পরাজয়ের পর পার্টি অফিসে অর্জুন মুন্ডা। ছবি: পিটিআই
রাজ্যের একের পর এক ‘হেভিওয়েট’ নেতার তখ্ত কাড়লেন ঝাড়খণ্ডের ভোটাররা।
হেমন্ত সোরেন তো বটেই, রেহাই পেলেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মরাণ্ডি, অর্জুন মুণ্ডা, মধু কোড়াও। একই হাল পূর্বতন উপমুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহাতো, বিধানসভার স্পিকার শশাঙ্কশেখর ভোক্তার। পরাজিত মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যও।
বিজেপি শিবির বলছে, নির্বাচনী প্রচারে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের অনুরোধ মেনে ঝাড়খণ্ডের মানুষ যে স্পষ্ট জনাদেশ দিতে চলেছেন, তার ইঙ্গিত মিলেছিল প্রথম দফার ভোটের পরই। তাই এমন ফলাফলেরই সম্ভাবনা ছিল।
রাজ্যে বিজেপি হাওয়ার দাপট হয়তো ভাল ভাবে টের পায়নি জেএমএম, কংগ্রেস, জেভিএম। তার জেরেই সাঁওতাল পরগনায় জেএমএমের ‘দুর্গ’ দুমকা হাতছাড়া হল খোদ মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের। বিজেপির লুইস মরাণ্ডির কাছে প্রায় ৫ হাজার ভোটে পরাজিত হলেন দুমকার ‘মিথ’ শিবু সোরেনের ছেলে! তাঁর মান কোনও মতে বাঁচল বরহেট আসনে। সেখানে হেমন্তের চেয়ে পিছিয়ে পড়েন বিজেপির হেমলাল মুর্মূ।
তবে, দুমকার ফলাফলকে পরাজয় হিসেবে দেখতে নারাজ হেমন্ত। আজ বিকেলে তিনি বলেন, “দুমকায় হেরেছি বলে মনে করি না। আমরা তো গোটা ঝাড়খণ্ডেই জিতেছি। অনেক এমন আসনে আমরা পেয়েছি, যেগুলি হিসেবের বাইরে ছিল।”
হেমন্তের মতো দু’টি আসনে লড়লেও শেষরক্ষা হয়নি বাবুলাল মরাণ্ডির। গিরিডি, ধনওয়ার দু’টি আসনেই হেরেছেন তিনি। পাশাপাশি, কার্যত ‘ইন্দ্রপতন’ হল খঁরসওয়ায়। মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে অন্যতম দাবিদার বিজেপির অর্জুন মুণ্ডা সেখানে পরাজিত হলেন। তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী হারলেন প্রায় ১২ হাজার ভোটের ব্যবধানে।
সিল্লিতে জেএমএমের তরুণ প্রার্থী অমিত মাহাতোর কাছে ২৯ হাজারের মতো ভোটে পরাজিত হলেন আজসু-প্রধান সুদেশ মাহাতো। লোহারডাগায় হারলেন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুখদেব ভগত। ওই তালিকায় নাম উঠল হেমন্ত সোরেনেক মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ মন্ত্রীরই। অনেকেই ভাবেননি, তবু রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ, অন্নপূর্ণাদেবী, সুরেশ পাসোয়ান, গীতাশ্রী ওঁরাও ধরাশায়ী হলেন তাঁরাও।
আজকের এই ফলাফলের প্রেক্ষিতে বিজেপির একাংশ বলছে, মানুষ অবাধে এবং নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে কী পরিণতি হতে পারে, এ বার তা দেখিয়ে দিল ঝাড়খণ্ড।