গলার ব্রণ-ফুস্কুড়ি দূর হবে সহজেই, এই ঘরোয়া টোটকাগুলি ব্যবহার করে দেখুন। ছবি: ফ্রিপিক।
পুজোর পছন্দের পোশাক, শাড়ির সঙ্গে মানানসই হার কিনেছেন। বড্ড শখ করে কেনা চোকারটি সপ্তমীর দিন পরবেন বলে রেখে দিয়েছেন। কিন্তু আয়নার সামনে দাঁড়ালেই মন তিক্ততায় ভরে যাচ্ছে। মুখ-হাতের ত্বকের সঙ্গে গলার ত্বক যেন বড় বেমানান। একেই কালচে দাগ পড়েছে। তার উপর ছোট ছোট ব্রণ-ফুস্কুড়িতে ভরে গিয়েছে। সেখানে জ্বালা, চুলকানিও হচ্ছে। এমন অবস্থায় হার পরাও অস্বস্তিকর। এ দিকে পুজো এসেই গেল। তা হলে উপায়?
অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটে। মুখ বা হাত–পায়ের যত্ন নিলেও গলার কথা একদম ভুলে যান। ফলে সেখানে অযত্নের ছাপ পড়ে। অথচ শরীরের এই অংশের যত্ন বেশি দরকার। অযত্নে থাকার ফলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অনেকের গলায় ভাঁজ পড়ে যায়। গলার ত্বকের বলিরেখা দেখতেও ভাল লাগে না। গলার ত্বকে নিয়মিত স্ক্রাবিং, ময়েশ্চারাইজ়িং না করলেই এমনটা বেশি হয়। মৃত কোষ জমতে জমতে সেখানে ফুস্কুড়ি বেরিয়ে যায়। তা ছাড়া বেশি গলাবন্ধ পোশাক পরলে ঘাম জমেও ব্রণ-ফুস্কুড়ি হতে পারে। আবার পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (পিসিওএস) থাকলেও গলায় ব্রণ বেরোতে দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে বাজারচলতি মলম না লাগিয়ে বরং ঘরোয়া টোটকায় ভরসা করতে পারেন।
গলার ব্রণ থেকে রেহাই পেতে কী করবেন?
টি ট্রি তেল
এই এসেনশিয়াল তেল গলার ব্রণ দূর করতে পারে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যা ত্বকের ময়লা টেনে বার করতে পারে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন: কয়েক ফোঁটা টি ট্রি তেল যে কোনও কোনও কেরিয়ার তেলের সঙ্গে (নারকেল তেল বা জোজোবা তেল) মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার গলায় লাগাতে পারেন। খুব তাড়াতাড়ি ব্রণ কমে যাবে।
অ্যালো ভেরা
ত্বকের চুলকানি, জ্বালা ভাব কমাতে সাহায্য করবে অ্যালো ভেরা জেল। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ত্বকের প্রদাহ কমাবে। গলার কালচে দাগ তুলতেও কার্যকরী হতে পারে অ্যালো ভেরা।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন: বাড়িতে গাছ থাকলে তার পাতা থেকে নেওয়া জেল সবচেয়ে ভাল। অ্যালো ভেরা জেল সরাসরি ব্রণ বা ফুস্কুড়ির উপর লাগাতে পারেন। ২০ মিনিট রেখে পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিন। দিনে অন্তত ২ বার ব্যবহার করুন।
আপেল সাইডার ভিনিগার
ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে দিতে পারে। পিএইচের ভারসাম্যও বজায় রাখে। তবে আপেল সাইডার ভিনিগার সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করবেন না। জলের সঙ্গে মিশিয়ে লাগালেই উপকার পাওয়া যাবে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন- এক কাপ জলে দু’চামচ ভিনিগার মিশিয়ে তাতে তুলো ভিজিয়ে গলায় লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। দিনে ২-৩ বার করলেই উপকার পাবেন।
হলুদ বাটা
হলুদের অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। ত্বকের যে কোনও ক্ষত, সংক্রমণ দূর করতে পারে হলুদ। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের ঔজ্জ্বল্যও ফেরে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন- হলুদের সঙ্গে অল্প জল ও মধু মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই মিশ্রণ গলায় লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট। সপ্তাহে অন্তত ৩ বার করলেই উপকার পাবেন।
মধু-দারচিনি
দারচিনি অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল যৌগ ত্বকে ব্রণের সমস্যা দূর করে। ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরে পেতে মধু আর দারচিনির প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন: আধ চা চামচ দারচিনি গুঁড়োর সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই মিশ্রণ ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। তার পর পরিষ্কার জলে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ-ফুস্কুড়ি দূর করতে শুধু নয়, গলার কালচে দাগ তুলতেও সাহায্য করবে এই প্যাক।