টলিউডের চেনা মুখ অনেকেরই নিজস্ব বুটিক রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপনের শুটিং, পুজোর গানের রেকর্ডিং, হোর্ডিং শুট— পুজোর আগে তারকাদের দম ফেলার সময় থাকে না। এ বছরও তার অন্যথা হচ্ছে না। তবে এ সবের পাশাপাশি টলিপাড়ার একাংশ ব্যস্ত নিজেদের ব্যবসা সামলাতে। টলিউডের চেনা মুখ অনেকেরই নিজস্ব বুটিক রয়েছে। কেউ অনলাইনে গোটাটা সামলান। কারও আবার দোকান আছে। পুজোর আগে নিজেকে সাজাতে ব্যস্ত সকলেই। পুজোয় তারকাদের মতো সেজে উঠতে এক বার ঢুঁ দিতে পারেন তারকাদেরই দোকানে। কোন তারকার ঝুলিতে কী কী থাকছে?
লোপামুদ্রা মিত্র
সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্রের বুটিকের নাম ‘প্রথা’। ঠিকানা লেক গার্ডেন্স। বছর দশেক আগে এই বুটিকের পথচলা শুরু হয়েছে। অনেকের আলমারিতে এই দোকানের শাড়ি আছে। সাবেকি শাড়িই মূলত পাওয়া যায় এখানে। সেগুলি তো রয়েছেই। সঙ্গে পুজো উপলক্ষে নতুন সংযোজন হ্যান্ডলুম। এ ছাড়াও লাম্বানি এমব্রয়ডারি করা তসর, রেশমের কাজ করা কিছু শাড়িও থাকছে। শাড়ির সঙ্গে মানানসই রুপো এবং তামার গয়নাও পেয়ে যাবেন। পুরুষদের জন্য আবার আছে ব্লক প্রিন্টের পাঞ্জাবি এবং শার্ট। এখানে ১৫০০ টাকার শাড়ি যেমন রয়েছে, তেমন ১০ হাজার টাকার শাড়িও আছে। দাম শুনে কি পিছিয়ে আসছেন অনেকে? গায়িকা বলেন, ‘‘সিল্ক, তসরের দামটা খানিক বেড়ে গিয়েছে, সেটা ঠিক। তবে হাতে তৈরি জিনিসের প্রতি ভালবাসা মানুষের আছে। তাই পুজোর সময়ে কষ্ট করে হলেও একটা দামি শাড়ি নিজের সংগ্রহে রাখেন অনেকে।’’ প্রথা থেকে অনলাইনে কেনাকাটা করারও সুযোগ রয়েছে।
লোপামুদ্রা মিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
সুদীপা চট্টোপাধ্যায়
বন্ডেল রোডের ‘সুদীপা চ্যাটার্জি’স স্টোর’-এর কথা অনেকেই জানেন। রকমারি শাড়ির সম্ভার নিয়ে সুদীপা লাইভেও আসেন মাঝেমাঝে। পুজো উপলক্ষে বিশেষ কী কী থাকছে এই ঠিকানায়? বুটিকের কর্ণধার সুদীপা জানালেন, এ বছর পুজোর জন্য ধানের শিসের নকশা করা কটন তাঞ্চোই হ্যান্ডলুম থাকছে। যেটা একেবারেই নতুন। এ ছাড়াও থাকছে নতুনত্ব বাবুই জামদানি। এ শাড়ির সারা গায়ে বাবুই পাখির নকশা করা। সুদীপার দোকানের শৈলসুতা তসর এবং শৈলসুতা কটনের চাহিদা আছে। নতুনের পাশাপাশি সেগুলিও পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি এক ছাদের তলায় এনেছেন সুদীপা। আসল মাহেশ্বরী, চান্দেরি থেকে কটন গাদোয়াল, কিংখাপের নকশা করা মুগা থেকে এরি সিল্ক, কটন ইক্কত থেকে বাঁধনি— সবই পেয়ে যাবেন এই ঠিকানায়। এখানে শাড়ির দাম শুরু হচ্ছে ৬৬০ টাকা থেকে। দু’লক্ষ টাকার শাড়িও আছে। সিল্কের দাম নিঃসন্দেহে বেশি। মুগা এবং এরির দাম শুরুই হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকার উপর থেকে।
সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়
‘রচনা’জ ক্রিয়েশন’ অনলাইন একটি সংস্থা। দিদি নম্বর ওয়ানের শুটিং সামলে পুরোটাই নিজেই দেখাশোনা করেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলাদা কোনও দোকান নেই। তাই লাইভের মাধ্যমে শাড়ি বিকিকিনির পর্বটি চলে। তাঞ্চোই বেনারসি থেকে হ্যান্ডলুম তসর, কাঞ্জিভরম, সিল্ক, টিস্যু সিল্ক— এক ছাদের তলায় সবই রাখছেন অভিনেত্রী। রচনা বহু বার জানিয়েছেন, আকাশছোঁয়া দামের শাড়ি তিনি রাখেন না। সাধারণে যাতে কিনতে পারেন, তেমন দামের শাড়ি দিয়েই দোকান সাজিয়েছেন তিনি। শাড়ির দাম শুনে কেউ পিছিয়ে যান, এমনটি তিনি চান না।
রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ইন্দ্রানী দত্ত
এক দিকে শুটিং, অন্য দিকে বুটিক। পুজোর আগে তাই বেজায় ব্যস্ত ইন্দ্রাণী দত্ত। তবে ‘ইন্দ্রাণী-সর্বাণী’ বুটিকের অনেকটা দায়িত্ব নিজেরে কাঁধে তুলে নিয়েছেন এবং বুটিকের আর এক কর্ণধার দিদি সর্বাণী মালিক। তাই ইন্দ্রাণী দু’দিক সামলে নিতে পারছেন। বুটিকটি মূলত শাড়ির। সঙ্গে কিছু অন্য ধরনের পোশাকও আছে। শাড়ির মধ্যে রয়েছে তসর সিল্ক, মুর্শিদাবাদী সিল্ক, বিষ্ণুপুরী সিল্ক। এ ছাড়াও কাঞ্জিভরম, বেনারসি তো আছেই। দেড়-দু’হাজার টাকার শাড়ির পাশাপাশি বেশি দামের শাড়িও কিন্তু থাকছে। শাড়ি কিনতে এসে লেহঙ্গা, কুর্তিও নে়ড়েচেড়ে দেখতে পারেন। এ ছাড়াও পুরুষদের জন্য শার্ট, পাঞ্জাবিও কিন্তু থাকছে এখানে। ইন্দ্রাণীর কথায়, ‘‘মহিলারা কিছু কিনতে এলেই স্বামী, ছেলে, বাবার জন্যও পোশাকের খোঁজ করেন। আর সে কারণেই সারা বছর পাঞ্জাবি, শার্ট, জ্যাকেট রাখি দোকানে।
ইন্দ্রানী দত্ত। ছবি: সংগৃহীত।
নীল-তৃণা
টলিউডের অন্যতম চর্চিত এই জুটি এ বার নতুন ভূমিকায়। পুজোর আগেই স্বামী তথা অভিনেতা নীল ভট্টাচার্যের সঙ্গে যৌথ ভাবে বিপণন সংস্থা খুলেছেন তৃণা সাহা। তাঁদের সংস্থার নাম ‘ক্লথস্’। এই দোকানটির আপাতত ঠিকানা গড়িয়াহাট। তবে এ মাসেই ঠিকানা পরিবর্তন হয়ে ম্যান্ডেভিলে গার্ডেন্স হবে। এটি মূলত ডিজাইনার স্টোর। নিজেদের চাহিদা এবং পছন্দের কথা বললে পোশাকশিল্পীরা তেমনটাই বানিয়ে দেবেন। তবে পুজো উপলক্ষে এখানে থাকছে হ্যান্ডলুম, সিল্ক, জামদানি শাড়ি। থাকছে পশ্চিমি পোশাকও। দোকানের কর্ণধার নীল বলেন, ‘‘শা়ড়ি থেকে শুরু করে ডিজাইনার পোশাক, সবই থাকছে। কলকাতার নামী শিল্পীদের তৈরি পোশাকও থাকছে। সবে পথ চলা শুরু করেছি। আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আশা করি সেগুলি করে উঠতে পারব।’’
নীল ভট্টাচার্য ও তৃণা সাহা। ছবি: সংগৃহীত।