জামাকাপড় থেকে কাপড়কাচা সাবান, ব্র্যান্ডেড জিনিসপত্রের ছড়াছড়ি আমাদের জীবন। কিন্ত, জানেন কি আপনার পছন্দের ব্র্যান্ডটি দেশি না বিদেশি? দেখে নিন কিছু পরিচিত ব্র্যান্ডের আসল পরিচয়।
ডিটারজেন্ট হিসাবে এ দেশের বহু মধ্যবিত্তই টাইডের উপর ভরসা করেন। এর বিজ্ঞাপনেও রয়েছে মধ্যবিত্ত মানুষজনের রোজনামচার কাহিনি। তবে ভুল করেও একে ভারতীয় প্রডাক্ট ভাববেন না। টাইড কিন্তু আদতে মার্কিন মুলুকের সম্পত্তি। সে দেশেরএফএমসিজি সংস্থা প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলের ব্র্যান্ড হল টাইড।
স্কুল-কলেজে পড়ুয়া হোক বা ট্রেন্ডি মানুষজন, পেপে জিন্স বা ডেনিমের ভক্ত অনেকেই। ১৯৭৩ সালে সংস্থার জন্ম হয়েছিল লন্ডনের পোর্তোবেলো রোড এলাকায়। বিদেশি হলেও এৱ প্রতিষ্টাতা তিন ভারতীয় নীতিন, অরুণ এবং মিলিন শাহ। এখন এর সদরদফতর রয়েছে স্পেনে, সংস্থা এখন কার্লোস ওরতেগার অধীনে।
‘পুজোয় চাই নতুন জুতো’। কে না জানেন, এমন কালজয়ী লাইনের জন্ম বাটার বিজ্ঞাপনে। আপামর ভারত বাটাকে আপন করে নিতে বেশি সময় নেয়নি। বাঙালিয়ানার গন্ধ পাওয়া গেলেও বাটা কিন্তু এক্বেবারেই বাংলা বা ভারতের ব্র্যান্ড নয়। কানাডীয় এইসংস্থার সদর দফতর রয়েছে সুইৎজ়ারল্যান্ডে।
উইলিয়াম কোলগেটকে কত জন ভারতীয় চেনেন, তা নিয়ে সন্দেহ থাকতে পারে। তবে তাঁর মালিকানাধীন একটা ব্র্যান্ড আমাদের অনেকের জীবনেই জড়িয়ে রয়েছে। এ দেশীয় বাজারে সবচেয়ে পরিচিত টুথপেস্টের অন্যতম হল কোলগেট। ১৮৯৬ সালে উইলিয়ামকোলগেটের হাত ধরেই এর যাত্রা শুরু হয়েছিল নিউ ইয়র্কে।
এ দেশের রাস্তায় রয়্যাল এনফিল্ড মোটরবাইকের রমরমা অনেক কালের। তবে ভারতীয়দের অতি পছন্দের এই ব্র্যান্ড আদতে এ দেশীয় নয়। এর জন্ম হয়েছিল ১৯০১ সালে, ইংল্যান্ডের কাউন্টি উরস্টারশায়ারে।
অডিয়ো সিস্টেমের জন্য ভাল মতো গ্যাঁটের কড়ি খরচ করতে রাজি থাকলে এককথায় অনেকেই বোস-এর নাম করবেন। হবে না-ই বা কেন, গোটা দুনিয়ায় দীর্ঘ দিন ধরেই সমীহ আদায় করে নিয়েছে এই ব্র্যান্ডটি। তবে এর জন্মদাতা আদতে ভারতীয় বংশোদ্ভূততথা বাঙালি, অমরগোপাল বোস। ম্যাসাচুসেট্সের ফ্রামিংহ্যামে এই ব্র্যান্ডের পথচলা শুরু।
এ দেশের বাজারে টাইটান-এর ঘড়ি বা লাক্সারি আইটেম জনপ্রিয়তা বড় একটা কম নয়। নামে বিদেশি ছোঁয়া থাকলেও এই ব্র্যান্ডটি টাটা গোষ্ঠী এবং তামিলনাড়ু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনে যৌথ মালিকানাধীন।
