(বাঁদিকে) সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ এবং (ডান দিকে) অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
আড্ডা দিতে বাঙালি বরাবরই ভালবাসে। আর সেই আড্ডায় যদি বন্ধুত্ব উদ্যাপনের কথা হয়, তা হলে আর কথাই নেই। ‘লোকে কী বলবে’-র বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রতি সোমবারের মতো ছিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে জীবনের গূঢ় কোনও সমস্যার জট খুলতে নয়, বরং বন্ধুত্ব নিয়ে আড্ডা দিতে। আড্ডা আর গল্পগুজবের মেজাজে অনুত্তমার সঙ্গী ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী সৌরেন্দ্র মল্লিক ও সৌম্যজিৎ দাস। এর আগে সম্পর্কের বদল, প্রেমে বিচ্ছেদ নিয়ে নানা রকম পর্ব করেছেন অনুত্তমা। তবে বন্ধুত্বে চিড় ধরলে কী ভাবে সেই সম্পর্ক মেরামত করা যায়, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ওঠানামাগুলি কী ভাবে সামাল দেওয়া যায়, সেটাও তো ভাবতে হবে। সৌরেন্দ্র সৌম্যজিতের বন্ধুত্বের কাহিনি দিয়েই শুরু হল আড্ডা।
সৌরেন্দ্র বললেন, ‘‘সঙ্গীতের জগতে সৌম্যজিতের সঙ্গে আমার পথ চলার বিষয়টি পুরোটাই অজান্তে হয়েছে। আমরা একই কলেজে পড়তাম, গানবাজনাও করতাম। তবে একে অপরের সঙ্গে গানবাজনা করতে অন্য রকম স্বচ্ছন্দ বোধ করতাম। সেই থেকেই বোধ হয় পথ চলা শুরু।’’ সৌম্যজিৎ বললেন, ‘‘কলেজের প্রথম দিন গান করে সবাইকে মুগ্ধ করেছিলাম। সবাই এসে আমার গানের প্রশংসা করেছিল একমাত্র সৌরেন্দ্র ছাড়া। তখনই প্রথম বার ও আমার নজরে আসে। তার পরে গানবাজনা শুরুর পর বুঝলাম ওর সঙ্গে গান গাইলে আমি কোনও বাঁধনে বাঁধা পড়ব না। সেটাই আমার কাছে বড় ব্যাপার ছিল। গানবাজনার মধ্যে দিয়েই অজান্তেই আমরা একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লাম। বন্ধুত্বের সূত্রপাত সেখান থেকেই।’’ অনুত্তমা জানতে চাইলেন এত গাঢ় বন্ধুত্বের মাঝে কি কখনও কোনও সমস্যা হয়েছে?যাই হয়ে যাক দু’জনে সব সময় এক সঙ্গে থাকব—বন্ধুত্বের এই মন্ত্রেই বিশ্বাসী সৌরেন্দ্র ও সৌম্যজিৎ। সৌম্যজিৎ বললেন, ‘‘আমাদের বন্ধুত্বটা আমরা অনেক বেশি উপভোগ করি। ঝগড়া তো সব সম্পর্কেই হয়, তবে তার দাগ বন্ধুত্বের উপর পরে না। আমাদের পেশাও এক হওয়ার কারণে বন্ধুত্বের পথ চলাটা বোধহয় একটু হলেও সহজ হয়েছে।’’ সৌরেন্দ্র বললেন, ‘‘ আমরা একে অপরের থেকে বড্ড বেশি আলাদা, তাই মাঝে মধ্যে ঝগড়া হয়, মতভেদও হয়। তবে সেই মতভেদগুলি পরে কথপোকথনের মাধ্যমে অনেক সহজ হয়ে যায়। আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক যৌথ পরিবারের সম্পর্কের বাঁধনের মতো। এতে অনেক অজানা নিয়ম আছে, অনেকটা স্বাধীনতা আছে, আরও অনেকে জড়িয়েও আছে। এই সম্পর্কে আমরা একে অপরের সঙ্গে সব রকম সমস্যা ভাগাভাগি করে নিতে পারি। পরিবার মানেই কেবল রক্তের সম্পর্ক নয়, বন্ধুত্ব থেকেও যে আত্মীয়তা তৈরি হতে পারে একসঙ্গে থেকে তা বুঝতে পেরেছি আমরা।’’