হিন্দির বিরুদ্ধে সোচ্চার রজনীকান্ত। ফাইল চিত্র
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই প্রতিবাদ শুরু হয়েছে অমিত শাহের ‘এক দেশ এক ভাষা’ তত্ত্বের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে প্রতিবাদের জোরালো হাওয়া। এ বার গর্জে উঠলেন শিবাজি রাও গায়কোয়াড় ওরফে রজনীকান্ত। শুধু হিন্দি কেন, কোনও ভাষাই চাপিয়ে দেওয়া যায় না, বললেন দক্ষিণী সুপারস্টার। বুধবার চেন্নাই বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রজনীকান্ত বলেন, ভারতের মতো দেশে কেউ যে কোনও একটি ভাষা চালু করতে পারে না।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর হিন্দি দিবসে অমিত শাহ বলেছিলেন, বিশ্বের কাছে ভারতের পরিচিতির জন্য একটি সাধারণ ভাষা থাকা দরকার। যেহেতু দেশে হিন্দি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভাষা, তাই হিন্দিই হোক সেই ভাষা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। শিল্পী-সাহিত্যিক-বিদ্বজ্জনরা এই হিন্দি তত্ত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দল তো বটেই এমনকি, কর্নাটকের বিজেপি নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পাও এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন।
সেই তালিকাতেই এ বার নয়া সংযোজন রজনীকান্ত। বুধবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘শুধু ভারত কেন, যে কোনও দেশেই একটি সাধারণ ভাষার তত্ত্ব ঐক্য ও উন্নতির জন্য ভাল নয়। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে (কেউ) দেশে একটা সাধারণ ভাষা নিয়ে আসতে পারে না। আপনি কোনও ভাষাকে চাপিয়ে দিতে পারেন না।“
হিন্দির প্রসঙ্গে আন্না রজনীকান্তের মন্তব্য, ”শুধু তামিলনাড়ু নয়, বিশেষ করে দক্ষিণের কোনও রাজ্যই এটা মেনে নেবে না। উত্তর ভারতের অনেক রাজ্যও এটা গ্রহণ করবে না।“
আরও পডু়ন: পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে ভারতের মনোভাব ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’, ইসলামাবাদের বিবৃতিতে হুমকির সুর
শুধু রজনীকান্ত নয়, দক্ষিণী আরেক সুপারস্টার রাজনীতিবিদ কমল হাসানও হিন্দি তত্ত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। দু’দিন আগেই মাক্কাল নিধি মাইয়াম (এমএনএম) সুপ্রিমো কমল বলেছেন,‘‘ভারত দেশ যখন প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল, তখনই বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম। এখন কোনও শাহ, সুলতান বা সম্রাটের উচিত নয় সেটা পরিত্যাগ করা’’শুধু এখন নয়, কয়েক মাস আগে জাতীয় শিক্ষা নীতিতে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার ঘোষণার বিরুদ্ধেও তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন কমল হাসান।
আরও পড়ুন: মায়ের শ্রাদ্ধের টাকাও নেই অনাথ ভাইবোনের
অমিত শাহের ঘোষণার পরে পরেই যাঁরা প্রতিবাদ করেছিলেন, তাঁদের অগ্রদূত ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারই বিজয়ন। তার পর অমিত শাহের দল বিজেপিরই মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পাও দলের উল্টো লাইনে কথা বলে হিন্দির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন। কর্নাটকের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার দল জেডিএস, কংগ্রেসের কর্নাটক শাখার তরফেও প্রতিবাদ করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষা নীতিতে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত থেকে যেমন কার্যত দক্ষিণী রাজ্যগুলির তীব্র প্রতিবাদে পিছিয়ে আসতে হয়েছে কেন্দ্রকে, এ বারও প্রায় একই পরিস্থিতি। সবচেয়ে বেশি সরব তামিল, তেলুগু, মালয়ালম, কন্নড় ভাষার রাজ্যগুলিতেই।