সাক্ষী মহারাজ। ছবি: পিটিআই।
সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির বিতর্কিত মন্তব্যের রেশ এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই ফের বিতর্কে বিজেপির আর এক সাংসদ। গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে দেশপ্রেমী আখ্যা দিয়ে আজ নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন সাক্ষী মহারাজ। উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের এই সাংসদ খাস সংসদের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছেন, “গডসে হয়তো কিছু ভুল করে থাকবেন। কিন্তু তিনি দেশদ্রোহী ছিলেন না। তিনি আসলে দেশপ্রেমী ছিলেন।”
সাক্ষী মহারাজের এই মন্তব্যের পরেই সারা দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তাঁর এই মন্তব্যের জেরে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
চলতি মাসের গোড়াতেই এক জনসভায় অশালীন মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের সাংসদ সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিমন্ত্রীও বটে। জ্যোতির মন্তব্য নিয়ে এতটাই জলঘোলা হয় যে, শেষ পর্যন্ত আসরে নামতে হয় স্বয়ং নরেন্দ্র মোদীকে। সাধ্বী নিজেও সংসদে দাঁড়িয়ে তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের উত্তরপ্রদেশের আর এক সাংসদ বিতর্কে জড়ালেন।
আজ অবশ্য ওই বিতর্কিত মন্তব্য করার পর পরিস্থিতি সামলাতে নিজেই উদ্যোগী হন সাক্ষী মহারাজ। একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে বলেন, “গডসেকে আমি দেশপ্রেমী হিসেবে দেখিই না। যদি তেমন কিছু বলে থাকি, হয়তো ভুল করে বলে ফেলেছি।”
তবে তাতে অবশ্য চিঁড়ে ভেজেনি। বিষয়টি নিয়ে আসরে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে আরএসএস ‘নাথুরাম গডসে শৌর্য দিবস’ পালন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনেই রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ হুসেন দলওয়ানি আজ এক হাত নিয়েছেন মোদী সরকারকে। সংসদের বাইরে আজ তিনি বলেন, “যাঁকে আমরা জাতির জনক বলি, তাঁকে মেরেছিল গডসে। এখন কিছু মানুষ গত ১৫ নভেম্বর ‘গডসে শৌর্য দিবস’ পালন করেছেন। এটা সাঙ্ঘাতিক ভুল। যাঁরা গডসেকে গৌরবান্বিত করছেন, সরকারের উচিত তাঁদের গ্রেফতার করা। সরকার এ নিয়ে চুপ কেন?” বিষয়টি নিয়ে তিনি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে চিঠিও লিখলেও মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে দাবি হুসেনের।
তবে বিজেপি নেতৃত্ব গোটা বিষয়টির সঙ্গে নিজেদের জড়াতে চাইছেন না। গডসে প্রসঙ্গে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু রাজ্যসভায় বলেছেন, “ওই সব লোককে সম্মান জানানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। সরকারেরও এ সব করার প্রশ্ন ওঠে না।”