গড়িয়াহাট ব্রিজের নীচে চলছে খাবার বিতরণ। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে কী করে পেট চলবে ফুটবাসীদের? তাঁদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে কী করবেন তাঁরা? এই অক্সিজেন সঙ্কটে সাধারণ মানুষকে কী করেই বা সাহায্য করা যায়? এই প্রশ্নগুলো তাড়া করেছিল এক দল কলেজ প়ড়ুয়াকে। তাই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, একজোট হয়ে প্রত্যেক দিন গড়িয়াহাট ব্রিজের নীচে ১৫০ জন ফুটবাসীর হাতে খাবার তুলে দেবেন। মানুষের প্রয়োজনে যাতে বাড়ি বসেই ওষুধ এবং অক্সিজেন পেয়ে যান, সেই প্রয়াশও চালাচ্ছেন অরুণিমা মহাপাত্র, অনরণ্য বসু, জিষ্ণু সেনগুপ্ত, দীপায়ন প্রামাণীক, শ্রীনন্তু স্যানাল, সুতনু চক্রবর্তী, শুভ্রদীপ মুখোপাধ্যায়এবং প্রবাল ঘোষ মিলে।
ওঁরা প্রত্যেকেই হয় কলেজ-পড়ুয়া, কিংবা সদ্য কলেজ পাশ করা। প্রথমে নিজের খরচেই এই প্রয়াশ শুরু করেছিলেন। কিন্তু নেটমাধ্যমে তাঁদের কর্মকাণ্ডের ছবি দেখে বহু মানুষ এগিয়ে এসেছেন। ‘‘আমরা ভাবতে পারিনি, এত জন আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন। এই বিপুল আর্থিক সাহায্য পেয়ে আমরা একটা বড়সড় ফান্ড তৈরি করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে শহরের আরও কিছু এলাকায় এবং সম্ভব হলে শহরতলি এবং জেলাতেও আমরা এই ধরনের ব্যবস্থা শুরু করার পরিকল্পনা করছি, ’’ বললেন অনরণ্য।
বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে ওষুধ। নিজস্ব চিত্র
ফুটপাথবাসীদের খাবার দেওয়া ছাড়াও বাড়ি বাড়ি ওষুধ এবং অক্সিজেন জোগান দেওয়ার চেষ্টা করছেন ওঁরা সকলে। কেউ নাগেরবাজার-হাতিবাগান-শ্যামবাজার অঞ্চলে, কেউ যাদবপুর, লেক গার্ডেন্স, গল্ফ গ্রিন, কেউ আবার অন্য কোনও প্রান্তে ডেলিভারি করার দায়িত্বে রয়েছেন। অনরণ্যদের প্রয়াস নেটমাধ্যমে বিপুল প্রচার পেয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মতো তারকাদের নজরে আসার পর। তাঁরা প্রত্যেকেই এই উদ্যোগে আপ্লুত। এবং নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ-এ তাঁরা এগুলি বাকিদের কাছে তুলে ধরেছেন। তাতে আরও বেশি মানুষ জানতে পেরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
কতদিন চলবে এই ব্যবস্থা? প্রশ্নের উত্তরে অনরণ্য বললেন, ‘‘এই মাসটা পুরোটা চালাব। ফান্ড রয়েছে। তাই আগামী মাস থেকে আশা করছি আমরা আরও কিছু জায়গায় পৌঁছে যেতে পারব।’’