মুঙ্গেরে পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জ (ডান দিকে)। ঘটনার পর পুলিশি তৎপরতা। .ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
বেআইনি অস্ত্রের জন্য কুখ্যাত বিহারের মুঙ্গের। বিধানসভা ভোটের প্রথম দফার মুখে সেই মুঙ্গেরেই দুর্গাপুজোর বিসর্জন ঘিরে গুলিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। নিহত বছর আঠেরোর ওই যুবকের নাম অনুরাগ পোদ্দার। বিসর্জনে যাওয়ার সময় একটি গাড়িতে থাকা লোকজনের উপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়ছে ক্ষোভ। গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। যদিও পুলিশের পাল্টা দাবি, বিসর্জনের শোভাযাত্রা থেকে ইট-পাটকেল ছোড়ে কিছু দুষ্কৃতী। তার জেরে বাধ্য হয়ে লাঠি চালায় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে তিনটি পিস্তল ও বেশ কিছু বুলেট।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি খোলা ট্রাকের উপর দুর্গা প্রতিমা নিয়ে বেশ কিছু স্থানীয় বাসিন্দা বিসর্জন দিতে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। সেই সময়ই ওই বিসর্জনের দল থেকে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। তার জেরে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক গন্ডগোল শুরু হয়। সেই সময়ই গুলি চলে বলে অভিযোগ। তাতে এক যুবকের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। পুলিশ ওই বিসর্জনের গাড়িতে থাকা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে। গন্ডগোলের সময় পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীরাও তো ছ’-সাত ভাইবোন! নীতীশকে পাল্টা তেজস্বীর
তবে গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের দাবি, ওই শোভাযাত্রায় বিশৃঙ্খলার জেরে দেরি হচ্ছিল বিসর্জনে। বেশ কিছু দুষ্কৃতী ঢুকে পড়েছিল। তার মধ্যেই পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় পাথরবৃষ্টি। লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। মুঙ্গেরের পুলিশ সুপার লিপি সিংহ বলেন, দুর্গা পুজোর বিসর্জনে কিছু দুষ্কৃতী ঢুকে পড়েছিল। দুষ্কৃতীদের ছোড়া পাথরে আহত হন ২০ জন পুলিশকর্মী। তার পর জনতার মধ্যে থেকে কেউ গুলি চালায়। তাতে মৃত্যু হয় এক যুবকের।’’ ভিডিয়োতে নৃশংস ভাবে পেটানোর ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরেও এক পুলিশকর্মীর দাবি, ‘‘জনতাকে পেটানোর মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। অভিযুক্তকে ধরার চেষ্টা চলছে।’’
আরও পড়ুন: ফরিদাবাদে ‘লভ জিহাদ’, ভরদুপুরে কলেজের সামনেই তরুণীকে গুলি করে খুন
কাল বুধবার বিহারে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। রাজনৈতিক উত্তেজনা ছিলই। তার মধ্যে এই ঘটনায় পারদ আরও চড়েছে। চিরাগ পাসওয়ান মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে টুইটে বলেন, ‘‘নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে রাজ্যে তালিবানি কায়দায় বিসর্জনে যাওয়া এক যুবককে গুলি করে মারা হয়েছে। মুঙ্গের পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের মামলা হওয়া উচিত। পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হোক অবিলম্বে।’ নিহত যুবকের পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের দাবিও জানিয়েছেন চিরাগ। নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলার ভার এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। ঘটনা ‘অনভিপ্রেত’ বলে মন্তব্য করে উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের উচিত ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া।