কুকুরের বাতকর্মে অতিষ্ঠ দম্পতি। ছবি: সংগৃহীত।
অস্ট্রেলিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যাচ্ছিলেন দম্পতি। ১৩ ঘণ্টার যাত্রাপথ যাতে আরামদায়ক এবং সুখকর হয়, তার জন্য প্রিমিয়াম ইকনমির ক্লাসের টিকিট কেটেছিলেন। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, আর হয় আর এক। এটা যে কত বড় সত্যি, সম্প্রতি তা মর্মে মর্মে অনুভব করলেন নিউ জিল্যান্ডের বাসিন্দা গিল প্রেস এবং তাঁর স্বামী ওয়ারেন প্রেস। কিন্তু কী এমন হল যে, শেষ পর্যন্ত বিলাসবহুল আসন ছেড়ে সাধারণ ইকনমি ক্লাসে চেপে সিঙ্গাপুর আসতে হল?
প্রিমিয়াম ইকনমিতে গিল এবং ওয়ারেনের ডান দিকের আসনে বসেছিলেন এক মহিলা। তবে তিনি একা ছিলেন না। সঙ্গে তাঁর পোষ্য কুকুরটিও ছিল। পোষ্যেকে নিয়ে বিমান সফর করতে দেখে প্রথমে খানিক অবাকই হয়েছিলেন দম্পতি। কিছু ক্ষণ পর পোষ্যের মালিক কথায় কথায় জানিয়েছিলেন, একা বিমানে চড়তে তিনি ভয় পান। তাই পোষ্যকে নিয়ে এসেছেন। এত ক্ষণ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। গোলমাল বাধল, যখন কুকুরটি বাতকর্ম শুরু করল। বিরক্ত লাগলেও প্রথম দু’-এক বার বিষয়টি এড়িয়ে যান গিল এবং ওয়ারেন। কিন্তু ক্রমশ এটি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে যেতে থাকল। কুকুরের বাতকর্মের ঠেলায় তখন গোটা প্রিমিয়াম ইকনমি ক্লাস দুর্গন্ধময় হয়ে উঠেছে। কোনও ভাবেই আর সেখানে শান্ত হয়ে বসে থাকার মতো পরিস্থিতি ছিল না।
গিল এবং ওয়ারেন বিমান কর্মীদের বিষয়টি জানান। কিন্তু তাঁরা কোনও সমাধান করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তাঁরা নিরুপায় হয়ে আসন বদলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তাঁদের অনুরোধ মেনে ইকনমি ক্লাসে দু’টি আসন দেওয়া হয়। তখনকার মতো বিষয়টি নিয়ে আর কথা না বাড়ালেও গন্তব্যে পৌঁছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রিমিয়াম ইকনমি ক্লাসের টিকিটের দাম ফেরত চান দম্পতি। গোটা ঘটনাটির জন্য বিমান সংস্থার অব্যবস্থাকেই দায়ী করেন তাঁরা। বিমান সংস্থাও নিজেদের দায় স্বীকার করে নেয়। তবে টিকিদের দাম ফেরত দিতে নারাজ ছিলেন কর্তৃপক্ষ। সংস্থার তরফে তাঁদের একটা বেশ বড় অঙ্কের ‘গিফট ভাউচার’ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ওই দম্পতি তাতে রাজি হননি। তখন টিকিটের অর্ধেক দাম ফেরত দিতে চান সংস্থার কর্তৃপক্ষ। গিল এবং ওয়ারেন তাতেও রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত দম্পতির জেদের কাছে নতিস্বীকার করে বিমান সংস্থা। ১ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন দম্পতি। অনেক টালবাহানার বিমান সংস্থার তরফে পুরো টাকাটাই ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়। টিকিটের দাম ফেরত পাওয়ায় খুশি দম্পতি। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, পোষ্যদের নিয়ে কাজ করে, এমন কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে এই টাকাটা দেবেন।