ঘ্রাণশক্তি হারানোও হতে পারে করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ। ছবি শাটারস্টকের সৌজন্যে।
আপনার জ্বর হয়নি। সর্দিও হয়নি। হাঁচি, কাশিও জ্বালিয়ে মারছে না। হঠাৎ শুধুই ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। কোনও কিছুরই গন্ধ অনুভব করতে পারছেন না। এ বার এমন উপসর্গ দেখা গেলেও করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় আগেভাগে সতর্ক হওয়াই ভাল। ব্রিটেনের চিকিৎসকদের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এ কথা জানিয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ব্রিটেনে হঠাৎ শুধুই ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলা কয়েক জনের রক্তপরীক্ষায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে। তাই এই উপসর্গটিকেও করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ বলে ধরা যেতে পারে। পরে আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ অটোল্যারিঙ্গোলজির তরফেও মার্কিন মুলুকে এমন পর্যবেক্ষণের কথা জানানো হয়েছে।
চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানাচ্ছেন, এটা কিছুটা নতুন ধরনের পর্যবেক্ষণ। এর আগে কেউ কেউ ঘ্রাণশক্তি হারালে পরে তাঁদের কেউ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন জানা যায়নি। তবে ব্রিটেনের চিকিৎসকদের এই পর্যবেক্ষণ অন্য চিকিৎসকদের আরও সতর্ক হতে সাহায্য করবে। জ্বর, সর্দি, হাঁচি, কাশি না হলেও যাঁরা হঠাৎ ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন বলে এ বার ডাক্তারদের চেম্বারে আসবেন, এখন তাঁদেরও হোম আইসোলেশনে রাখার কথা ভাবতে পারবেন চিকিৎসকেরা। তাতে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমবে।
চিকিৎসকেরা অবশ্য এও বলছেন, এই গবেষণা এখনও শেষ হয়নি। করোনা সংক্রমণ শুরুর মাসদু’য়েকের মধ্যেই হয়েছে এই পর্যবেক্ষণ। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে গেলে আরও তথ্য, আরও পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন।
আরও পড়ুন- চশমা, মোবাইল, বাজারের থলে থেকেও হতে পারে করোনা সংক্রমণ, সাবধান হোন!
আরও পড়ুন- করোনা থেকে বাঁচতে শুধু নিজের সুরক্ষাই নয়, নিশ্চিত করতে হবে বাড়ির পরিচ্ছন্নতাও
অরিন্দমের কথায়, ‘‘যাঁরা হঠাৎ ঘ্রাণশক্তি হারিয়েছিলেন প্রাথমিক ভাবে, তাঁদের মধ্যে কত জন পরে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন এখনও পর্যন্ত তা জানা যায়নি। এও জানা যায়নি, ব্রিটেনের যে এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা কত।’’
তবে চিকিৎসকদের মতে, এই ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলার উপসর্গটিকেও করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ বলে ধরে নিয়ে এগলে বরং আরও সতর্ক হওয়া যাবে। তাঁরা যাতে সংক্রমণ ছড়াতে না পারেন, সে জন্য তাঁদের হোম আইসোলেশনে রাখার কথা আগেভাগেই ভাবতে পারেন ডাক্তাররা। জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো অন্য উপসর্গগুলির জন্য অপেক্ষায় সময় নষ্ট না করে।’’
ও দিকে, আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ অপথ্যালমোজিস্ট জানিয়েছে, মার্কিন মুলুকে দেখা গিয়েছে, পরে যাঁরা করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের কারও কারও কিছু দিন আগেই কনজাঙ্কটিভাইটিস হয়েছিল। তাঁদের সন্দেহ, এই দু’টি রোগের মধ্যেও কোনও যোগসূত্র থাকতে পারে।
অরিন্দম অবশ্য বলছেন, ‘‘কনজাঙ্কটিভাইটিস আদৌ করোনা সংক্রমণের উপসর্গ কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ, সেটা হতে হলে করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত বলে মেনে নিতে হয়। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’) এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসকে বায়ুবাহিত বলে মেনে নেয়নি।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।