কোভিডের কারণে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। তার প্রভাবে বেড়েছে উদ্বেগ। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বব্যাপী এই কোভিড পরিস্থিতি মানুষের শারীরিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যকেও সমান ভাবে প্রভাবিত করেছে। শুধু মাত্র এই পরিস্থিতি বলে নয়। কোভিড কালে জন্ম নেওয়া এই সমস্যার বীজ ছড়িয়ে পড়তে পারে আগামী প্রজন্মের মধ্যেও, বলে আশঙ্কা মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের।
কোভিডের কারণে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। তার প্রভাবে বেড়েছে উদ্বেগ। দু’বছর আগে শুরু হওয়া এই অতিমারি পরিস্থিতি যত দীর্ঘ হচ্ছে, তত যেন চাপ বাড়ছে মনেরও।
মেডিক্যাল পত্রিকা ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি তথ্য বলছে যে, ২০২০ সালে পৃথিবীর প্রায় ২০৪টি দেশের মানুষ করোনার পাশাপাশি হতাশা ও উদ্বেগজনিত সমস্যারও সম্মুখীন হয়েছেন।
ছবি: সংগৃহীত
সার্বিক সুস্থতার অন্যতম ভিত্তি হল মানসিক স্বাস্থ্য। সমীক্ষা বলছে, বিগত দু’বছরে কোভিড পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যেও ভেঙে পড়েছে। দেখা গিয়েছে, প্রায় ৫৩ লক্ষ মানুষ অবসাদজনিত সমস্যায় এবং প্রায় ৭৬ লক্ষ মানুষ উদ্বেগজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনার প্রথম স্ফীতি থেকেই বদলে গিয়েছে দৈনন্দিন সামাজিক ও কর্মজীবন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে ব্যহত হয়েছে সামাজিক সংযোগ। বিঘ্নিত হয়েছে পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনও। অবধারিত প্রযুক্তি নির্ভরতা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, বেকারত্ব, বেতনে কোপ , সম্পর্কে বিচ্ছেদ। ঘরবন্দি হয়ে পড়াশোনা, সব কিছু মিলিয়ে একটি গোটা প্রজন্ম এক চরম অনিশ্চয়তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতি অনুধাবন করার পর মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মত, অতিমারিতে তৈরি হওয়া এই সমস্যা যে শুধু সাময়িক ভাবে ভোগাচ্ছে তা-ই নয়, মনের অসুখের শিকার একটি গোটা প্রজন্ম। সাধারণ মানুষ হোন বা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমাজের প্রতিষ্ঠিতরা— মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে সকলকেই। এখনও হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, বর্তমান প্রজন্ম তো বটেই, অতিমারিতে তৈরি হওয়া এই সমস্যার প্রভাব পড়তে পারে ভাবী প্রজন্মের উপরও।