প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
হরিয়ানার ভোট নিয়ে দুশ্চিন্তার জেরে এ বার কি ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে ‘ইউ-টার্ন’ করবে মোদী সরকার!
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির আসন কমে যাওয়ার ফলে মোদী সরকার এখন শরিক নির্ভর। নতুন সরকার একের পর এক সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটছে। শেষ উদাহরণ, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের পেনশন প্রকল্পে রদবদল করে নিশ্চিত পেনশনের দাবি মেনে নেওয়া। সরকারের অন্দর মহলে জোর চর্চা, এ বার সামরিক বাহিনীতে মাত্র চার বছরের জন্য নিয়োগের ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পে রদবদল হতে পারে। এই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে ভোটারদের ক্ষোভ রয়েছে বলে কেন্দ্রে বিজেপির শরিক দল জেডিইউ, লোক জনশক্তি পার্টি ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে সংশোধনের দাবি জানিয়েছে।
কংগ্রেস তথা বিরোধী শিবির মনে করছে, হরিয়ানার ভোটের আগেই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পে মোদী সরকার রদবদলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কারণ হরিয়ানা থেকে বিপুল পরিমাণ তরুণ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মোদী সরকার ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প চালু করে মাত্র চার বছরের জন্য সেনায় নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, সেনায় স্থায়ী চাকরির স্বপ্ন দেখা তরুণেরা ধাক্কা খেয়েছিলেন। সেই ক্ষোভের আঁচ লোকসভা নির্বাচনে টের পাওয়া গিয়েছে। এ বার হরিয়ানা বিধানসভা ভোটের আগে সেই ক্ষোভ নিরসনের চেষ্টা করবে বিজেপি। কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের খবর, অগ্নিপথ প্রকল্পে যে প্রয়োজন মাফিক রদবদল হতে পারে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও সে বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেনার তরফেও এ বিষয়ে কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এখন কবে এই রদবদল হবে, তা রাজনৈতিক স্তরে সিদ্ধান্ত হবে।
২০২২-এ ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প চালু করে সামরিক বাহিনীতে চার বছরের জন্য নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এর মধ্যে মাত্র চার ভাগের এক ভাগ জওয়ানদের স্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হবে। বাকিরা চার বছর পরে এককালীন টাকা পেলেও কোনও পেনশন পাবেন না। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সংসদের অধিবেশনে এ নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করেছিলেন। বিভিন্ন রাজ্যেই বিজেপি এ নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে বড় রকম ক্ষোভ টের পেয়েছে। কংগ্রেস ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। নতুন সরকার গঠনের পরেই জেডিইউ, এলজেপি এর পর্যালোচনার দাবি তোলে। সরকারি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অগ্নিবীরদের কাজের মেয়াদ চার বছর থেকে বাড়িয়ে ছয় থেকে আট বছর করা, মেয়াদ শেষ হলে ২৫ শতাংশের বদলে ৫০ শতাংশকে স্থায়ী নিয়োগ করা এবং প্রশিক্ষণের সময়সীমা ৬ মাস থেকে বাড়িয়ে ৯-১০ মাস করার ভাবনাচিন্তা চলছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, তৃতীয় মোদী সরকারকে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক ‘ইউ-টার্ন’ করতে হচ্ছে। বাজেটের আবাসনে মূলধনী আয়ে করের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, ওয়াকফ বিল জেপিসি-তে পাঠানো, সম্প্রচার বিল প্রত্যাহার, সরাসরি আমলা পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, পেনশন প্রকল্পে রদবদল করতে হয়েছে। আমজনতা তথা বিরোধীদের চাপে অগ্নিপথ প্রকল্পেও রদবদল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।