শুষ্ক ত্বকের জন্য কোন প্রসাধনী উপযোগী? ছবি: শাটারস্টক
শীত এলেই ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। টান ধরে গায়ে-হাত-পায়ে। বছরভরই শুষ্ক ত্বক নিয়ে নাজেহাল যাঁরা, তাঁদের সমস্যা এই সময় আরও বেড়ে যায়। অনেকের প্রদাহজনিত সমস্যা হয়। জৌলুস হারায় ত্বক। এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন বিশেষ যত্ন। সেই সঙ্গে দরকার সঠিক ময়শ্চারাইজ়ার, ক্রিম, টোনার বেছে নেওয়া। কিন্তু কোনটি উপযুক্ত, বুঝবেন কী করে?
তবে তার আগে জেনে নেওয়া প্রয়োজন, শুষ্ক ত্বকের সমস্যা কাদের হতে পারে, কেন হয়?
ত্বকের চিকিৎসকদের কথায়, স্বাভাবিক আর্দ্রতা কম থাকলে সেই ত্বককে 'শুষ্ক' বলে চিহ্নিত করা হয়। এই ধরনের ত্বক খসখসে হয়ে পড়ে। জেল্লা থাকে না। ত্বকের উপরিভাগের স্তর জল ধরে রাখতে না পারলে, আর্দ্রতা কমে গেলে সমস্যা দেখা দেয়।
শুষ্কতার কারণ
নানা কারণে ত্বক শুষ্ক হতে পারে। তার সঙ্গে আবহাওয়ার যোগ থাকে। শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কমে গেলে, গরম জলে স্নান করলে, অতিরিক্ত রাসায়নিক বা ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করলে, সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাবে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া ত্বকের সংক্রমণ, সোরিয়াসিস-সহ বিভিন্ন অসুখের কারণেও সমস্যা হতে পারে।
শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযোগী হবে কোন ধরনের প্রসাধনী?
হাইলুরোনিক অ্যাসিড: এই উপাদানটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ় করতে, আর্দ্রতা বজায় রাখতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। হাইলুরোনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ফেসওয়াশ, সিরাম পাওয়া যায়। এই উপাদান রয়েছে, এমন প্রসাধনী বেছে নিতে পারেন শুষ্ক ত্বকের জন্য।
গ্লিসারিন: ত্বককে গভীর ভাবে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে গ্লিসারিন। শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় এটি বিশেষ ভাবে কাজে আসে। জলের সঙ্গে গ্লিসারিন মিশিয়েও মাখা যায়।
শিয়া বাটার: শিয়া গাছের বীজ থেকে তৈরি হয় শিয়া বাটার। ত্বকের যত্নে অত্যন্ত ভাল এই উপকরণ। খসখসে ত্বক, প্রদাহ জনিত সমস্যায় এটি ব্যবহার করা হয়। ত্বককে নরম, মসৃণ রাখতে সাহায্য করে উপাদানটি।
অ্যালো ভেরা: এই উপাদানটিও ত্বকের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। তবে সরাসরি এই গাছের শাঁস না মেখে অ্যালো ভেরা রয়েছে, এমন প্রসাধনী বেছে নেওয়া যেতে পারে।
ভিটামিন ই: শুষ্ক ত্বকের সমস্যার সমাধানে অত্যন্ত কার্যকর ভিটামিন ই। ক্যাপসুল ভেঙে ভিটামিন ই ক্রিমের সঙ্গে মিশিয়ে মাখা যায়। আবার ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্রিম, লোশনও মাখার জন্যে বেছে নিতে পারেন।
ফেসওয়াশ
গ্লিসারিন, হাইলুরোনিক অ্যাসিড, সেরামাইডসের মতো উপাদান সমৃদ্ধ ফেসওয়াশ শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিতে পারেন।
টোনার
রোজ় ওয়াটার, গ্লিসারানি, অ্যালো ভেরা রয়েছে এমন ধরনের টোনার শুষ্ক ত্বকের উপযোগী হবে।
ময়েশ্চারাইজ়ার
হাইলুরোনিক অ্যাসিড, শিয়া বাটার, সেরামাইডস সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার এ ক্ষেত্রে ভাল হবে।
সিরাম
হাইলুরোনিক অ্যাসিড, পেপটাইড, নিয়াসিনামাইড সমৃদ্ধ ধরনের সিরাম শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযুক্ত হবে।
শুষ্ক ত্বকের সমস্যা থাকলে প্যারাবেন, সালফেট, অ্যালকোহল রয়েছে, এমন প্রসাধনী এড়িয়ে চলাই ভাল।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। ত্বকে কোনও সংক্রমণের ফলে শুষ্কতার সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।