হাতে হাত। রজনীকান্ত ও নরেন্দ্র মোদী। রবিবার। ছবি:এএফপি।
তামিলনাড়ু সরগরম!
এক দিকে আজ দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তম নায়ক রজনীকান্তের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। আর কাবেরী নদী সমস্যা তুলে ধরে এই প্রথম বিজেপিকে আক্রমণ করলেন এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর কে কার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবেন সে প্রশ্ন স্বতন্ত্র। তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার বেশি আসন নিয়ে জিতে আসার সম্ভাবনা প্রবল। সে ক্ষেত্রে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে মোদীর সঙ্গে জোট গড়ে সরকারে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এডিএমকে-র। কিন্তু নির্বাচনী প্রচার যখন তুঙ্গে, তখন সমস্ত দরজা খোলা রাখাটাই আঞ্চলিক দলগুলির পক্ষে স্বাভাবিক। আজ সে কাজটিই করলেন জয়া। পাশাপাশি তামিলনাড়ুর স্থানীয় আবেগকে মোদী ও জয়ললিতা যে পুরোপুরি কাজে লাগাতে চাইছেন তা আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।
প্রকাশ্যে এখনও পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দলের দিকে ঝোঁকেননি রজনীকান্ত। কিন্তু রাজ্যে তাঁর বিপুল জনপ্রিয়তার কথা অজানা নয় মোদীর। আজ তাই চেন্নাইয়ে জনসভা করতে গিয়ে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি রজনীকান্তের বাড়িতেই পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর বেরিয়ে এসে ছবি তুলেছেন। সেই ছবি টুইটারে দিয়ে দিয়েছেন তৎক্ষণাৎ। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, রজনীকান্তের অগণিত ভক্তের কাছে সদর্থক বার্তা দেওয়াটাই উদ্দেশ্য তাঁর।
অন্য দিকে কর্নাটকের সঙ্গে কাবেরী নদীর জলবণ্টন সমস্যা নিয়ে আজ মুখ খুলেছেন জয়ললিতা। পর পর দু’টি জনসভায় জানিয়েছেন, “গেরুয়া পার্টি তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বিষয়টির উল্লেখ পর্যন্ত করেনি। এই বিষয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের কোনও তফাতই নেই।” জয়া এ কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ১৯৯৯ সালে এই কাবেরীকে কেন্দ্র করেই তিনি তৎকালীন এনডিএ সরকার ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। তাঁর দাবি, কর্নাটকে আসন জয়ের লক্ষ্যেই বিজেপি কাবেরীকে তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে অচ্ছুৎ করে রেখেছে। তিনি বলেন, “যদি বিজেপি নেতারা বলেন যে কাবেরীর জলের ন্যায্য অধিকার তামিলনাড়ুকে দিতে হবে তা হলে কর্নাটকে তাঁরা ভোটই পাবেন না। সেটাই তাঁদের ভয়। অতীতেও আমাদের একই ভাবে ঠকানো হয়েছে।” এখানেই না থেমে এডিএমকে নেত্রীর বক্তব্য, “বিজেপি-র সঙ্গে তামিলনাড়ুর যে দলগুলি জোট বেঁধেছে তারা ভাল করেই জানে যে এই সমস্যার সমাধান তারা করতে পারবে না। তারা কি মনে করছে আমরা জল না পেলেও চলবে? যদি তাই হয় তাহলে এর থেকে বড় প্রতারণা আর কী হতে পারে।”
এর আগে যখন জয়ললিতা তাঁর প্রচারে বিজেপির বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি তখন কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা তামিলনাড়ুর নেতা পি চিদম্বরম এডিএমকে-কে বিজেপি-র ‘বি টিম’ হিসেবেও উল্লেখ করেছিলেন। আজ প্রচারের শেষ পর্বে এসে কৌশলে কংগ্রেসের সমালোচনারও জবাব দিলেন এডিএমকে নেত্রী।