রাজি হলেই জামিন পেতেন। দিল্লির মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট গোমতি মানোচা নিজে বারবার অনুরোধ করেছিলেন জামিন নিতে। কিন্তু নিতিন গডকড়ীর দায়ের করা মানহানির মামলায় জামিন নিতে অস্বীকার করে কার্যত নিজের ইচ্ছেতেই তিহাড় গেলেন আম আদমি পাটির নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল।
জেল সূত্রের খবর, ২০১১ সালে অণ্ণা হজারেকে যে সেলে রাখা হয়েছিল, সেখানেই রাখা হয়েছে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। মেঝেতে শুয়ে ও সাধারণ কয়েদির জন্য নির্ধারিত খাবার খেয়ে দু’দিন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে কাটাবেন তিনি। কিন্তু কেন? বিজেপির মতে, এটা স্রেফ নাটক। দিল্লিবাসীকে ঠকিয়ে ৪৯ দিনের মাথায় সরকার ভেঙে দিয়ে লোকসভা ভোটে ঝাঁপিয়েছিল আপ। গোটা দেশে তেমন কিছুই করতে পারেনি। এর পরেও দিল্লিতে সরকার গড়ার জন্য ফের কংগ্রেসের সমর্থন চেয়ে মুখ পুড়িয়েছে তারা। হাল না ছেড়ে গত কাল উপরাজ্যপাল নাজিব জঙ্গের সঙ্গে দেখা করে দিল্লি বিধানসভা জিইয়ে রাখারও আবেদন করেন অরবিন্দ। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে বিধানসভার ভোটও আর খুব দূরে নয়। অথচ আপের সমর্থন প্রায় তলানিতে। এই অবস্থায় কেজরীবাল ফের নৈরাজ্যের রাজনীতিতেই ফিরছেন বলে মনে করছে বিজেপি ও কংগ্রেস।
অরবিন্দ স্বেচ্ছায় জেলে গেলেও আজ সন্ধে থেকেই তিহাড়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান আপের সমর্থক ও যোগেন্দ্র যাদব, মণীশ সিসৌদিয়ার মতো দলের শীর্ষ নেতারা। এক প্রস্ত ধাক্কাধাক্কির পর পুলিশ তাঁদের হটিয়ে দেয়। কেজরীবাল ও তাঁর আইনজীবী প্রশান্তভূষণের যুক্তি, “এটা কোনও ফৌজদারি অপরাধের মামলা নয়, রাজনৈতিক মামলা। এমন মামলায় দলের কোনও নেতা নীতিগত ভাবে জামিন নেবে না।” যদিও নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কাল হাইকোর্টে যাবেন আপ নেতৃত্ব।
গত জানুয়ারিতে বিজেপি ও কংগ্রেস মিলিয়ে ডজন খানেক রাজনৈতিক নেতাকে দেশের সব থেকে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি বলে অভিযোগ করেছিলেন অরবিন্দ। তালিকায় ছিলেন গডকড়ীরও। তিনি ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে কেজরীবালের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। আপ এটা থেকে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চাইলেও গডকড়ী অনড়। ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, কেজরীবাল আদালতে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত মামলা প্রত্যাহার করবেন না। যেমনটি তিনি করেননি প্রাক্তন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মণীশ তিওয়ারির ক্ষেত্রে। গডকড়ীর পাশেই রয়েছে সঙ্ঘ পরিবার। তাদের বক্তব্য, কেজরীবাল এর আগেও আইন ভেঙেছেন। এখন বিচার ব্যবস্থাকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভিত দুর্বল করার চেষ্টা করছেন। গোটাটাই ভোটব্যাঙ্ককে প্রভাবিত করার জন্য।