Biriyani around the World

মেমোনি থেকে ডানবাউক, কত প্রকার বিরিয়ানি যে আছে! কোন দেশে কী ভাবে রান্না হয়, জেনে নিন

যতই আমরা কলকাতার বিরিয়ানি নিয়ে মাতামাতি করি না কেন, বিশ্ব জুড়ে কিন্তু বিরিয়ানির রকমভেদ অনেক। তাদের স্বাদও একে অপরকে টেক্কা দেয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ১৯:৪৭
Share:
০১ ২০

১৮৫৬ সালে নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ কলকাতায় আসার পরেই এই শহরে বিরিয়ানির পথচলা শুরু হয়। তার পরেই বিরিয়ানির স্বাদ-গন্ধকে আপন করে নিয়েছে শহরবাসী। বাঙালির বিরিয়ানিপ্রেম থুরি, বিরিয়ানির আলুর প্রতি প্রেম কারও অজানা নয়। হালকা মশলাদার কলকাতা বিরিয়ানির মূল আকর্ষণই হল আলু, তার সঙ্গে সেদ্ধ ডিম।

০২ ২০

শহরের রাস্তাঘাটের অলি-গলিতে এখন বিরিয়ানির দোকান। দোকানের ১০০ মিটারের মধ্যে এসে পড়লেই নাকে আসে বিরিয়ানির গন্ধ! দূর থেকে চোখে পড়ে লাল কাপড়ে মোড়া বিরিয়ানির সুবিশাল হাঁড়ি। আর তার পর বিরিয়ানির টান অবহেলা করে দোকান পেরিয়ে চলে যাবেন, এমন সাধ্যি কার? তবে যতই আমরা কলকাতার বিরিয়ানি নিয়ে মাতামাতি করি না কেন, বিশ্ব জুড়ে কিন্তু বিরিয়ানির রকমভেদ অনেক। তাদের স্বাদও একে অপরকে টেক্কা দেয়।

Advertisement
০৩ ২০

পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই মাংস দিয়ে ভাত তৈরির চল আছে। তবে সবগুলিকে মোটেই বিরিয়ানি বলা চলে না। বিরিয়ারনির উৎপত্তি নিয়ে মতভেদ আছে। পার্সি ভাষায় ‘বিরিঞ্জ’-এর অর্থ চাল, আর ‘বিরিয়ান’ শব্দের অর্থ হল রোস্ট বা ভেজে নেওয়া। অনেকেই বলেন, পারস্যে মাংসের রোস্ট আর ভাত সহযোগে তৈরি সুস্বাদু পদটিই আসলে বিরিয়ানি। সেখান থেকেই বিরিয়ানির উৎপত্তি।

০৪ ২০

অনেকে আবার বলেন মুঘল সেনাবাহিনী ভারতে আসার পরে যুদ্ধক্ষেত্রে ভোজের জন্য চাল, মাংস আর বিভিন্ন রকম মশলা দিয়েই প্রথম বিরিয়ানি তৈরি করেন। দেশ জুড়ে মুঘল সাম্রাজ্য বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বিরিয়ানির স্বাদে বদল এসেছে। শুরু হয়েছে কাচ্চি (মাংস আর ভাত একসঙ্গে রান্না হয়) থেকে পাক্কি (মাংস আর ভাত আলাদা করে রান্না হয়) বিরিয়ানির পথ চলা।

০৫ ২০

হায়দরাবাদি বিরিয়ানি: মশলা মাখানো মাংস আর চাল একসঙ্গে সেদ্ধ করা হয় এই বিরিয়ানিতে। একেই কাচ্চি স্টাইল বিরিয়ানি বলে। এই বিরিয়ানিতে গুঁড়ো মশলার ব্যবহার হয়।

০৬ ২০

অন্যান্য বিরিয়ানির থেকে অনেক বেশি মশলাদার হয় হায়দরাবাদি বিরিয়ানি। ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, কাঁচালঙ্কারও ব্যবহার হয় হায়দরাবাদি বিরিয়ানিতে।

০৭ ২০

লখনউই বিরিয়ানি: হায়দরাবাদি বিরিয়ানির তুলনায় এই বিরিয়ানিতে মশলার পরিমাণ অনেকটাই কম থাকে। মূলত গোটা মশলার ব্যবহার হয়। এই বিরিয়ানিকে হলা হয় আওয়াধি বিরিয়ানি। এই বিরিয়ানিতে স্বাদ ও মশলার সুগন্ধের পারফেক্ট যুগলবন্দি থাকে।

০৮ ২০

লখনউই বিরিয়ানি তৈরির সময় মাংস আর ভাতকে আলাদা করে বানানো হয়। তার পর স্তরে স্তরে সাজিয়ে দম দেওয়া হয়। এই বিরিয়ানিতে গোলাপজল, গোলাপের পাপড়ি আর কেওড়া জলের ব্যবহার করা হয়।

