Natural Face Pack

বিনা খরচে পান পেশাদারী রূপচর্চার জেল্লা, ঘরেই তৈরি করে নিন ফেস মাস্ক

রূপচর্চার জন্য যথেচ্ছ খরচ করতে দ্বিধা করেন না অনেকেই; নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়ে দামি বিদেশি রূপচর্চার সামগ্রীও কিনে আনেন। কিন্তু ঘরে মজুত কিছু উপাদান দিয়েই বানিয়ে নিতে পারেন ফেস মাস্ক, যা আপনার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী হতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪ ১৫:০৫
Share:

ত্বকের চর্চা বাড়িতে বসেই। ছবি: সংগৃহীত।

আজকের এই দ্রুত বহমান জীবনে ছুটতে ছুটতে, আমাদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় হয় না। বাজারে অনেকগুলি দামি ফেস মাস্ক পাওয়া যায়, তবে সেগুলি সবসময় আমাদের ত্বকের জন্য উপযুক্ত হয় না। এ ক্ষেত্রে, ঘরে তৈরি ফেস মাস্ক একটি দুর্দান্ত বিকল্প হতে পারে, কারণ এগুলি তৈরি করা সহজ, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি এবং সাশ্রয়ী।

Advertisement

কোন মাস্ক আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত বুঝবেন কী ভাবে?

আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় তবে, ত্বকে আর্দ্রতা বাড়াতে পারে এমন উপাদান বেছে নিন, যেমন অ্যালোভেরা জেল বা মধু। আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তবে আপনি মাস্কে শোষক উপাদান যোগ করতে পারেন, যেমন বেসন বা মুলতানি মাটি। আপনি আপনার পছন্দের অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদানও যোগ করতে পারেন, যেমন কোনও ফল, কোনও সব্জির রস বা অন্য কোনও ভেষজ উপাদান। মাস্ক ব্যবহার করার পরে সর্বদা আপনার মুখ ময়েশ্চারাইজার দিয়ে মালিশ করুন।

Advertisement

কিছু কার্যকরী ফেস মাস্ক তৈরি করার উপায়:

উপকরণ:

বেসন: ত্বকের জন্য একটি দুর্দান্ত উপাদান। এটি ত্বককে পরিষ্কার করতে, মৃত কোষ অপসারণ করতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

রূপ চর্চায় হলুদ। ছবি: সংগৃহীত

দই: দই ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এতে ল্যাকটিক অ্যাসিডও থাকে যা ত্বকের কোষগুলিকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

মধু: মধুরও একটি প্রধান কাজ ত্বককে আর্দ্র এবং উজ্জ্বল রাখা। এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে, যা ব্রণর চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে।

অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরা জেল রুক্ষ ত্বকের লাবণ্য ফেরাতে এবং জ্বালাভাব কমাতে সাহায্য করে। এটি ভিটামিনে ভরপুর, এবং ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।

হলুদ: হলুদ একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক যা ব্রণর চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে।

লেবুর রস: লেবুর রসে ভিটামিন সি থাকে, যা ত্বকের কোষগুলিকে সতেজ করে তুলতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং দাগ ও কালচেভাব কমাতেও সাহায্য করে।

প্রণালী:

বেসন ও দই মাস্ক: ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ দই মিশিয়ে ভাল করে মুখ ও ঘাড়ে লাগান। ১০ মিনিট রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে মাস্কটি ধুয়ে ফেলুন। তারপর আপনার মুখের জন্য উপযুক্ত কোনও ময়েশ্চারাইজার দিয়ে মুখে মালিশ করুন।

মধু ও অ্যালোভেরা জেল মাস্ক: ১ টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে নিন অ্যালোভেরা জেল। মাস্কটি ভাল করে মুখে ঘাড়ে, এবং দেহে যেসব জায়গায় কালচেভাব আছে, লাগিয়ে রাখুন। ১০-১৫ মিনিট পর ঠান্ডা জল দিয়ে মাস্কটি ধুয়ে ফেলুন। আপনার পছন্দের ময়েশ্চারাইজার দিয়ে বা অ্যালোভেরা জেল দিয়ে মুখে মালিশ করে নিন।

হলুদ ও লেবুর রস মাস্ক: ১ টেবিল চামচ লেবুর রসে কিছুটা হলুদ ভালভাবে মিশিয়ে নিন। সেই মিশ্রণটি সারা মুখে মেখে নিন। ১০ মিনিট পর ঠান্ডা জল দিয়ে মাস্কটি ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখবেন, লেবুর রস সকলের ত্বকের জন্য উপকারী হয় না, তাই এই মাস্কটি ব্যবহার করার আগে আপনার হাতের ভেতরের দিকে একটি অংশে লাগিয়ে পরীক্ষা করে নিন।

সতর্কতা

আপনার ত্বকের ধরন অনুসারে উপাদানগুলি নির্বাচন করুন। মাস্ক লাগানোর আগে আপনার মুখ পরিষ্কার করে নিন এবং শুকনো করে মুছে নিন। প্রথমে আপনার মুখ ও ঘাড়ে পাতলা করে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট মাস্কটি রেখে দিন, তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু'বারের বেশি মাস্ক ব্যবহার করবেন না।

আপনার ত্বকে যদি কোনও সমস্যা থাকে, যেমন একজ়িমা বা সোরিয়াসিস, তবে নতুন কোনও ফেস মাস্ক ব্যবহার করার আগে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। আপনার যদি কোনও অ্যালার্জি থাকে তবে মাস্ক ব্যবহার করার আগে, উপাদানের তালিকাটি পরীক্ষা করে নিন। যদি মাস্ক লাগানোর পর আপনার ত্বকে জ্বালা বা অস্বস্তি হয়, তবে অবিলম্বে মাস্কটি ধুয়ে ফেলুন।

ঘরে তৈরি ফেস মাস্ক আপনার ত্বকের যত্ন নেওয়ার একটি দুর্দান্ত এবং সাশ্রয়ী উপায় হতে পারে। আপনার ত্বকের ধরন এবং চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত উপাদানগুলি বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নতুন কোনও মাস্ক ব্যবহার করার আগে সর্বদা ত্বকের একটি ছোট অংশে তা পরীক্ষা করুন এবং প্রয়োজনে, কোনও ত্বক বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement