বল উড চপ
আমাদের শরীর অনেকটা মেশিনের মতো। মেশিন সচল রাখতে যেমন তেলের প্রয়োজন, শরীরেরও দরকার ঠিক ফিটনেস প্ল্যান। তিরিশের পর থেকে ধীরে ধীরে মাসল ক্ষয় হতে শুরু করে। কায়িক পরিশ্রম কমে যাওয়ায় সমস্যা প্রকট হয়। পেশির ব্যবহার বেশি হলে, তার জোর বাড়ে। পেশির শক্তি বজায় রাখতে ও জোর বাড়াতে একটা মেডিসিন বল দিয়েই শুরু করুন ব্যায়াম। মেডিসিন বল না থাকলে ফুটবল বা বাস্কেটবলও একই কাজ করবে। তবে মনে রাখবেন, মেডিসিন বলের ওজন বেশি। বল দিয়ে ব্যায়ামে পেশির শক্তিবৃদ্ধি হবে, ভারসাম্যও বজায় থাকে।
• বল ব্যালান্স: এর জন্য সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বাঁ পা খানিকটা মাটি থেকে তুলুন। ডান হাতে বল ধরে রাখুন ৩০ সেকেন্ড। এ বার দু’হাতের মধ্যে বলটি নিয়ে মাথার উপরে তুলে একই ভাবে ৩০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। হাত নামিয়ে ৩০ সেকেন্ড রেখে বাঁ পা নামিয়ে এ বার ডান পা তুলে, বল বাঁ হাতে নিন। ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখার পরে পুরো প্রক্রিয়াটি একই ভাবে করুন। তিনবার তিন সেট করলে কোর মাসলকে শক্তপোক্ত হয়। মাসলের শক্তিও বাড়বে।
• বল লাঞ্জ উইথ টুইস্ট: সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বল দু’হাতে ধরে বুকের সামনে আনুন। এ বার একটি পা সামনের দিকে এগিয়ে ভাঁজ করুন। পিছনের পা-ও ভাঁজ করুন এমন ভাবে, যাতে লাঞ্জ পজ়িশন হয়। বল নিয়ে শরীর টুইস্ট করুন ৩০ সেকেন্ড মতো। আবার সোজা হয়ে অন্য পা দিয়েই আগের মতো লাঞ্জ করুন। কোয়াডস, গ্লুটস মাসলের শক্তি বাড়ায়। পায়ের পেশির গঠনও সুঠাম হয়।
• বল স্কোয়াট: সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বল বুকের সামনে ধরুন। পা দু’টি ফাঁক হলে শোল্ডার পজ়িশনে রাখুন। ধীরে ধীরে বসার চেষ্টা করুন। যেন মনে হবে, চেয়ারে বসেছেন। বসার সময়ে চাপ পড়বে থাইয়ের মাসলে। হিপ জয়েন্ট ও হাঁটুর অবস্থান সমান হবে। এর পর আস্তে আস্তে উঠুন। এ ভাবে ১৫ বার করুন তিন সেট।
• বল উড চপ: সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বল দু’হাতে ধরে হাত স্ট্রেচ করুন। এ বার জোরে নীচের দিকে নামান, কুঠার দিয়ে গাছ কাটার মতো। এই ভাবে দশ থেকে পনেরো বার এক-এক সাইডে করুন।
• ক্রাঞ্চ উইথ বল হোল্ড: চিৎ হয়ে শুয়ে দু’হাতে বল ধরুন। বল ধরে হাত মাথার উপরে নিয়ে যান। এ বার পা ভাঁজ করে শূন্যে তুলে রাখুন, এল শেপের মতো। তার পর নিঃশ্বাস ছেড়ে শরীরের উপরের অংশটি নিয়ে আসুন হাঁটুর দিকে। আবার শুয়ে পড়ুন। তিন সেটে ১৫ বার করুন।
• ভি আপ: সোজা হয়ে শুয়ে পা মেলে ধরুন। দু’হাত দিয়ে বল ধরে মাথার উপরে নিয়ে যান। এ বার ভি পজ়িশন তৈরি করতে পেটের পেশি শক্ত করে হাত ও পা একসঙ্গে তুলুন। কিছুক্ষণ রেখেই আগের পজ়িশনে ফিরে যান।
• বল নিয়ে ওয়র্কআউট: বল ড্রপ করিয়ে জগ করতে পারেন। এই ধরনের ব্যায়ামে মস্তিষ্কের সঙ্গে চোখ, হাত শরীরের নানা অংশের কো- অর্ডিনেশন বজায় থাকায় ব্যায়ামের মধ্যে আনন্দও খুঁজে পাবেন।
• বল থ্রো: মাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে সিটআপ পজ়িশনে পা ভাঁজ করে বল দেওয়ালে থ্রো করে, ক্যাচ ধরুন। এতে পেটের পেশি টানটান হবে।
• বল স্ল্যাম: সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে মাথার উপর থেকে যতটা সম্ভব জোরে বল মাটিতে ফেলেই ক্যাচ ধরুন। পেশির সঞ্চালনের সঙ্গে মনোযোগও বাড়বে।
• বল লেগ রেইস: সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত দু’পাশে রেখে কেবল দুই পায়ের মধ্যে বলটা চেপে ধরে ৯০ ডিগ্রি অবধি তুলুন আর তার পর ৩০ ডিগ্রিতে নামান।
• সিটআপ উইথ বল: দু’জন ব্যক্তি মুখোমুখি সিটআপ পজ়িশনে বসুন। একজন ওভারহেড পজিশনে বল ধরুন। তার পর অন্যের দিকে
বলটা ছুড়ে দিন। অপরজন বল ক্যাচ করে, একই ভাবে বল থ্রো করবে।
• বল টুইস্ট: দু’জন ব্যক্তি পিঠে পিঠ লাগিয়ে দাঁড়ান। একজন শরীরের উপর অংশটি টুইস্ট করে অন্যজনের হাতে বলটি ধরিয়ে দিন। এর পর অন্যজনও ঠিক একই ভাবে টুইস্ট করে বল ধরুন। আবার ঠিক বিপরীতে টুইস্ট করে বলটি অন্যজনের হাতে পাস করতে হবে। এ ভাবে ১৫-২০ বার করুন।
এই ধরনের ব্যায়াম মন ভাল রাখতেও সাহায্য করে। নিয়মিত করলে উপকারও পাবেন।