চেয়ার যোগ–নি এক্সটেনশন। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
চেয়ার যোগ– নি এক্সটেনশন অর্থাৎ হাঁটু সম্প্রসারণ
আমাদের শরীরের প্রধান ভারবাহী অস্থিসন্ধি হল হাঁটু। আজীবন ভার বইতে হয়, তাই নিয়মিত কিছু এক্সারসাইজ না করলে বয়স বাড়ার সঙ্গে অস্থিক্ষয় ও অন্যান্য কারণে হাঁটুর ব্যথা সঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। নিয়ম করে নি এক্সটেনশন এক্সারসাইজ অভ্যাস করলে হাঁটুর আশপাশের পেশী মজবুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অস্থিসন্ধি সচল থাকে বলে হাঁটুর ব্যথায় ভুগতে হয় না। হাঁটু সম্প্রসারণ আসনটি যে কোনও বয়সেই করা যায়। যাঁদের ইতিমধ্যে হাঁটুর ব্যথা শুরু হয়েছে, তাঁরাও এই আসন অভ্যাস করলে ব্যথা বাড়বে না।
কী ভাবে করব
· মেরুদণ্ড টানটান রেখে চেয়ারে বসুন। পা শক্ত ভাবে মাটিতে রাখুন। মাথা ও ঘাড় যেন এক সরলরেখায় থাকে খেয়াল রাখুন। চোখ বন্ধ করে দুই হাত রাখুন কোলের ওপর। এটি আসন শুরুর প্রাথমিক অবস্থান।
· এ বার শ্বাস নিতে নিতে ডান পা সামনের দিকে যতটা সম্ভব ওপরে তুলুন। হাঁটু ভাঁজ না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই অবস্থানে ঊরুর পেশী টানটান হয়ে পা উঁচুতে ধরে রাখবে। এই অবস্থানে পা তুলে রাখুন কয়েক সেকেন্ড।
· এ বারে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পা নীচে নামাতে হবে। প্রবীণদের পা তুলতে অসুবিধে হলে দুই হাতে চেয়ারের পাশে ভর দিতে পারেন।
· একই ভাবে বাম পা ওপরে তুলে কয়েক সেকেন্ড রেখে নীচে নামান। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। এই ভাবে ৭ রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
· ৭ রাউন্ড অভ্যাস হয়ে গেলে শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন। ঊরুর পেশী ও হাঁটুর নীচে পায়ের পিছেনের দিকে কাফ মাসলে টান অনুভব করবেন। এর ফলে এই সব পেশীতে রক্ত চলাচল বেড়ে গিয়ে মজবুত ও শক্তিশালী হয়।
· আসন অভ্যাসের সময় শ্বাসপ্রশ্বাসের ওপর খেয়াল রাখতে হবে। আসন করার সময় ঘাড়, মাথা ও পিঠ সোজা রাখুন।
আরও পড়ুন: ৭৩তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
সতর্কতা
হাঁটু, ঊরু বা কোমরে সাংঘাতিক ব্যথা কিংবা চোট থাকলেও এই আসন অভ্যাস করতে পারেন। তবে শুরু করতে হবে ধুব ধীরে। জোর করে অভ্যাস করার চেষ্টা করলে ব্যথা বাড়তে পারে। দরকার হলে কারও সাহায্য নিতে পারেন। তিনি সইয়ে সইয়ে হাত দিয়ে পা ওপরে তুলতে সাহায্য করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ৭২তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
কেন করব
বয়স বাড়লে হাঁটু-সহ শরীরের বেশির ভাগ অস্থিসন্ধি ক্ষয়ে গিয়ে এবং সন্ধির লুব্রিক্যান্ট সায়নোভিয়াল ফ্লুইড কমে গিয়ে স্টিফ হয়ে যাবার ঝুঁকি থাকে। নিয়মিত নি এক্সটেনশন অর্থাৎ হাঁটু সম্প্রসারণ যোগাসন অভ্যাস করলে ঊরু ও কাফ মাসলের শক্তি বাড়ে। একই সঙ্গে অস্থিসন্ধির সায়নোভিয়াল ফ্লুইডের ক্ষরণ স্বাভাবিক থাকে। তাই হাঁটুর অস্থিসন্ধিতে চাপ কম পড়ে ও জয়েন্টের সচলতা বজায় থাকে।