০৯ ২০

সিন্ধি বিরিয়ানি: পাকিস্তানে এই বিরিয়ানি বেশ জনপ্রিয়। সেখানকার যে কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানের মেনুতে এই পদ থাকবেই। এই বিরিয়ানিও বেশ মশলাদার হয়।

১০ ২০

কলকাতা বিরিয়ানির মতো এই বিরিয়ানিতেও আলুর ব্যবহার চোখে পড়ে। তবে বড় মাপের নয়, ডুমো ডুমো করে কাটা আলুই রান্নায় ব্যবহার করা হয়। গুঁড়ো মশলার পাশাপাশি পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, লেবুও ব্যবহার করা হয়। অনেক সময়ে সব্জিও পড়ে এই বিরিয়ানিতে।

১১ ২০

মেমোনি বিরিয়ানি: গুজরাত আর সিন্ধু প্রদেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের মধ্যে এই বিরিয়ানি বানানোর চল রয়েছে। মাংস, দই, ভাজা পেঁয়াজ, আলু হল এই বিরিয়ানির মূল উপকরণ।

১২ ২০

এই বিরিয়ানিতে খুব বেশি হলুদ কিংবা কমলা রঙের ব্যবহার হয় না। মাংসের গায়ে মাখানো মশলা দিয়েই হালকা বাদামি রঙের হয় এই বিরিয়ানি। পাকিস্তানের করাচিতে আবার এই বিরিয়ানি করাচি বিরিয়ানি নামেই জনপ্রিয়।

১৩ ২০

তেহারি: পাকিস্তান আর ভারতে মূলত নিরামিষ বিরিয়ানিকে বলা হয় তেহারি। অর্থাৎ, সব রকম সব্জি, পনির আর বিরিয়ানির মশলা দিয়ে বাসমতী চাল সেদ্ধ করে যে পোলাও তৈরি হয় তাকেই বলা হয় তেহারি।

১৪ ২০

তবে বাংলাদেশে পাঁঠার মাংস কিংবা গরুর মাংস দিয়ে তেহারি বানানো হয়। এই ধরনের বিরিয়ানিতে বড় দানার চাল নয়, ছোট দানার পোলাওয়ের চাল ব্যবহার করা হয়। তেহারিতে ভাজা পেঁয়াজ, গুঁড়ো মশলা, ক্ষোয়া ক্ষীর আর কিশমিশও ব্যবহার করা হয়।

১৫ ২০

ডানবাউক বিরিয়ানি: মায়ানমারে মাংস আর ভাত স্তরে স্তরে সাজিয়ে যে পদ তৈরি করা হয় তাকে বলে ডানবাউক। এই পদটিকেও বিরিয়ানি বলাই যায়। বানানোর পদ্ধতিতেও বিরিয়ানির সঙ্গে মিল রয়েছে।

১৬ ২০

এই বিরিয়ানি মূলত পাক্কি কায়দায় বানানো হয়। মশলাদার ভাত আর মাংস স্তরে স্তরে সাজিয়ে উপর থেকে বেরেস্তা ছড়িয়ে পরিবেশন করা হয় এই বিরিয়ানি। কেশরেরও ব্যবহার করা হয় এই পদে।

১৭ ২০

নাসি বিরিয়ানি: মালয়শিয়া আর সিঙ্গাপুরে মূলত নাসি বিরিয়ানি বেশ জনপ্রিয়। এই বিরিয়ানিতেও মাংস আর ভাত আলাদা করে রান্না করা হয়। এ ক্ষেত্রে ভাত রান্নার সময়ে পেঁয়াজ, টম্যাটো, আদা, রসুন, গুঁড়ো মশলার সঙ্গে নারকেলের দুধ আর লেমন গ্রাস ব্যবহার করা হয়।

১৮ ২০

মাংসটি এ ক্ষেত্রে আলাদা করে তৈরি হয়। মাংসের পদটিও বেশ মশলাদার করে বানানো হয়। এই বিরিয়ানিতে ভাত আর মাংস মিলেমিশে যায় না। ভাতের উপরে কিংবা পাশে মাংস দিয়ে পদটি পরিবেশন করা হয়, খানিকটা বাঙালির পোলাও-মাংসের মতোই।

১৯ ২০

আফগানি বিরিয়ানি: ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের মতো আফগানিস্তানেও কিন্তু বিরিয়ানি বেশ জনপ্রিয়। এই বিরিয়ানিতে খুব বেশি মশলা ব্যবহার করা হয় না। সব রকম মশলা দিয়ে মাংস সেদ্ধ করে নিয়ে সেই জলেই ভাত বানানো হয়।

২০ ২০

এই বিরিয়ানিতে কেশর কিংবা কোনও রঙের ব্যবহার হয় না। এই বিরিয়ানির বিশেযত্ব হল এতে অনেক ধরনের শুকনো ফল ব্যবহার করা হয়। খুব ঝাল না, হালকা মিষ্টি স্বাদের হয় এই বিরিয়ানি। এই বিরিয়ানি কাবুলি পোলাও নামেও পরিচিত।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement