বাজার করতে গেলে এই ভাবেই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ছবি- পিটিআই।
করোনাভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণ রুখতে ভারতে রাজ্যে রাজ্যে চলছে লকডাউন। চলবে আরও বেশ কিছু দিন। বাধ্য হয়েই আমাদের ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে। তবু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে তো আমাদের বাড়ি থেকে বেরতে হচ্ছেই, তা যত অল্প সময়ের জন্যই হোক।
অন্য দিকে, ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এ উত্তরোত্তর রপ্ত হয়ে ওঠার পরেও আমাদের অনেককেই অফিসে যেতে হচ্ছে। সেখানে গিয়ে অনেকটা সময় কাটাতেও হচ্ছে। এই সব ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণ রুখতে বাধ্যতামূলক ভাবে আমাদের যে যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, আমরা সকলেই কি তা নিচ্ছি? যদি না নিয়ে থাকি এখনও পর্যন্ত, তা হলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তো আমাদের বাড়ছেই, আমাদের মাধ্যমে বাড়ির লোকজনের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও জোরালো হচ্ছে। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
কী বলছেন চিকিৎসকেরা?
চিকিৎসক সুমিত সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘বাজারে গিয়ে কোনও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অন্তত ১ থেকে ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। একই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে অন্য ক্রেতাদের থেকেও। না হলে কিন্তু সংক্রমণের আশঙ্কা কমানো যাবে না। দূরত্ব বজায় রাখাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আর মাস্ক পরে যেতে হবে বাজারে।’’
বাজারে অবশ্য আমাদের গ্লাভস পরে যাওয়ার তেমন দরকার নেই। তবে যাঁরা বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করছেন বাজারে তাঁদের সঙ্গে যেহেতু অনেক ক্রেতার সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকে,তাই তাঁদের হাতে গ্লাভস পরে থাকা উচিত। না হলে সেই বিক্রেতাদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে অন্য ক্রেতাদের মধ্যে। এমনটাই মনে করেন মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস।
তাঁর কথায়, “বাজার থেকে আনা সবজি বাড়িতে ভাল ভাবে ধুয়ে নিতে হবে। সেটা গরম জলে ধুয়ে নিলেই সবচেয়ে ভাল হয়। তাতে জীবাণু মরে যাবে।’’ তবে মাছের বাজারে বা মাংসের দোকানে কিছু বাড়তি সতর্কতা নেওয়া উচিত আমাদের। সুমিতের বক্তব্য, বাজারে গিয়ে মুখে বা নাকে হাত না দেওয়াই ভাল। তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কমানো যাবে।
আরও পড়ুন- করোনা থেকে বাঁচতে শুধু নিজের সুরক্ষাই নয়, নিশ্চিত করতে হবে আপনার বাড়ির পরিচ্ছন্নতাও
আরও পড়ুন- নেই বিদেশ সফরের ইতিহাস, রাজ্যে মিলল নতুন করোনা-আক্রান্তের খোঁজ
যাঁদের অফিসে যেতেই হচ্ছে, তাঁরা কী করবেন?
সুমিত ও অরিন্দম জানাচ্ছেন, তাঁদের সহকর্মীদের সঙ্গে অন্তত ১ থেকে ২ মিটার দূরত্ব বাধ্যতামূলক ভাবে বজায় রাখতে হবে। এমনকি, পাশের ডেস্কের সহকর্মীর সঙ্গেও সরাসরি কথা না বলে তাঁর সঙ্গে ই-মেল চালাচালি করতে হবে। আর অফিসেও যতটা সম্ভব এয়ার কন্ডিশনার এড়িয়ে চলাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এয়ার কন্ডিশনারের ভিতরে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমণ রুখতে এটা একান্ত প্রয়োজন।
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।