গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা

প্রচুর অ্যালকোহল মিলেছে সলমনের রক্তে

আগের বেশ কয়েকটা শুনানিতে আদালতে আসতে দেখা যায়নি তাঁকে। কাজ আছে বলে পাঠিয়েছিলেন কৌঁসুলিকে। কিন্তু আজ মুম্বইয়ের দায়রা আদালতে হাজিরা দিলেন সলমন খান। আর আজই এক রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ আদালতকে জানালেন, বলিউড অভিনেতার রক্তের নমুনায় ভাল পরিমাণে অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বাল শঙ্কর নামে ওই বিশেষজ্ঞ বিচারককে আরও জানিয়েছেন, সলমনের রক্তে মরফোলিন নামে একটি মাদকের অস্তিত্বও মিলেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৩৭
Share:

আদালতের পথে সলমন খান। বুধবার। ছবি: পিটিআই।

আগের বেশ কয়েকটা শুনানিতে আদালতে আসতে দেখা যায়নি তাঁকে। কাজ আছে বলে পাঠিয়েছিলেন কৌঁসুলিকে। কিন্তু আজ মুম্বইয়ের দায়রা আদালতে হাজিরা দিলেন সলমন খান। আর আজই এক রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ আদালতকে জানালেন, বলিউড অভিনেতার রক্তের নমুনায় ভাল পরিমাণে অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বাল শঙ্কর নামে ওই বিশেষজ্ঞ বিচারককে আরও জানিয়েছেন, সলমনের রক্তে মরফোলিন নামে একটি মাদকের অস্তিত্বও মিলেছে।

Advertisement

ওই বিশেষজ্ঞ জানান, সলমনের একশো মিলিলিটার রক্তে প্রায় ৬২ মিলিগ্রাম অ্যালকোহল মিলেছে, যা ন্যূনতম মাত্রার প্রায় দ্বিগুণ। এক প্রশ্নের উত্তরে আদালতে বাল শঙ্কর জানান, সাধারণ মানুষ মদ খেলে তাঁর ১০০ মিলিলিটার রক্তে ৩০ মিলিগ্রাম ইথাইল অ্যালকোহল মিলতে পারে। কেউ কোনও বিশেষ ওষুধ খেলে তা ৪০ হতে পারে। সলমনের ক্ষেত্রে সেই পরিমাণটাই ৬২। যা স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি। যা শুনে অনেকেই মনে করছেন, সলমনের জন্য এটা একটা বড়সড় ধাক্কা। অনিচ্ছাকৃত খুনের যে মামলা তাঁর বিরুদ্ধে চলছে, তাতে দোষী সাব্যস্ত হলে দশ বছরের জেল হতে পারে তাঁর।

২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ভোররাতে বান্দ্রার একটি বেকারির দোকানে ধাক্কা মেরেছিল সলমনের গাড়ি। তাতে মৃত্যু হয় এক ফুটপাথবাসীর। আহত হন চার জন। সলমনের বিরুদ্ধে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা মামলা শুরু হয়। মামলা শুরুর পর থেকেই সলমন দাবি করে এসেছেন, তিনি সেই সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন না। কিন্তু এর আগের শুনানিতেই এক সাক্ষী দাবি করেন, তিনি ঘটনার কিছু আগেও সলমনকেই চালকের আসনে দেখেছিলেন। মুম্বইয়ের এক সাত তারা হোটেলের পার্কিং লটের দায়িত্বে থাকা ওই ব্যক্তি আদালতকে আরও জানিয়েছিলেন, গাড়ি করে বেরোনোর সময় সলমন নিজে তাঁর হাতে ৫০০ টাকার একটি নোট ধরিয়েছিলেন। ফলে চালকের আসনে থাকা ব্যক্তিকে তাঁর চিনতে ভুল হতেই পারে না।

Advertisement

বারো বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই মামলা বারবার বিতর্কের মুখে পড়েছে। একাধিক সাক্ষী একাধিক বার বয়ান বদল করেছেন। কেউ আদালতকে জানিয়েছেন, সলমন সে দিন মদই খাননি। কেউ দাবি করেছেন, ঘটনার সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন না তিনি। গত অগস্টেই মুম্বই পুলিশ দাবি করে, এই মামলা সংক্রান্ত ৬৩টি নথির মধ্যে ৫৫টিরই খোঁজ মিলছে না। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই মামলার রায় এখনও পর্যন্ত না-হওয়ায় সম্প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিচারকও। দিন কয়েক আগেই তিনি বলেছিলেন, তিনি চান ডিসেম্বরের মধ্যেই এই মামলার নিষ্পত্তি হোক।

যে হাসপাতালে সলমনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল, তারা ফরেন্সিক পরীক্ষাগারে ঠিক ক’টি নমুনা পাঠিয়েছিলেন, তা নিয়েও ধোঁয়াশা ছিল। আদালতের নির্দেশে পুনর্তদন্ত করে বিষয়টির মীমাংসা হয় আজ। আজ আদালতে সলমনের আইনজীবী শ্রীকান্ত শিভাড়ে অভিযোগ করেন, যে ৬৩ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে, তার তালিকা তাঁর হাতে নেই। যার জবাবে সরকারি কৌঁসুলি প্রদীপ ঘারাটের বক্তব্য, সাক্ষী তালিকা অনেক আগে বিবাদী পক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন মামলা যেখানে দাঁড়িয়ে, সেই পরিস্থিতিতে ওই তালিকা শিভাড়ের হাতে দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি যিনি পরীক্ষা করেছিলেন, মোটর ভেহিকেলস্-এর সেই ইন্সপেক্টরের সঙ্গে আজ বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন সলমনের আইনজীবী। বিচারক ডি দেশপান্ডে তখনই আজকের মতো শুনানি মুলতুবি করে দেন। আগামী ১৫ ডিসেম্বর ফের শুনানি। তবে ওই দিন হাজির থাকতে হবে না সলমনকে। ১৮ তারিখ ফের সলমনকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

রাসায়নিক বিশেষজ্ঞের বয়ান নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি সলমন। বাড়ি থেকে গাড়িতে উঠে আজ আদালতে যেতে দেখা যায় অভিনেতাকে। বসেছিলেন চালকের পাশেই। পরনে নীলচে ফুলহাতা শার্ট আর জিন্স। পিছনের আসনে ছিলেন সলমনের দুই বোন অলবিরা আর অর্পিতা। বাড়ির সামনে আর আদালত চত্বরে সংবাদমাধ্যমের ভিড় থাকলেও, খান পরিবারের কেউই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement