারি, মাছ, মাংস, দই খেয়ে পেট ভরান।
চিকেন
স্ট্রু হোক বা একেবারে নামমাত্র তেল-মশলায় সব্জি যোগ করে হালকা করে রান্না করা চিকেন— মেদ ঝরাতে এর ভূমিকাও কম নয়। চিকেন সহজপাচ্য অথচ অনেকটা পেট ভরায়। শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণেরও জোগান দেয়। রেড মিটের মতো কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার ভয়ও নেই।