তিনি টুইটেও আছেন, রেডিওতেও আছেন!
প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত শহরবাসী থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের বটতলার আড্ডাসর্বত্র একই সঙ্গে পৌঁছনোর কৌশল নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ক্ষমতায় আসার পর আজ তৃতীয় বার জাতির উদ্দেশে রেডিও-বার্তা দিলেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই বেতার বার্তাটি যে তিনি দেবেন, তা গত কালই টুইট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বেতার-বক্তৃতাটি ওয়েবসাইটেও রাখা হয়েছে। অর্থাৎ অভিনব কৌশলে একই সঙ্গে গ্রাম ও শহরএক ঢিলে দু’টি সমাজের মানুষের কাছেই বার্তা পাঠাচ্ছেন তিনি।
সনাতন গণমাধ্যম হিসেবে রেডিওকে বেছে নেওয়া নিঃসন্দেহে মোদীর ‘আউট-অব-বক্স’ সিরিজের অন্যতম। সাম্প্রতিক অতীতে কোনও প্রধানমন্ত্রী রেডিওর মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, এমন দৃষ্টান্ত নেই। মনমোহন সিংহ তো ননই, অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানাতেও এমন উদ্যোগ দেখা যায়নি। অথচ মোদী জানিয়ে দিয়েছেন, প্রত্যেক মাসে এক বার করে প্রত্যন্ত গ্রামে দিল্লির বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে সরাসরি। আর তা দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর স্বকন্ঠে, আকাশবাণীর ‘মন কি বাত’ নামের একটি অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠান শুনে শ্রোতারা যাতে মতামত জানাতে পারেন, সে জন্য চিঠি লেখার ঠিকানাটিও তাঁদের বলে দিয়েছেন মোদী। কয়েক মাস ধরে টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, নিজস্ব ওয়েবসাইট ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়াকে চূড়ান্ত ভাবে ব্যবহার করে চলেছেন মোদী। এ সবের মাধ্যমে দেশের তো বটেই, বিদেশেরও বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ভারতীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তিনি। তথ্যপ্রযুক্তিতে অভ্যস্ত যুব সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছতে সোশ্যাল মিডিয়াকে এ ভাবে আর কোনও প্রধানমন্ত্রী ব্যবহার করেননি। তবে দেশ ও বিদেশের নাগরিক সমাজের বাইরেও রয়েছে যে বিরাট গ্রামীণ ভারত, তার কথাও সমান্তরাল ভাবে মাথায় রেখেছেন মোদী। আর তাই, রেডিওর মতো প্রাচীন প্রচার মাধ্যমকে নতুন ভাবে ব্যবহার করতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি।
বেতারে তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এর আগে প্রধানমন্ত্রী কালো টাকা নিয়ে সরব হন। আজ অবশ্য রাজনৈতিক বিষয় নয়, বেছে নিয়েছেন সমকালীন এক সামাজিক সমস্যা-- মাদকাসক্তিকে। তাঁর কথায়, “নতুন প্রজন্মের মাদকাসক্তির বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আমি চিন্তিত। অনেকেরই সন্তান এ জন্য নিজেদের সর্বস্ব খোয়াচ্ছে। মাদকে অন্ধকার, বিপর্যয় ও ধবংস তিনটি পরিণতি অবধারিত।” এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। মাদক ও সন্ত্রাসের সংযোগের বিষয়টিকেও তুলে ধরেছেন। মোদীর কথায়, “মাদকের পিছনে খরচ করা টাকা, জঙ্গিদের হাতে যায়। আর সেই টাকায় ওরা বুলেট কেনে আমাদের সেনাদের হত্যা করার জন্য। এটা কখনও ভেবে দেখেছেন কি?”