ছবি: সংগৃহীত।
হঠাৎ করে মাথার চুল সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। কেবল কার্টুন নয়, বাস্তবেও আপনার সঙ্গে ঘটেছে নিশ্চয়ই। কারণ খুঁজতে চেষ্টা করেননি। কিন্তু সম্প্রতি এক নেটপ্রভাবী এই বিষয়ে দাবি করেছেন, এমন ঘটনাকে উপেক্ষা করা উচিত নয়। কারণ এটি আসন্ন বজ্রপাতের ইঙ্গিত হতে পারে। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে তিনি দাবি করেছেন, বায়ুমণ্ডলে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র দ্রুত বৃদ্ধি পেলেই এমনটি ঘটতে পারে। আর তা বৃদ্ধি পায় তখনই, যখন বজ্রপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়। আর তাই তাঁর পরামর্শ, এমন ঘটনার সাক্ষী হলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া উচিত সেই সময়ে।
কিন্তু এমন দাবি কি বিজ্ঞানসম্মত?
দিল্লির কসমেটোলজিস্ট করুণা মালহোত্রের মতে, ‘‘এই ঘটনাটি ‘ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক ইন্ডাকশন’ নামে পরিচিত। যেখানে স্থির বিদ্যুৎ জমা হওয়ার ফলে আপনার চুল উঠে যায়। যখন বজ্রপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়, তখন এলাকার বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রগুলি তীব্র হয়ে যায়। আর এর ফলেই এমন ঘটনার সৃষ্টি। এটি ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা নয়। বরং আবহাওয়া সংক্রান্ত সঙ্কেত। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির সময় সুরক্ষিত থাকতে ত্বক এবং আবহাওয়ার অবস্থার দিকে নজর দিতে হবে।’’
তবে বজ্রপাতের আগাম সঙ্কেত হিসেবে চুলের অবস্থান পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিতে নারাজ আলিপুর আবহাওয়া দফতরের প্রধান হাবিবুর রহমান বিশ্বাস।
ছবি: সংগৃহীত।
আনন্দবাজার ডট কমকে কলকাতার ইন্ডিয়ান মেটিয়োরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের প্রধান বললেন, ‘‘বজ্রপাতের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার কারণে মাথার চুল খাড়া হয়ে যায়, এত সরল নয় বিষয়টা। যখন বজ্রপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়, তখন প্রচুর পরিমাণে বৈদ্যুতিক শক্তি সৃষ্টি হয়। যা এক বিলিয়ন ভোল্ট (১ গিগাভোল্ট) পর্যন্ত হতে পারে। সেই সময়ে একটি শক্তিশালী বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয় ওই জায়গায়। যদি আপনি বজ্রপাতের কাছাকাছি থাকেন, তা হলে সেই ক্ষেত্রটি আপনার শরীরকেও প্রভাবিত করতে পারে। এমনকি চুলকেও। বিশেষ করে যদি তা শুষ্ক হয়। বজ্রপাতের তীব্র বৈদ্যুতিক ক্রিয়ার একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এটি। বজ্রপাত সাধারণত সবচেয়ে উঁচু, বিদ্যুৎ পরিবাহী কোনও বস্তুতে আঘাত করে, যেমন গাছ, খুঁটি বা খোলা মাঠে থাকা মানুষ। সেটি মাটি স্পর্শ করার সবচেয়ে সহজ পথ খুঁজছে, চুলের সংস্পর্শে আসার চেষ্টা করছে না। সুতরাং, চুল দাঁড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা নির্ভরযোগ্য সঙ্কেত নয়। এমনকি মূল নয়, নগণ্য ঘটনা।’’