জেলে বসেই জেল ভাঙার ছক ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নেতা ইয়াসিন ভটকলের। আর তাতে মদত দিচ্ছে ‘দামাস্কাসের বন্ধুরা’। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দাবি, এই ইঙ্গিত খোদ জঙ্গি নেতারই। সম্প্রতি হায়দরাবাদের জেল থেকে স্ত্রীকে ফোনে নাকি এমনটাই আশ্বাস দিয়েছে ভটকল। ইঙ্গিত মিলেছে তার দেশ ছাড়ারও। মাস খানেক আগে এই বিশেষ কল-রেকর্ড হাতে এসেছে গোয়েন্দাদের। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতেই ইয়াসিনের এই কথোপকথন কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা-ও।
কিন্তু কারা ‘দামাস্কাসের বন্ধুরা’? গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, সিরিয়া ও ইরাকের জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কথাই বলেছে ইয়াসিন। আইএস এ ক্ষেত্রে স্থানীয় কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মেলাতে পারে বলেও আশঙ্কা। তাতে সন্দেহের তির মূলত আনসার-উল জঙ্গি গোষ্ঠীর দিকে। ভারতে আইএসের হয়ে একাধিক বার প্রচারের দায়িত্ব নিতে দেখা গিয়েছে এই গোষ্ঠীকে।
পশ্চিম এশিয়া থেকে আইএস এ বার ভারতে ঢুকতে চাইছে বলে দিন কয়েক আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাই মাস খানেক আগে হাতে আসা ইয়াসিনের এই ফোন রেকর্ড ঘিরে নয়া উদ্বেগে প্রশাসন। বাড়ানো হয়েছে জেলের নিরাপত্তা।
ফোনে স্ত্রী জাহিদাকে ইয়াসিন বলেছে, ‘‘দামাস্কাসের বন্ধুদের সাহায্যে শীঘ্রই বেরোব জেল থেকে। বেরিয়েই দামাস্কাসে পৌঁছব।’’
২০০৮-এ ইয়াসিন জাহিদাকে বিয়ে করলেও কিছু দিনের মধ্যে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। গোয়েন্দাদের দাবি, এখনও যোগাযোগ আছে তাদের। অভিযোগ, ২০১৩-র অগস্টে হাওয়ালার মাধ্যমে ইয়াসিনের থেকে মোবাইল ও লাখ টাকার ভেট আসে জাহিদার কাছে। সেই সূত্রেই ভারত-নেপাল সীমান্ত থেকে ইয়াসিনকে ধরে এনআইএ। অভিযোগ, তার আগে ২০০৬ থেকে টানা সাত বছর মুম্বই, বেঙ্গালুরু, পুণে, দিল্লি, বারাণসীতে ধারাবাহিক নাশকতা চালায় ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন। নাশকতায় নাম জড়ায় দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসিনের।
আপাতত হায়দরাবাদের জেলে ইয়াসিন। গোয়েন্দাদের দাবি, এখান থেকেই জাহিদাকে ১০ বার ফোন করেছে সে। কিন্তু জেলের নিরাপত্তা এড়িয়ে কী ভাবে তা সম্ভব হল? তেলঙ্গানার ডিজি (কারা) ভি কে সিংহ জানান, জেলে চোরাই ফোন, বিশেষত মোবাইল ব্যবহার অসম্ভব। কোর্টের নির্দেশে সপ্তাহে দু’বার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি রয়েছে জঙ্গি নেতার। তার প্রতিটি জেল কর্তৃপক্ষ রেকর্ডে রাখেন। এটা জেনেও কেন সতর্ক হল না ইয়াসিন? ডিজি-র বক্তব্য, ‘‘পুলিশকে বোকা বানানোর কৌশলও হতে পারে।’’