একটা বছর পার করে আবার নতুন করে সেই পুরনো সমস্যার কাছে ফিরে যাওয়ার পালা। ছবি: সংগৃহীত
‘লোকে কী বলবে’ অনুষ্ঠানটি পা দিল এক বছরে। বছরপূর্তি উপলক্ষে চলছে তারই উদ্যাপন। এক বছরে এই অনুষ্ঠানটির হাত ধরে উঠে এসেছে এমন অনেক শঙ্কা, অবিশ্বাস, ছুতমার্গ আর লোকলজ্জার ভয়ে চেপে রাখা কথা— যা হয়তো কখনও প্রকাশ্যে বলা সম্ভব হত না। নিজের মধ্যে চেপে রেখে গুমরে গুমরে মরতেন অনেকেই। প্রতি সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক এবং ইউটিউব-এ আলোচনায় বসে মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় মনের গহিনে লুকিয়ে থাকা তেমন কিছু সত্যির অকপট সমাধান করতেন। তবে সব সমস্যার জট একবারে একটি পর্বে খোলা সম্ভব হত না। শেষ হয়েও হইল না শেষের মতো বাকি থেকে যেত অনেক কিছু। একটা বছর পার করে আবার নতুন করে সেই পুরনো সমস্যার কাছে ফিরে যাওয়ার পালা।
বর্ষপূর্তির প্রথম পর্বে তাই মনোবিদের আলোচনার বিষয় ‘যদি দেখতে খারাপ লাগে! লোকে কী বলবে’? অনেকের কাছেই বিষয়টি চেনা লাগতে পারে। কারণ এর আগেই এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন মনোবিদ। অনেকেই চিঠি লিখে নিজেদের খারাপ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন। মনোবিদও সাধ্যমতো বুঝিয়ে ছিলেন, ভরসা দিয়েছিলেন। এই পর্বেও তাই আবার সেই পর্বকে নতুন করে উপস্থাপন করলেন তিনি। তবে এ পর্বে মনোবিদ একা নন, সঙ্গে ছিলেন অভিনেত্রী কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তারকা সম্পর্কে কিছু বদ্ধমূল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। তাঁদের সব সময়ে একটি আতস কাচের নীচে ফেলে দেখা হয়। অভিনেতা মানেই তাঁকে হতে হবে ছিপছিপে। সব সময়ে তাঁদের ঘিরে থাকবে একটা আলগা চটক। ছকে বাঁধা ধারণার বাইরে চলে গেলেই শুরু হবে সমালোচনা। সাম্প্রতিক সময়ে তেমনই কিছু বিষয় নিয়ে কটাক্ষের শিকার হন কণীনিকা। এই সমালোচনাকে কী ভাবে সামলান তিনি? মনে কি কোনও খারাপ লাগার জন্ম নেয়? মনোবিদ প্রশ্ন রাখলেন অভিনেত্রীর কাছে? কণীনিকা বলেন, ‘‘পর্দায় অভিনয়ের জীবন প্রায় ২৩-২৪ বছরের। তার আগে আমি নাচ করেছি, নাটক করেছি। আমি যে মোটা, তা ছোট থেকেই শুনে এসেছি। আমার বোন খুব রোগা ছিল। আমি এও শুনেছি যে, তুমি কি বোনের সব খাবার খেয়ে নাও? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দিন এগিয়েছে। এক সময়ে প্রচণ্ড রোগা হয়েছিলাম। কিন্তু সেই সময়ে একটাও কাজ পাইনি। তার পর আমি বুঝলাম রোগা হয়েও কাজ পাওয়া যায় না। এখন আমার মনে হয়, চেহারা নিয়ে লোকে কী বলল, তাতে কিচ্ছু এসে যায় না। কারণ এই শরীরে আমি বসবাস করি। আর নিজেকে আমার দারুণ লাগে।’’ অনেক সময়ে সমালোচনা যে শুধু অচেনা বৃত্ত থেকে আসে, তা কাছের মানুষদের সংলাপে ঢুকে পড়ে। তেমন কোনও অভিজ্ঞতার মুখোমুখি কি কখনও হয়েছেন কণীনিকা? প্রশ্ন রাখলেন মনোবিদ। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘বহু বার হয়েছে এমন। আমার কয়েক জন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে সমুদ্রে ঘুরতে গিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত ভুলে গিয়েছিলাম যে, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম একসঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। ইনস্টাগ্রামটা আমি একান্তই ব্যক্তিগত ভাবে ব্যবহার করি। কিন্তু সে বার আমার এবং বান্ধবীদের সাঁতার পোশাক পরা কিছু ছবি ইনস্টাগ্রামে দিতে গিয়ে আমার ফেসবুক পেজেও চলে যায়। তার পর বিভিন্ন ধরনের কটাক্ষ ধেয়ে আসতে থাকে। জলহস্তী থেকে শুরু করে গণ্ডার, সব কিছুই শুনেছি। আমার কাছের মানুষেরা বলেছিলেন, আমি যেন ছবিগুলো সরিয়ে দিই। কিন্তু আমি ঠিক করেছিলাম, সরাব না। কারণ একটাই, আজ যদি আমি রাখতে না পারি, আমার মতো সাধারণ দশটা মেয়ে রাখতে পারবে না। আমি এই বদলটা আনতে চাই।’’