Deepika Padukone's Skincare Products

দাম নিয়ে নিন্দার মুখে পড়েছিল দীপিকার ‘৮২° ইস্ট’, তারকার মান রাখল কি ক্রিম-ক্লিনজ়ার

মাসখানেক আগে বাজারে নিজের প্রসাধনী ব্র্যান্ড এনেছেন দীপিকা পাড়ুকোন। সর্বসাকুল্যে আটটি জিনিস রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। আয়ুর্বেদ এবং বিজ্ঞানের যৌথ আবিষ্কার, এ ক্ষেত্রে কতটা ফলপ্রসূ হল?

Advertisement

অঙ্কিতা দাশ

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৮:৫৮
Share:
Image of Deepika Padukon

নিজের প্রসাধনী ব্র্যান্ডের প্রচারমুখ দীপিকা নিজেই। ছবি: দীপিকা পাড়ুকোনের ইনস্টাগ্রাম থেকে।

রূপচর্চা বিশেষজ্ঞ না হয়েও নতুন নতুন প্রসাধনী কেমন, তা চেখে থুড়ি ব্যবহার করে দেখা আমার শখ। সেই শখের ঝুলি পূরণ করতেই হঠাৎ কিনে ফেলেছিলাম অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের নিজস্ব প্রসাধনী ব্যান্ড ‘৮২° ইস্ট’-এর বেশ কয়েকটি প্রসাধনী। এখন অনেকের মনে হতেই পারে, এত ব্র্যান্ড থাকতে হঠাৎ দীপিকা কেন? বলিউডের অনেক তারকারই তো নিজস্ব প্রসাধনী ব্র্যান্ড রয়েছে। অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফ, পোশাকশিল্পী মাসাবা গুপ্ত এবং মনীশ মলহোত্র, এমন অনেকেরই নিজস্ব প্রসাধনী রয়েছে। সকলের জিনিস ব্যবহার করে দেখিনি। কিন্তু দীপিকার বিষয়টি আলাদাই হয়ে গেল। নায়িকার নাম তো নজর কেড়েছিল বটেই, সঙ্গে ব্র্যান্ডের নামটি কৌতূহল বাড়াল। হঠাৎ সাজগোজের জিনিসের ব্র্যান্ডের নাম ‘৮২° ইস্ট’ হতে গেল কেন? শুধুই সংখ্যাতত্ত্ব? না কি এই নামের সঙ্গে দ্রাঘিমারেখা বা মূলমধ্যরেখার কোনও যোগ রয়েছে? সেই রহস্যের সন্ধান করতে গিয়েই এই প্রসাধনীর প্রতি আগ্রহ জন্মাতে শুরু করে। দাম সম্পর্কে মনে একটা ধারণা ছিল বলে তখনও কিনে দেখার ইচ্ছা ততটা গজিয়ে ওঠেনি।

Advertisement
Image of Deepika Padukon and Shah Rukh Khan

দীপিকার ব্র্যান্ডের হয়ে প্রচারে এসেছিলেন অভিনেতা-বন্ধু শাহরুখ খানও। ছবি: দীপিকা পাড়ুকোনের ইনস্টাগ্রাম থেকে।

নিজের ব্র্যান্ডের প্রচারের মুখ দীপিকা নিজেই। অস্কারের মঞ্চে ওঠার আগে দীপিকা নিজের প্রসাধনী সামগ্রী দিয়ে রূপচর্চার ভিডিয়ো করেছিলেন। পর পর কোন কোন প্রসাধনী কী ভাবে মাখতে হয়, সে সব তথ্য নির্ভর প্রচার দেখা গিয়েছিল। অস্কারের মঞ্চে দীপিকার কানের পিছনে ঘাড়ের কাছে জ্বলজ্বল করতে দেখা গিয়েছিল ব্র্যান্ডের নামের ‘ট্যাটু’। পুরুষ মনে সে সব ঝড় তুললেও এ বিষয়ে আমি শান্ত, স্থিতধীই ছিলাম। তবে ওই যে ‘বিজ্ঞাপনী বিড়ম্বনা’, ‘মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি’ বলে কথা আছে না? যে দিন দেখলাম দীপিকার প্রসাধনীর প্রচার করতে এলেন শাহরুখ খান, সে দিনই মনের সব দোলাচল আর সঙ্কোচ ঝেড়ে ফেলে সোজা চলে গেলাম ওই প্রসাধন সামগ্রীর ওয়েবসাইটে। প্রথম দিকে খুব বেশি প্রসাধনী ছিল না। শুধুমাত্র ‘স্কিনকেয়ার’ বা ত্বকচর্চার জিনিসই পাওয়া যায়। এখন সব মিলিয়ে গোটা আটেক সামগ্রী। তার মধ্যে দু’টি ক্লিনজ়ার, মুখের জন্য একটি ময়েশ্চারাইজ়ার, একটি সেরাম এবং একটি ফেস অয়েল। ইউভি রশ্মির থেকে ত্বকের সুরক্ষার জন্য একটি সান প্রোটেকশন সেরাম, একটি জেল এবং ড্রপ। তার মধ্যে থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নিয়েছিলাম তিনটি প্রসাধনী। ‘লোটাস স্‌প্ল্যাশ ক্লিনজ়ার’, ‘টারমারিক শিল্ড’ এবং ‘অশ্বগন্ধা বাউন্স’। কেন এই তিনটিই বেছে নিলাম সে কথাও আছে। মাস তিনেক নিয়মিত ব্যবহার করলাম। বলি-নায়িকার ক্রিম-ক্লিনজ়ার নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ থাকবে, সে কথা ভেবে কলম ধরলাম।

যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাঁদের জন্য ‘লোটাস স্‌প্ল্যাশ ক্লিনজ়ার’ অনবদ্য। ছবি: দীপিকা পাড়ুকোনের ইনস্টাগ্রাম থেকে।

১) লোটাস স্‌প্ল্যাশ ক্লিনজ়ার

Advertisement

আমার মুখ অতিরিক্ত তৈলাক্ত হওয়ায় ভাল ক্লিনজ়ার বা ফেসওয়শের নিরন্তর খোঁজ করতেই থাকি। সকালে মুখ পরিষ্কার করার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই উপচে পড়া তেল নিয়ে সারা বছরই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তবে এই জিনিসটি আমার ত্বকের জন্য নয়। এই ক্লিনজ়ার এতটাই হালকা যে, এক বার ব্যবহারে আমার মুখের তেল কাটানো লোটাস স্‌প্ল্যাশের কাজ নয়। তবে যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাঁরা নিঃসন্দেহে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ১০০ মিলিলিটার লোটাস স্‌প্ল্যাশ ক্লিনজ়ারের দাম ১২০০ টাকা।

কাঁচা হলুদের গন্ধে ভরা ‘টারমারিক শিল্ড’ রোদ থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। ছবি: দীপিকা পাড়ুকোনের ইনস্টাগ্রাম থেকে।

২) টারমারিক শিল্ড

আমাকে প্রথম সানস্ক্রিন মাখতে শিখিয়েছিলেন মা। মায়ের যে হাতটিতে শাড়ির আঁচলের ছায়া পড়ে না, সেই হাতে রোদ লেগে কালচে ছোপ পড়তে শুরু করেছিল অনেক দিন আগে থেকেই। প্রতি দিন অফিসে বেরোনোর আগে সর্বজনীন ‘ল্যাকমে’-র সানস্ক্রিন মাখতে দেখতাম মাকে। এ বার একটু অন্য রকম কিছু কিনে দিতে ইচ্ছা হল। ভাবলাম তারকার ব্র্যান্ডের সানস্ক্রিন কিনে আনি। হা হতস্বী! কাঁচা হলুদের গন্ধ থাকলেও খুব একটা কাজের বলে মনে হল না। মা বললেন, ‘দীপিকার জিনিস আমাদের মতো রোদ-ঝড়-জলে ঘোরা মানুষদের জন্য নয়।’ কথাটা অস্বীকারও করতে পারছি না। কোনও জিনিসের গুণমান কেমন, তা বুঝতে গেলে অন্তত মাস খানেক তো ব্যবহার করতেই হয়। ১৮০০ টাকা দিয়ে মাত্র ৩০ মিলিলিটারের এই ‘টারমারিক শিল্ড’ কিন্তু মাস ফুরোনোর আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। রোদের তাপ থেকে ত্বককে সুরক্ষা দিতে না পারলেও পকেটে বেশ আঁচ টের পেয়েছিলাম।

অশ্বগন্ধা বাউন্স ময়েশ্চারাইজ়ার খুবই হালকা, তাই ত্বক তাড়াতাড়ি শুষে নিতে পারে। ছবি: দীপিকা পাড়ুকোনের ইনস্টাগ্রাম থেকে।

৩) অশ্বগন্ধা বাউন্স

জল খাওয়ার অভাবেই হোক বা আবহাওয়ার প্রভাবে, মাঝেমধ্যে আমার মুখের ‘টি জ়োন’ থেকে ছাল ওঠে। তাই ভাল একটি ‘হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজ়ার’ কিনব বলে ঠিক করেই রেখেছিলাম। আশার কথা হল, অন্য দু’টি প্রসাধনী ব্যবহার করে এতটাই নিরাশ হয়েছিলাম যে, এই জিনিসটির উপর আমার তেমন ভরসা ছিল না। তবে কাজ থেকে ফিরে মুখ ধুয়ে প্রায় প্রতি দিন ব্যবহার করতাম এই অশ্বগন্ধা বাউন্স ময়েশ্চারাইজ়ার। আমার ত্বক তৈলাক্ত। তাই খুব তেল চিটচিটে বিষয় আমার ভাল লাগে না। এই ময়েশ্চারাইজ়ারটি একেবারেই ঘন নয়। তাই ত্বক সহজেই শুষে নিতে পারে। ঘুম থেকে ওঠার পরে নিজের মুখে হাত বোলাতে বেশ ভাল লাগত। আর কয়েক দিনের ব্যবহারে মুখের ‘টি জ়োন’ থেকে ছাল ওঠার সমস্যাও মিটে গিয়েছিল। কিন্তু ২৭০০ টাকা দিয়ে ৫০ মিলিলিটারের একটি শিশি কিনতে বেশ গায়ে লেগেছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement