অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি যাওয়ার আশঙ্কা, সতর্ক থাকবেন কী ভাবে? প্রতীকী ছবি।
অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য সতর্কবার্তা দিল কেন্দ্রীয় সরকারের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ। অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে যে কোনও সময়ে চুরি যেতে পারে গ্রাহকের ব্যক্তিগত ও গোপন তথ্য, এমনটাই দাবি করল ইন্ডিয়ান কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সিইআরটি-ইন)। এই বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে সরকারি সংস্থা জানিয়েছে, অ্যান্ড্রয়েড ফোনের অপারেটিং সিস্টেমে এমন ম্যালঅয়্যার পাওয়া গিয়েছে, যা গ্রাহকের জরুরি তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।
জাতীয় সরকারের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের তরফে সতর্ক করে বলা হয়েছে, অ্যান্ড্রয়েডের কয়েকটি ভার্সনেই এমন ম্যালঅয়্যার চিহ্নিত করা গিয়েছে। সেগুলি হল অ্যান্ড্রয়েড ১২, অ্যান্ড্রয়েড ১২ এল, অ্যান্ড্রয়েড ১৩, অ্যান্ড্রয়েড ১৪ ও অ্যান্ড্রয়েড ১৫। এই ভার্সনের ফোন বা ট্যাব যাঁরা ব্যবহার করছেন, তাঁদের অবিলম্বে নামী সংস্থার অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করতে বলা হচ্ছে। অথবা সময়মতো তাঁদের সফট্অয়্যার আপডেটও করে নিতে হবে।
কী ধরনের বিপদের সম্ভাবনা আছে?
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ঢুকে পড়ছে এক বিশেষ ভাইরাস (ম্যালঅয়্যার)! ফোন নম্বর, কল রেকর্ড, ফোনের ক্যামেরা হ্যাক করে যা সহজেই চুরি করে নিতে পারে যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য। সহজেই অ্যান্টিভাইরাসের নিরাপত্তার বেড়াজাল টপকে ফোনের তথ্য চুরি করতে পারে এই ভাইরাস। সিইআরটি-ইন জানাচ্ছে, ইন্টারনেটে অজস্র ওয়েবসাইটের মধ্যে অনেকগুলি ব্যবহারের অনুপযোগী। সেই ওয়েবসাইটগুলি থেকেই নাকি এমন ম্যালঅয়্যার ঢুকে পড়ছে ফোনে। তা ছাড়া নেটমাধ্যমে অসংখ্য ভুয়ো অ্যাপও ঘুরছে। সেগুলিও বিপজ্জনক। এমন অ্যাপ ডাউনলোড করে ফেললেই অজান্তে ম্যালঅয়্যার ঢুকে যাবে ফোনে। এই ধরনের ভাইরাস ফোনের তথ্য চুরি করতে উন্নত মানের ‘এনক্রিপশন অ্যালগরিদম’ ব্যবহার করে বলেও জানা গিয়েছে।
সতর্ক থাকতে কী করবেন?
১) শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। ফেস আনলক, ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা চার সংখ্যার পিনের থেকে অক্ষর-সংখ্যা-চিহ্ন মিলিয়ে মিশিয়ে তৈরি করা পাসওয়ার্ড অনেক বেশি নিরাপদ। এমন পাসওয়ার্ড তৈরি করে রাখুন। প্রতিটি অ্যাপের জন্য আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড তৈরি করুন।
২) অ্যাপ ডাউনলোড করার সময়ে ‘টার্ম অ্যান্ড পারমিশন’-এর লম্বা তালিকা আসে। সেই তালিকায় কী কী লেখা রয়েছে, ভাল করে পড়ে নিন। কোনও অ্যাপ ইনস্টল করার সময়ে যদি ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাওয়া হয়, তা হলে জানবেন সেই অ্যাপ ভুয়ো।
৩) অনেকেই গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড না করে অন্য ওয়েবসাইট থেকে এপিকে ফাইল ডাউনলোড করে নেন। বহু নিষিদ্ধ অ্যাপের এপিকে-ও এ ভাবে পাওয়া সম্ভব। কাজেই অ্যাপ ইনস্টল করার সময়ে সাবধান থাকুন।
৪) কোনও ওয়েবসাইটে প্রবেশের আগে, সেই ওয়েবসাইটের পুরো নাম এবং বিস্তারিত তথ্য যাচাই করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ। যাচাই করে নিতে হবে ওয়েবসাইটগুলির ‘ইউআরএল’ (ইউনিফর্ম রিসোর্স লোকেটার)।
৫) যদি দেখেন ইমেল বা এসএমএসে আসা অজানা কোনও লিঙ্ক খুলে ফেলার পরে বা কোনও অ্যাপ ডাউনলোডের পরে ফোনের চার্জ ঘন ঘন শেষ হয়ে যাচ্ছে, ফোন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, ইন্টারনেট ডেটা দ্বিগুণ গতিতে খরচ হচ্ছে, তা হলে সাবধান হয়ে যান। বুঝতে হবে, ফোনে ভাইরাস ঢুকেছে।