গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে বৃষ্টি না হলেও গুয়াহাটি মহানগরের ১২টি এলাকা এখনও জলমগ্ন। জলে ডুবে যাওয়া আরও দু’জনের দেহ আজ উদ্ধার হয়েছে ভেটাপাড়া ও ভাঙাগড় থেকে। নারেংগিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন একজন। সব মিলিয়ে গুয়াহাটি ও আশপাশে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১।
গত কাল থেকে লখিমপুর ও বাক্সায় বন্যার জলে বেশ কিছু গ্রাম ডুবেছে। গুয়াহাটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ধস নেমে ভেঙেছে শতাধিক বাড়ি। খারগুলিতে রাস্তার একাংশ ভেঙে চলে গিয়েছে ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে। মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ আজ বলেন, “আমি কখনও গুয়াহাটিতে এমন অবস্থা দেখিনি। এটি নদীর বন্যা নয়। বৃষ্টির জল বের হতে না পেরেই এই কাণ্ড হয়েছে।” তাঁর কথায় বৃষ্টি যে খুব হয়েছে, তাও নয়। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থা কার্যত বন্ধ হওয়াতেই বিপত্তি। সেই সঙ্গে জলাশয় জবরদখল ও পাহাড় কাটার সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সমস্যা সমাধানে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে সরকারি স্তরে।
আশু ব্যবস্থা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনকে নিকাশি সাফ করা ও আটকে থাকা মানুষদের কাছে জল ও খাবার পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর বিভিন্ন এলাকায় ধস সরাবার পাশাপাশি নৌকা ও ত্রাণ শিবিরের আয়োজন করেছে। প্রশাসন জলবন্দি এলাকায় বিনামূল্যে রিক্সা পরিষেবার ব্যবস্থা করেছে। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থার মধ্যে গগৈ পাহাড় ও জলাশয় সংরক্ষণে গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “প্রশাসন ৩৭৬টি ধস-প্রবণ ও বিপজ্জনক পাহাড়ি এলাকা চিহ্নিত করে সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক করলেও তাঁরা সরেননি। ফলে প্রাণহানি হচ্ছে।” তাঁর বক্তব্য, সরকার এ বার কঠোর হবে। দীপর বিলের মতো জলাভূমিতে মেয়াদি পাট্টা থাকা বাসিন্দারা জলাশয় ধ্বংস করছেন। সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে হবে। পাহাড় ও জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য স্বতন্ত্র বাহিনী গড়ার কথাও মুখ্যমন্ত্রী জানান। সেই সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র-সহ বাকি নদীগুলির বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে নির্দিষ্ট প্রকল্প হাতে নিতে হলে কেন্দ্রের সাহায্য অপরিহার্য বলেই মনে করেন গগৈ। অন্য দিকে, গুয়াহাটির সাংসদ বিজয়া চক্রবর্তী জানান, তিনি গুয়াহাটির বন্যা সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলবেন। দু’বছরের মধ্যে এই সমস্যার চিরন্তন সমাধানের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবেন।