ছবি: অনির্বাণ সাহা।
মাটির প্রদীপের প্রসঙ্গ উঠলেই মনে পড়ে রবীন্দ্রনাথের সেই লাইন—
‘কেরোসিন-শিখা বলে মাটির প্রদীপে
ভাই ব’লে ডাক যদি দেব গলা টিপে.’
আসলে প্রতিযোগিতায় রাইস, লেজার কিংবা এলইডি যাই আসুক না কেন, মাটির প্রদীপের ঐতিহ্য কখনও ম্লান হয় না। ঘর সাজানোর জন্য হোক বা পুজোর প্রয়োজনে, ১০৮ প্রদীপের রিপ্লেসমেন্টে কিন্তু মোমবাতি খুব কম ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়। প্রদীপ জলে ভিজিয়ে রাখা সলতে পাকানো ইত্যাদি ঝামেলার অজুহাত দেখিয়ে যতই তার পড়শিরা বাজার দখল করার চেষ্টা করুক না কেন, প্রথম স্থানটি সে কিন্তু হাতছাড়া করেনি কোনও দিনই। উপরন্তু তাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে বাজারে এসেছে ফ্যান্সি প্রদীপ থেকে মোম প্রদীপ। শপিং মল, অনলাইন থেকে শুরু করে পাড়ার আটপৌরে দোকান সবেতেই তার দেখা মেলে। কখনও নানা রঙের উপর নকশা কাটা, কখনও আবার জরি চুমকি, কাচ। এই ধরনের প্রদীপের ক্রেতা আগে মূলত অবাঙালিরা হলেও এখন বাঙালিরাও সমান ভাবে পাল্লা দিচ্ছে।
সাবেকি প্রদীপের সঙ্গেও এসেছে নানা বৈচিত্র্য। কোথাও লন্ঠনের মধ্যে প্রদীপ বা কোথাও গনেশের মূর্তির সঙ্গে, শঙ্খের মধ্যে বসানো প্রদীপ বা মাটির থালায় বসানো প্রদীপ এই সব ধরনের প্রদীপের মধ্যে একটা সাবেকিয়ানা রয়েছে। নিয়ম রীতি মেনে যেমন প্রদীপ জ্বালানো যায় তেমন সুন্দর ভাবে ঘরও সেজে ওঠে। আর শুধুমাত্র দীপাবলি উপলক্ষে নয়, যে কোনও অনুষ্ঠানে এই প্রদীপ দিয়ে সুন্দর করে সাজানো যায়।
এ ছাড়াও এখন ভেষজ সুগন্ধযুক্ত নানা প্রদীপ পাওয়া যায়। যা উপহার হিসেবেও বেশ ভাল। এ ছাড়াও শৌখিনতার কথা মাথায় রেখে পাওয়া যাচ্ছে ফ্লোটিং প্রদীপ। ফুলের পাপড়ি আর ফ্লোটিং প্রদীপ সুন্দর করে সাজাতে পারলে ঘরের সৌন্দর্য তো বাড়েই আর পরিবারের সকলের মনও ভাল থাকে।
বেশ কয়েক বছর ধরে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে মোমপ্রদীপ। নানা রঙের নকশা কাটা এই প্রদীপ বেশি ক্ষণ যেমন জ্বলে তেমন ঝামেলাও কম থাকে। আর দেখতেও বেশ আকর্ষণীয়। তাই এই প্রদীপের জনপ্রিয়তা দেশ বিদেশ জুড়ে।
পুজোআচ্চার কাজে ঘি-এর প্রদীপ তো আমরা জ্বেলেই থাকি। তাই সেই সব ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে এ বছর পাওয়া যাচ্ছে ঘি কর্পূরের প্রদীপও।
দীপাবলির রাতে অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরতে প্রস্তুত সবাই। সাবেকি আলোর সারিতে সুখ সমৃদ্ধি আসুক আপনার বাড়িতে।