দেড়শো পুরোহিত। উপাচার দু’ হাজার চারশো কেজি ঘি। উপহার আড়াই হাজার কেজি চন্দন কাঠ। গত কাল নেপালে পশুপতিনাথের মন্দিরে পুজো দিয়ে এসে আপ্লুত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়লেন সংসদে। অভিযোগ উঠল, ঈদের শুভেচ্ছা না জানিয়ে ধর্মীয় পক্ষপাত দেখাচ্ছেন মোদী। অভিযোগ উড়িয়ে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু অবশ্য বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী যেমন পশুপতিনাথ মন্দিরে পুজো দিয়েছেন, তেমনই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ঈদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। সর্বত্র প্রচারিতও হয়েছে তা।”
লোকসভায় জিরো আওয়ারে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী আজ প্রায় একযোগে বিষয়টি নিয়ে মুখর হন। সুদীপবাবুর বক্তব্য, “ভারত সর্বদাই ধর্মনিরপেক্ষতা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং জাতীয় সংহতির নীতি নিয়ে চলে। অন্য ধর্মকে সম্মান করা উচিত আমাদের। কিন্তু সম্প্রতি কিছু অশুভ শক্তি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সরকার সংসদকে আশ্বস্ত করুক যে তারা এই ধরনের উত্তেজনা ছড়াতে দেবে না।” এর পরই তিনি নেপাল-বৃন্তান্তে চলে আসেন। বলেন, “আমরা শুনেছি নেপালে প্রধানমন্ত্রী ২৪০০ কিলোগ্রাম ঘি দিয়ে পুজো করেছেন। সেটাতে আমরা খুশি। কিন্তু পাশাপাশি আমরা এটাও আশা করি যে প্রধানমন্ত্রী ঈদের শুভেচ্ছাও জানাবেন। এই বৈষম্য কেন করা হচ্ছে?”
সরকারি পক্ষে তুমুল হট্টগোল শুরু হয় এতে। তার মধ্যেই বলতে ওঠেন অধীর চৌধুরী। সুদীপবাবুর চেয়েও আক্রমণাত্মক ঢঙে তিনি বলেন, “পশুপতি থেকে তিরুপতি, প্রধানমন্ত্রী যতই ঘি ঢালুন, আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু রমজানের সময় সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক বার একটি ইফতার দেওয়া হয়। কিন্তু এ বার তা হল না কেন?” এর পর তাঁর বক্তব্য চিৎকারে ঢাকা পড়ে যায়।
স্পিকার জানান, যে কোনও ব্যক্তি কাউকে ইফতার বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করবেন কি না সেটা একান্তই তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে সংসদে আলোচনা করা সম্ভব নয়। এর পরেও অধীর চিৎকার চালিয়ে যান। যদিও সে সব নথিভুক্ত হবে না বলে জানিয়ে দেন স্পিকার। পরে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলেন, “আমি স্পষ্ট ভাবে জানাতে চাই যে, আমাদের সরকার সর্বধর্ম সদ্ভাবনায় বিশ্বাস করে। আমরা সেই পথেই চলছি।”