দলের সমস্ত স্তরের সব ধরণের কমিটি থেকে ‘ঠিকাদার-নেতাদের’ দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিল ত্রিপুরা রাজ্য সিপিএম।
ত্রিপুরায় লোকসভার ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হলেও, সারা দেশে এখনও এই পর্ব চলছে। এরই মধ্যে ত্রিপুরায় আগামী পঞ্চায়েত ভোটের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব। এই প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবেই দলের সাংগঠনিক স্তরের বিভিন্ন কমিটি ঢেলে সাজছে সিপিএম। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর জানিয়েছেন, ‘‘দল এখন থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য কমিটির এই সিদ্ধান্ত দলের সর্ব স্তরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
এরই পাশাপাশি, দলের সদস্যদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন রাখতে রাজ্য কমিটি ঠিক করেছে, দলের কোনও সদস্য যদি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তবে তাঁকে সংগঠনের কোনও স্তরের, কোনও কমিটিতেই আর রাখা হবে না। তবে সদস্য হিসেবে তিনি থাকতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে বিজনবাবু বলেন, ‘‘ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত দলীয় সদস্যদের কোনও ধরনের কমিটি বা দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার মধ্যে না রাখার সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছে। জুন-জুলাইয়ে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি কার্যকর করার জন্য দল উদ্যোগী হয়েছে।’’
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের পর আগরতলার শহরতলিতে, বনকুমারী এলাকায় দলের লোকাল কমিটির এক সদস্যর ‘টাকার বিছানায়’ শুয়ে থাকার ভিডিও টেপ-কে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, সর্বহারার পার্টির সদস্য কী ভাবে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতে পারে? সমালোচনার সেই ‘ভূত’ মাথায় রয়েছে সিপিএমের দলীয় নেতৃত্বেরও। বিজনবাবুর মন্তব্য, ‘‘যথেষ্ট সতর্ক হয়েই দলের সাংগঠনিক ভাবমূর্তি আরও স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন করার চেষ্টা আমরা চালাচ্ছি।’’
সেই কারণেই আগামী পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতির পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক স্তর নতুন করে ঢেলে সাজার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সিপিএম। যে সব সদস্য ঠিকাদারি করেন, কেবল তাঁদেরকেই দলের সংগঠন থেকে সরানো হচ্ছে তা নয়। মদের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সদস্যদেরও দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এ সব ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সিপিএমের কোনও দলীয় সদস্য এখন থেকে আর দলের কোনও স্তরেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় থাকবে না বলে বিজনবাবু জানান। আগামী জুলাই মাসেই রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তার আগে, জুন মাসেই পঞ্চায়েত ভোট। ভোটের আগেই এই সাংগঠনিক শুদ্ধিকরণের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে বিজনবাবুর আশা।