হৃদরোগ ঠেকাতে নজর থাকুক ডায়েটেও। ছবি: শাটারস্টক।
হার্টের স্বাস্থ্য তখনই ভাল থাকে, যখন নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি ডায়েটেও থাকে ভারসাম্য। হার্টের অসুখকে ঠেকাতে গেলে যেমন জীবনযাপনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে হয়, তেমনই বদল ঘটাতে হয় খাওয়ার তালিকাতেও। তেল-মশলা-ঘি-মাখন কেবল বাদ দিলেই হয় না, বরং কী কী খেলে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়বে তাও জেনে রাখা জরুরি।
‘‘হার্টের অসুখকে প্রতিহত করতে যতটা শরীরচর্চার প্রয়োজন, ততটাই দরকার খাওয়াদাওয়াকেও সুসংহত করা। সেটা করতে না পারলে কোনও ভাবেই হৃদযন্ত্রকে সামগ্রিক ভাবে ভাল রাখা যাবে না। তাই সুষম ডায়েটেই মন দিন আগে।’’— জানালেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রকাশ হাজরা।
খাবার পাতে তাই বিশেষ নজর দিন এই সব খাবারের উপর, যা থাকলে হার্টের অসুখকে সহজেই কাবু করতে পারবেন। তেল-মশলা কম খাওয়ার পাশাপাশি খান এ সবও।
আরও পড়ুন: এই সব অভ্যাস রপ্ত করালে খাওয়া নিয়ে আর সমস্যা থাকবে না শিশুর
শরীর-সাস্থ্য নিয়ে এ সব তথ্য আগে জানতেন?
হোল গ্রেন খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়।
হোল গ্রেন, ফাইবার সমৃদ্ধ: আগেই তফাত বুঝুন হোল গ্রেন আর মাল্টিগ্রেনের। নামেই মালুম, নানা ধরনের দানাশস্য মিশিয়ে তৈরি হয় মাল্টিগ্রেন। আর হোল গ্রেনের ক্ষেত্রে যে কোনও একটি দানাশস্যের খাবারও হতে পারে। মাল্টিগ্রেন উপাদানে রিফাইন্ড হয়ে আসার সুযোগ বেশি থাকে। তাই হার্টকে ভাল রাখতে, বার্লি, ওটস, গমের আটা, ব্রাউন ব্রেড, ব্রাউন রাইস রাখুন খাবার পাতে। হোল গ্রেন শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। রক্ত সঞ্চালনকেও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। হার্টে পাম্পজনিত সমস্যা ঠেকায়।
বেরি ফ্রুটস: বেরি জাতীয় ফলে প্রচুর অ্যান্থোসায়ানিন পাওয়া যায়, তা মানসিক চাপ কমাতে খুবই দক্ষ। শুধু তা-ই নয়, এই সব ফল এনার্জি বাড়ায় ও রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে, রক্ত পরিশোধনেও এদের ভূমিকা অনেকটাই। তাই হার্টের পরিচর্যায় এই ধরনের ফল উপকারী। আজ থেকেই পাতে রাখুন স্ট্রবেরি, আমলকি, ব্লুবেরি, আঙুর জাতীয় ফল।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড: তেল বারণ, তা বলে ফ্যাটি অ্যাসিডকে বাদ দিয়ে দেবেন না যেন! বাদ যেন না পড়ে মাছের তেলও। খারাপ কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড, সিস্টোলিক ব্লাড প্রেশারের মাত্রা কম রাখে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড জাতীয় মাছ। স্যামন, টুনা, সার্ডিন, ইলিশ, ম্যাকারেল জাতীয় মাছ মাঝে মাঝেই হার্টের রোগীদের পাতে রাখুন।
আরও পড়ুন: ব্রেকফাস্টে চা-কফি? ক্ষতি এড়াতে তার বদলে খান এ সব পানীয়
টম্যাটোর লাইকোপিন হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোককে ঠেকিয়ে রাখতে পারে।
ডার্ক চকোলেট: এর ফ্ল্যাভনয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হার্টকে স্বাস্থ্যকর রাখে ঠিকই, তবে ডার্ক চকোলেটেও কিছুটা চিনি থাকেই। তাই তা কিন্তু অতিরিক্ত ক্যালোরিও বহন করে। তাই প্রতি দিন ডার্ক চকোলেটের অভ্যাস একেবারে করবেন না। মাঝে মাঝে একটা বা দুটো টুকরো খেতে পারেন।
টম্যাটো: এতে থাকা লাইকোপিন হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোককে ঠেকিয়ে রাখতে পারে। তাই ইউরিক অ্যাসিডের ভয় না থাকলে পাতে রাখুন টম্যোটাকে।
শাক: পর্যাপ্ত ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের ভাঁড়ার সবুজ শাক। রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রেখে ধমনীর কার্যকারিতা বাড়ায় নাইট্রেট সমৃদ্ধ এই সব শাক। তবে রাতে বিপাকহার রেট কম থাকে তাই রাতে এড়িয়ে চলুন শাক খাওয়া, এতে বদহজমের সম্ভাবনা থেকে যায়।