আন্তর্জাতিক বাজারে হাইডিজাইন লেদার ব্র্যান্ডের বেশ রমরমা রয়েছে। তবে এটি একেবারে দেশি ব্র্যান্ড। তামিলনাড়ুর পুদুচেরিতে রয়েছে এর সদর দফতর।
মিনারেল ওয়াটারের জগতে বিসলেরির নামটা আর নতুন নয়। নামের মধ্যে ভারতীয় ছোঁয়া না থাকুক, এটি একেবারে দেশি সংস্থা পার্লে গোষ্ঠীর মালিকানাধীন ব্র্যান্ড।
জামাকাপড়ের ব্র্যান্ডের মধ্যে অ্যালেন সলির নামটা নতুন করে চেনাতে হয় না। পুরোপুরি বিদেশি নাম হলেও এর মালিক একেবারে খাঁটি ভারতীয়। আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর হাতেই রয়েছে এই ব্র্যান্ডের সমস্ত সত্ত্ব।
উলের পোশাকের কথা উঠলেই অনেকে মন্টে কার্লোর নাম নেন। তবে নামটা শুনেই ভাববেন না এটির জন্ম ফ্রান্সে। বরং একেবারে এ দেশীয় এই ব্র্যান্ডের জন্ম হয়েছে পঞ্জাবের লুধিয়ানায়।
মন্টে কার্লোর মতোই পার্ক অ্যাভিনিউ-এর কথা ধরুন না। নামটা শুনে মনেই হয় না এটি আসলে দেশীয় ব্র্যান্ড। তবে আদতে এটি এ দেশের রেমন্ড গোষ্ঠীর মালিকানাধীন ব্র্যান্ড।
নুডসলস দিয়ে চটজলদি খানা বানাতে ম্যাগির নাকি জুড়ি মেলা ভার। এমন বার্তাই তো ছেয়ে রয়েছে এর বিজ্ঞাপন জুড়ে। তা সেই দু’মিনিটস নুডলস এ দেশে তুমুল জনপ্রিয় হলেও এটি একেবারে বিদেশি ব্র্যান্ড। সুইৎজ়ারল্যান্ডের নেস্টলে-র হাতেই রয়েছে এই ব্র্যান্ডেরযাবতীয় অধিকার।
পিটার ইংল্যান্ড ব্র্যান্ড নেমে ইংল্যান্ড শব্দটি থাকলেও এটি মোটেও সে দেশের কোনও সংস্থার সম্পত্তি নয়। বরং দেশীয় আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীই এই ব্র্যান্ডের জন্মদাতা।
সিগারেটের মধ্যে লবঙ্গের স্বাদ পেতে অনেকেই গুডাং গরম ব্র্যান্ডের সিগারেট কেনেন। নাম শুনে খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন। কুছ পরোয়া নেই। জেনে নিন, এটি আসলে ইন্দোনেশিয়ার এক সংস্থার ব্র্যান্ড। ১৯৫৮-এ এই ব্র্যান্ডটি বাজারে ছাড়া হয়েছিল।
লুই ফিলিপের শার্ট পরতে পছন্দ করেন? ভাবছেন, কোনও বিদেশি ব্র্যান্ড গায়ে চড়ালেন। তবে জেনে রাখুন, এটি একেবারে খাঁটি দেশি ব্র্যান্ড। আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীই এটি বাজারে এনেছে।
এ দেশের বাজারে বেশ জাঁকিয়েই বসেছে লাইফবয় সাবান। তবে বহু ভারতীয়ের পছন্দের এই ব্র্যান্ডের জন্ম হয়েছিল ১৯৮৫-এ, ইংল্যান্ডের লিভার ব্রাদার্সের হাত ধরে।