—ফাইল চিত্র।
অতিমারি পর্বে এবং তার পরেও যে কোভিশিল্ড টিকা ভারত-সহ অন্যান্য তৃতীয় বিশ্বের দেশে দেওয়া হয়েছিল, তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে অন্যতম হল টিটিএস বা ‘থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’। বিরল এই রোগে শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে বলে সম্প্রতি একটি আইনি মামলা করা হয়েছে কোভিশিল্ড টিকা প্রস্তুতকারীদের বিরুদ্ধে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি এই টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি করেছিল। আদালতে পেশ করা নথি বলছে বিরল ঘটনা হলেও কোভিশিল্ড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এই রোগ হতে পারে। আর তা হতে পারে মূলত কমবয়সিদেরই।
এই টিটিএস বা ‘থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ কী?
এই বিরল রোগে শরীরের নানা জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। কমে যেতে পারে রক্তে প্লেটলেটসের মাত্রা। প্লেটলেটস হল ছোট থোট কোষ যা রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। রক্তে প্লেটলেটসের মাত্রা কমে তা শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে।
কাদের হচ্ছে?
মূলত যাঁরা ভ্যাক্সজেভরিয়া বা অ্যাস্ট্রেজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা নিয়েছেন বা জনসন অ্যান্ড জনসন/জ্যানসেন-এর কোভিড টিকা নিয়েছেন, তাঁদেরই এই ধরনের রোগের ঝুঁকি আছে।
কেন হচ্ছে?
কোভিশিল্ডের টিকা নেওয়ার পর যখন আমাদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা শরীরে এমন অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করা প্রোটিনের ক্ষতি করে।
দু’রকম প্রভাব
সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল এই রোগকে দু’টি পর্যায় (টু টিয়ার)-এ ফেলেছে।
১। প্রথম পর্যায় (টিয়ার ওয়ান): ক) মস্তিষ্ক, অন্ত্র, পা এবং ফুসফুসে বিরল রক্ত জমাট বাঁধা খ) প্রতি মাইক্রোলিটারে ১৫০০০০-এরও নীচে প্লেটলেট নেমে যাওয়া গ) পজ়িটিভ অ্যান্টি-পিএফ৪ এলিসা টেস্টে ধরা পরতে পারে। তবে পরীক্ষা জরুরি নয়। ঘ) প্রথম টিয়ারের রোগ হলে তা প্রাবল্য এবং ঝুঁকি দুই-ই বেশি। ঙ) কমবয়সিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
২। দ্বিতীয় পর্যায় ( সেকেন্ড টিয়ার): ক) পায়ে অথবা মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধা। খ) প্রতি মাইক্রোলিটারে ১৫০০০০-এরও নীচে প্লেটলেট নেমে যাওয়া। গ) পজ়িটিভ অ্যান্টি-পিএফ৪ এলিসা টেস্ট জরুরি।
উপসর্গ
মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা, পেটে যন্ত্রণা, পা ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, ফিট হওয়া বা জ্ঞান হারানো, ভাবনাচিন্তা করতে সমস্যা হওয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই টিকা নেওয়ার দেড় মাসের মধ্যে এই সমস্ত উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।