ডিসলেক্সিয়া নিয়ে মুখ খুললেন সানি। ছবি: সংগৃহীত।
আর পাঁচটা তারকা সন্তানের মতো সানি দেওলের বলিউডের শুরুর দিকে যাত্রাটা ততটাও সহজ ছিল না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সানি জানিয়েছেন অভিনয় শুরু করার সময়ই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে। না, বলিউডে কাজ পেতে খুব বেশি সমস্যা হয়নি সানির। তবে কাজ পাওয়ার পরেই শুরু হয় তাঁর আসল লড়াই। তাঁর সমস্যা ছিল সমস্যা ছিল সংলাপ বলায়। প্রাথমিক ভাবে অনেকেই ছিলেন, যাঁরা সানি দেওলকে এই সমস্যার জন্য কটাক্ষ করতেন। হাসাহাসিও কম হত না তাঁকে নিয়ে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সানি জানিয়েছেন, তিনি ডিসলেক্সিয়ার শিকার ছিলেন। কোনও শিশু যদি তার বয়সি অন্য সহপাঠীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ে, কিছু শিখতে বা বুঝতে দেরি করে, তা হলে হয়তো অনেক অভিভাবকই বেশ বিরক্ত এবং উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কিন্তু কখনও কখনও কোনও শিশু হয়তো অক্ষর চিনতে, শব্দ পড়তে এবং লিখতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়ে। এটা সাধারণ নয়, স্বাভাবিকও নয়। একে বলে লার্নিং ডিজ়অর্ডার। যাকে মনোবিজ্ঞানের পরিভাষায় ডিসলেক্সিয়া বলে। সানি বলেন, ‘‘আমায় অনেকেই বোকা বলতেন। সংলাপ পড়তে আমার ভীষণ সমস্যা হত। অনেক আগে সংলাপ চেয়ে নিতাম। বার বার তা মুখস্থ করতাম। সকলকে বলতাম আমায় হিন্দিতে সংলাপ লিখে দিতে। দ্রুত পড়তে পারতাম না। তাই এত বার পড়তাম যাতে তা আমার মুখস্থ হয়ে যায়। তার পরেও সংলাপ বলার সময় সমস্যা হত।”
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সানি জানিয়েছেন, তিনি ডিসলেক্সিয়ার শিকার ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত।
এই সাক্ষাৎকারে সানি নিজের ছেলেবেলার কথাও বলেছেন। অভিনেতা বলেন, ‘‘আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন ডিসলেক্সিয়া নিয়ে কারও খুব বেশি ধারণা ছিল না। লোকে আমায় থাপ্পড় মারত, আমায় বোকা বলত। সবাই বলত, আমার দ্বারা পড়াশোনা কিছুই হবে না। এখনও কিছু পড়তে গেলে আমার মনে হয় শব্দগুলি যেন চোখের সামনে নাচানাচি করছে। অনেকেই আমায় বলে টেলিপ্রম্পটার ব্যবহার করতে, কিন্তু আমি করি না। আমি সবাইকে বলি বলো আমায় কী বলতে হবে? আমি ঠিক মতো বলার চেষ্টা করব।’’ ডিসলেক্সিয়া এক ধরনের মানসিক অবস্থা, যা শিশুদের তথ্য বোঝার, উপলব্ধি করার ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়। ডিসলেক্সিয়া শুধু সেই শিশুর পড়াশোনার উপরই প্রভাব ফেলে না, তার রোজকার কাজকর্ম, যেমন— জুতোর ফিতে বাঁধা, শার্টের বোতাম আটকানো, বল ছোড়া ইত্যাদি ছোট ছোট কাজের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে।