মিরাটের হাসপাতালে লিফ্ট ছিঁড়ে মৃত্যু হয়েছে প্রসূতি মহিলার। —ফাইল চিত্র।
সন্তানের জন্ম দিয়েছেন কয়েক ঘণ্টা আগেই। সুস্থ মাকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সাধারণ ওয়ার্ডে। কিন্তু লিফ্টে উঠতেই বিপত্তি। হাসপাতালের লিফ্ট ছিঁড়ে নীচে পড়ে মৃত্যু হল মহিলার। জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মাকে হারাল সদ্যোজাত।
উত্তরপ্রদেশের মিরাটের শাস্ত্রীনগর এলাকার ঘটনা। সন্তান প্রসবের জন্য বৃহস্পতিবার ক্যাপিটাল হাসপাতালে গিয়েছিলেন ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। সিজ়ার পদ্ধতিতে রাতেই তাঁর সন্তানের জন্ম হয়। মা এবং সন্তান উভয়েই সুস্থ ছিলেন। প্রসবের পর মাকে সাধারণ ওয়ার্ডে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন নার্সেরা। সেই সময়েই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মহিলার স্ট্রেচার লিফ্টে তোলা হয়। আরও অনেকেই ওই লিফ্টে উঠেছিলেন। কিন্তু আচমকা লিফ্ট ছিঁড়ে পড়ে যায়। প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে চারদিক। লিফ্টের ভিতরে আটকে পড়েন অনেকে। তাঁরা প্রাণভয়ে চিৎকার করতে শুরু করেন। কেউ কেউ নীচ থেকে দরজা খুলে লিফ্টের মধ্যে আটকে পড়া লোকজনকে বার করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু লাভ হয়নি। বেশ কিছু ক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা কৌশলে লিফ্ট থেকে সকলকে বার করে আনেন।
লিফ্টের মধ্যে স্ট্রেচারের উপর শুয়ে থাকা ওই মহিলার মাথায় আঘাত লাগে। চোট গুরুতর ছিল। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর সন্তানকেও রাখা হয়েছে অন্য হাসপাতালে।
দুর্ঘটনার পর মৃতের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। হাসপাতালে ভাঙচুরও করা হয় বলে অভিযোগ। ভয়ে চিকিৎসক, নার্স এবং হাসপাতালের কর্মচারীরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। হাসপাতালে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রাতেই হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মিরাটের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক। ওই হাসপাতাল থেকে আরও ১৫ জন রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। হাসপাতালটি আপাতত সিল করে দেওয়া হয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালের চিকিৎসক, সুপার এবং অন্য কর্মচারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বিশেষ দল গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।