কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্তের আওতায় আসছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। এই মামলায় তাঁর বয়ান রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছে বিশেষ আদালত।
২০০৫ সালে কয়লার ব্লক বন্টনে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিরোধীদের প্রচারের ধাক্কা রাজনৈতিক ভাবে সামলাতে পারেনি কংগ্রেস। কয়লা-সহ আরও বেশ কয়েকটি আর্থিক কেলেঙ্কারির কথা তুলে নরেন্দ্র মোদী ও অন্যান্য বিরোধী নেতার প্রচারের জেরে লোকসভা ভোটে শোচনীয় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে মনমোহন সিংহের দলকে। এমনকী ব্লক বন্টনকে বেআইনি আখ্যা দিয়ে তা খারিজেরও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এ বার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেলেঙ্কারির তদন্তের আওতায় এলে স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি অন্য মাত্রা পাবে।
কয়লার ব্লক বন্টনের সময়ে ওই দফতরের দায়িত্ব তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ নিজের হাতেই রেখেছিলেন। ফলে দুর্নীতির দায় থেকে তিনি যে হাত ধুয়ে ফেলতে পারেন না, সেই দাবি তুলে সংসদে বার বার সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তবু তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই কখনও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। এমনকী কুমারমঙ্গলম বিড়লার সংস্থা হিন্ডালকোর বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধও করতে চেয়েছিল সিবিআই। তবে দিল্লির বিশেষ আদালত এ দিন এই সংস্থাকে খনি দেওয়া নিয়ে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে। আর এ নিয়ে তৎকালীন কয়লামন্ত্রী মনমোহনের বক্তব্য রেকর্ড করতেও সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। হিন্ডালকোকে কয়লার ব্লক দেওয়া নিয়ে তদন্ত বন্ধ করার প্রস্তাব খারিজ করে আদালতের মন্তব্য, “ তখন যিনি কয়লামন্ত্রী ছিলেন, তাঁরও বক্তব্য রেকর্ড করুক সিবিআই।” ২৭ জানুয়ারি মধ্যে এ নিয়ে আদালতে জানানোর জন্য তদন্তকারী সংস্থাকে বলা হয়েছে।
ঘটনা হল, আদালতে আগেই সিবিআই জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পরেই তাঁরা মনমোহন সিংহকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন বোধ করেননি। প্রধানমন্ত্রী দফতরের তৎকালীন প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি টি কে এ নায়ার এবং জাভেদ উসমানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের কাছে প্রশ্ন পাঠিয়ে জবাব চাওয়া হয়েছিল। তাঁদের বক্তব্য জানার পরেই মনমোহন সিংহকে আর জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে মনে মনে করেনি সিবিআই। তবে সিবিআই সূত্রের খবর, তৎকালীন কয়লামন্ত্রী হিসেবে মনমোহন সিংহকে জেরা করা হবে কি না, তা নিয়ে তদন্ত সংস্থার অন্দরমহলেই দ্বিমত ছিল। পাশাপাশি, হিন্ডালকোর-র বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল সিবিআই। সে কারণে আদালতে কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাদের। এখন যদিও আদালতের আদেশের পরে পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে।
মনমোহন সিংহকে নিয়ে এই নির্দেশের পাশাপাশি এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের বক্তব্য নিয়েছে সিবিআই।