প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
কারুর কোভিড হয়েছে শুনলে বেশির ভাগ মানুষ ফোন করে প্রথমেই জানতে চান, কী করে হল। তারপরেই বলেন, ‘সাবধানে থেকো। এমন একটা অসুখ, চাইলেও কিছু করতে পারছি না’। অথচ সত্যিটা এর চেয়ে অনেকটাই আলাদা। আপনি চাইলেই আপনার প্রিয় বন্ধু বা কোনও নিকট আত্মীয়ের জন্য দূর থেকে অনেক কিছু করতে পারেন। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারেন, সাহায্য করতে পারেন। কী করণীয় জেনে নিন।
ফোন বা ভিডিয়ো কল
খোঁজ নেওয়ার জন্য এখন সব রকম প্রযুক্তিই মজুত। ফোন করে খোঁজ নিতে পারেন। কী করে হল, কতটা চিন্তায় পড়লেন এসব বলবেন না। তাঁরা কেমন আছেন, জানতে চান। এমনি গল্প করুন। মানুষ নিভৃতবাসে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে ওঠেন। মানুষের মুখ দেখতে পান না অনেক দিন। তাই ভিডিয়ো কলও করতে পারেন। তবে তাঁর শরীর কেমন আছে, সেটা বুঝে ফোন করুন। যদি কেউ খুব ক্লান্ত বোধ করেন তাঁকে বিশ্রাম নিতে দিন। খুব বেশি ফোন করে বিরক্ত করবেন না। তবে যদি দেখেন অনেকক্ষণ টানা ফোন করে পাচ্ছেন না, তা হলে তাঁর কেয়ারগিভারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
মনের জোর জোগান
একা থাকতে থাকতে মানসিক ভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েন মানুষ। তাই ভরসা দিন যে আপনি সঙ্গে আছেন। নেটমাধ্যমে এই রোগ নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে আছে। সেগুলো এই সময় পড়লে অনেক ক্ষেত্রে মানুষ বিচলিত হয়ে পড়েন। তাই কী সত্যি, কী মিথ্যা, তা যাচাই করতে বন্ধুকে সাহায্য করুন। তিনি একটু সুস্থ বোধ করলে দু’জনে অনলাইনে কোনও ভিডিয়ো গেম বা অন্য কোনও খেলা খেলতে পারেন। আবার নেটফ্লিক্স বা প্রাইমে দু’জনেরই প্রিয় এমন কোনও সিরিজ একই সময়ে দেখতে পারেন। বিষয়গুলো যতই ছোটখাটো মনে হোক, আপনার বন্ধু একাকিত্বে ভুগবেন না।
বাড়ির বাইরের কাজে সাহায্য
বন্ধুর নিত্যদিনের যা যা প্রয়োজনীয় জিনিস দরকার, সেগুলো আপনি জোগাড় করে দিতে পারেন। ওষুধ কিনে দেওয়া, মুদিখানার বাজার, ফল-সব্জি-দুধ এই জাতীয় যা যা প্রয়োজন আপনি কিনে দিতে পারেন। নিজে না যেতে পারলেও অর্ডার করে দিন। বা চেনা পরিচিত কোনও স্বেচ্ছাসেবী দল যদি ওষুধ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে, তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ব্যবস্থা করে দিতে পারেন।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রোজকার রান্না
অসুস্থ অবস্থায় রোজকার রান্না করাই মুশকিল। আপনি নিজে রান্না করে কোনও অ্যাপের মাধ্যমে তা পৌঁছে দিতে পারেন। যদি প্রত্যেকদিন সেটা আপনার পক্ষে সম্ভব না হয়, তা হলে শহরে অনেক কোভিড-ক্যান্টিন খুলেছে, যাঁরা কোভিড রোগীদের জন্য রান্না করে পৌঁছে দিচ্ছেন। আপনি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আপনার বন্ধুর পক্ষে অসুস্থ অবস্থায় সব ব্যবস্থা করা সম্ভব না-ও হতে পারে। তাই শুধু ফোন নম্বর ফরওয়ার্ড না করে ব্যবস্থাটা আপনিই করুন।
আর্থিক সাহায্য
লকডাউনে অনেকেই রোজকার হারিয়েছেন। তাই আর্থিক সঙ্কট অস্বাভাবিক কোনও ব্যাপার নয়। তার উপর কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার খরচ চালানোর দুশ্চিন্তাও কম নয়। খুব কাছের বন্ধু হলে সরাসরি জিজ্ঞেস করুন কোনও প্রয়োজন আছে কিনা। তাতে অস্বস্তি হলে বোঝার চেষ্টা করুন আপনার বন্ধুর আর্থিক অবস্থা এখন ঠিক কী রকম। প্রয়োজন মনে হলে ওষুধ বা ফল-সব্জি-দুধ নিজে কিনে পাঠাতে পারেন।
পোষ্যের দায়িত্ব
আপনার বন্ধুর কি কোনও পোষ্য রয়েছে? এই সময়ে পোষ্যের দেখাশোনা করা নিয়ে তিনি হয়ত দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। দরকার হলে সেই ভার নিন। তা হলে আপনার বন্ধুও নিশ্চিন্ত থাকবেন, তাঁর পোষ্যও ভাল থাকবে।
নিজে ডাক্তারি করবেন না
অনেকের সবচেয়ে বড় সমস্যা তাঁরা ফোন করে প্রথমেই অনেক ওষুধের নাম বলে দেন। কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে কোনও রকম চিকিৎসা শুরু করা উচিত নয়। তাই কেউ অসুস্থ হলে নিজে থেকে ওষুধের তালিকা না পাঠিয়ে, কোন ডাক্তারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যেতে পারে, সেই তালিকা পাঠান।