ইরাকে অপহৃত ৩৯ জন ভারতীয়কে আইএস জঙ্গিরা খুন করেছে বলে দাবি করলেন দুই বাংলাদেশি। উত্তর ইরাকের ইরবিলে এবিপি নিউজ চ্যানেলকে এ কথা জানিয়েছেন শফি ইসলাম ও হাসান নামে ওই দুই বাংলাদেশি। হরজিৎ মাসিহ নামে এক ভারতীয়ের পালিয়ে আসার প্রায় অবিশ্বাস্য কাহিনিও শুনিয়েছেন তাঁরা।
শফি ও হাসান জানান, গত জুনে বাগদাদ থেকে মসুল যাচ্ছিল ৫১ জন বাংলাদেশি ও ৪০ জন ভারতীয় শ্রমিকের একটি দল। তখনই তাঁদের অপহরণ করে জঙ্গিরা। বাংলাদেশিদের ধর্ম সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে জঙ্গিরা জানায়, শীঘ্রই ইরবিলে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁদের। ভারতীয়দের আলাদা করে নিয়ে যাওয়া হয়। সকলের মোবাইল ও পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়।
শফি ও হাসানের দাবি, পরে ওই ভারতীয়দের মধ্যে একমাত্র হরজিৎ মাসিহ-র সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়। ততদিনে শফি-হাসানদের আল-জামিয়া নামে এক জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে জঙ্গিরা। হরজিতের অবস্থা তখন শোচনীয়। তিনি হাসানদের জানান, ৪০ জন ভারতীয়কে গুলি করে জঙ্গিরা। হরজিতের গায়ে গুলি লাগলেও আঘাত গুরুতর না হওয়ায় তিনি বেঁচে যান। মৃতদেহের মতো পড়ে থেকে জঙ্গিদের চোখে ধুলো দেন হরজিৎ। শফি ও হাসানের দাবি, পরে আইএস জঙ্গিদের অন্য দলের হাতে পড়েন হরজিৎ। নিজেকে আলি নামের এক বাংলাদেশি বলে পরিচয় দেন তিনি। জঙ্গিদের এই দল সে কথা বিশ্বাস করে তাঁকে আল জামিয়ায় পৌঁছে দেয়। শফি-হাসানদের দাবি, তাঁরা হরজিৎকে আশ্বাস দেন জঙ্গিদের কাছে তাঁর প্রকৃত পরিচয় কোনও ভাবেই প্রকাশ করা হবে না।
ওই দুই বাংলাদেশির দাবি, তাঁদের মতো পরে আইএসের হাত থেকে ছাড়া পেয়েছেন হরজিৎও। তিনি এখনও ইরবিলেই আছেন। হরজিৎ তাঁর মা-র সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন ওই দুই বাংলাদেশি। পঞ্জাবের গুরুদাসপুরে কালা আফগানা গ্রামে হরজিতের বাড়ি। তাঁর মা শিন্দর মাসিহ স্বীকার করেছেন, হরজিতের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। হরজিৎ তাঁকে ওই কথোপকথনের কথা প্রকাশ করতে নিষেধ করেছিলেন।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, হরজিৎ ইরবিলে কুর্দদের হেফাজতে রয়েছেন। তাঁকে এখনও ভারতে পাঠাতে কুর্দরা রাজি নয়। বাকি অপহৃতদের সম্পর্কে দুই বাংলাদেশির দেওয়া তথ্য কতটা সঠিক তা এখনও তাদের জানা নেই।