প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ কিংবা নির্মল বাংলা মিশনে শৌচালয় হয়েছে প্রতিটি বাড়িতে।
প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে হাতে হাতে মোবাইল। কিন্তু মহিলাদের ঋতুকালে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশ এখনও তিমিরে। মাত্র ৫০ শতাংশ মেয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে পারেন। তা-ও দীর্ঘমেয়াদি সচেতনতা প্রসারের পরে। বাকিরা এখনও ব্যবহার করছেন পরিত্যক্ত শাড়ি বা কাপড়ের টুকরো! ২৮ মে, সোমবার ‘ইন্টারন্যাশনাল মেনস্ট্রুয়াল ডে’ বা আন্তর্জাতিক ঋতু দিবসেও বিভিন্ন সংস্থার দেওয়া তথ্যে ধরা পড়ল একই ছবি।
ছবিটা ধরা পড়েছে ২০১৫-’১৬ সালের জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষায়। তাতে দেখা যাচ্ছে, দেশের ১৫-২৪ বছর বয়সি মেয়েদের অর্ধেক ঋতুকালে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন না। একই ছবি এ রাজ্যেও। সেখানেও দেখা গিয়েছে, এ রাজ্যে মাত্র ৫০ শতাংশ মহিলা ওই বিশেষ সময়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন। যদিও এর মধ্যে স্কুলপড়ুয়ার সংখ্যাই বেশি! সাধারণ মহিলারা স্যানিটারি ন্যাপকিন কিংবা ওই সময়ের বিশেষ স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে এখনও ওয়াকিবহাল নন। যদিও সম্প্রতি রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর থেকে গ্রামগুলিতে মেয়েদের সচেতনতা প্রসারের জন্য ‘দোলনদি’ নামে একটি বই প্রকাশিত করেছে। ‘পিরিয়ড’ বা ঋতুকাল কী, ওই সব দিনে কী ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা উচিত, কেন কাপড়ের বদলে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা প্রয়োজন, সবই বলা হয়েছে তাতে।
আরও পড়ুন: সদ্যোজাতকে রক্ত দিতে রোজা ভাঙলেন তরুণ
কিন্তু স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই অবস্থা কেন?
রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের সচিব ছোটেন লামার কথায়, এখনও ‘ট্যাবু’ রয়ে গিয়েছে ঋতুকাল নিয়ে। বিষয়টি শুধু মেয়েদের সমস্যা হিসেবে গণ্য হয় এবং পুরোটাই একটি গোপন বিষয় হিসেবে দেখা হয়। সেই জন্যই সমস্যা রয়ে গিয়েছে। তাই শুধু মহিলা বা স্কুলপড়ুয়াদের সচেতন করলেই হবে না। ছেলেদেরও সচেতন করার সময় এসেছে। নইলে কোনও মতেই এই সমস্যার সুরাহা হবে না।
শুধু সচেতনতা দিয়ে হবে না বলে মনে করছে এ রাজ্যের যৌনকর্মীদের একটি সংগঠন। তাদের সচিব ভারতী দে বলেন, ‘‘সচেতনতা প্রচারের ফলে অনেক মেয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু জিএসটি চালু হওয়ার পরে দাম বেড়ে যাওয়াও তাঁরা আবার সেই পুরনো ব্যবস্থাতেই ফিরে গিয়েছেন। অর্থাৎ কাপড়ের টুকরো ব্যবহার করছেন। ’’
কিন্তু সর্বস্তরের স্কুলে কি পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে? সর্বশিক্ষা মিশন থেকে সার্বিক কোনও কাজ না-হলেও কিছু ক্ষেত্রে হয়েছে। পঞ্চায়েত দফতর ৪০ শতাংশ স্কুলে পৌঁছতে পেরেছে বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকেরা।