Rajasthan

‘প্রয়োজনে ধর্না রাষ্ট্রপতি ভবনে’, ঘোষণা গহলৌতের

শনিবার রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ, অবস্থান করেছেন রাজস্থান কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজভবনকে কাজে লাগিয়ে গহলৌত সরকারকে ফেলার চেষ্টা করছে বিজেপি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জয়পুর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ১৯:৩৯
Share:

এবার সঙ্ঘাতে রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র এবং মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত— ফাইল চিত্র।

বিধানসভার অধিবেশন ডেকে তিনি অবিলম্বে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে চান। কিন্তু রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের এই প্রস্তাবে এখনও সায় দেননি রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। কাজ হয়নি জয়পুরের রাজভবনে কংগ্রেস বিধায়কদের ধর্নাতেও। এই পরিস্থিতিতে রবিবার বিকেল ৪টেয় ফের রাজভবনে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৈঠক পিছিয়ে গিয়েছে বলে রাজ্যপালের দফতর সূত্রের খবর।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে শনিবার দিনভর রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ, অবস্থান করেছেন রাজস্থান কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। রাজধানী জয়পুরের পাশাপাশি কোটা, জোধপুর, উদয়পুরের মতো শহরে হয়েছে আন্দোলন। কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজভবনকে কাজে লাগিয়ে গহলৌত সরকারকে ফেলার চেষ্টা করছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত মরুরাজ্যের রাজনীতির লড়াইকে নয়াদিল্লিতে নিয়ে যাওয়ারও বার্তা দিয়েছেন। কংগ্রেস বিধায়ক ও নেতাদের এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির ষড়যন্ত্র সফল হতে দেব না। প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি ভবন বা প্রধানমন্ত্রীর বাংলোর বাইরে আমরা ধর্নায় বসব।"

হাইকোর্টের নির্দেশে সচিন পাইলট-সহ ১৯ জন বিদ্রোহীর বিধায়কপদ আপাতত সুরক্ষিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গহলৌত শিবির চাইছে দ্রুত বিধানসভার অধিবেশন ডেকে আস্থাপ্রস্তাব পাশ করিয়ে নিতে। পরিষদীয় বিধি অনুযায়ী সে ক্ষেত্রে ছ’মাস সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব মেনে রাজ্যপাল দ্রুত বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে রাজি হননি বলে রাজভবন সূত্রের খবর. রাজ্যপাল যুক্তি দিয়েছেন, সাধারণ ভাবে পরিষদীয় বিধি মেনে অন্তত ২১ দিন সময় প্রয়োজন। বিজেপি বা অন্য কোনও বিরোধী শিবির রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাবও আনেনি। এই পরিস্থিতিতে কেন বিধানসভার অধিবেশন ডাকা প্রয়োজন, সে বিষয়ে মন্ত্রিসভার কাছে ছ’দফা প্রশ্নের জবাব চেয়েছিলেন রাজ্যপাল।

Advertisement

আরও পড়ুন: চিনকে ঠেকাতে ‘মালাবারে’ অস্ট্রেলিয়া, নয়াদিল্লির পরিকল্পনায় সায় আমেরিকার

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত ঘনিষ্ঠ বিধায়করা বিধানসভা অধিবেশনের জন্য রাজভবনে পাঁচ ঘণ্টা ধর্নায় বসেছিলেন৷ রাজ্যপাল তাঁদের আশ্বাস দেন, তিনি সংবিধানের ১৭৪ ধারা মেনে চলবেন৷ এরপর ধর্না প্রত্যাহার করেন কংগ্রেস বিধায়করা। রাতেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, করোনা পরিস্থিতি এবং রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য বিধানসভার অধিবেশন ডাকা প্রয়োজন। মন্ত্রিসভার আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে গৃহীত এই প্রস্তাব রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়।

কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এখনও গহলৌতের কাছে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ম্যাজিক ফিগার’ রয়েছে। কিন্তু তাঁর শিবিরের অনেক বিধায়কও আর হোটেলবন্দি হয়ে থাকতে রাজি হচ্ছেন না। আবার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের আগেই বিধায়করা ‘বাইরে’ এলে ঘোড়া কেনাবেচায় খেলায় বিজেপিকে ঠেকানো কঠিন হয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সচিন শিবিরের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না-করার জন্য বিধানসভার স্পিকারকে হাইকোর্টের ‘বার্তা’ও কিছুটা বেকায়দায় ফেলেছে গহলৌত শিবিরকে।

আরও পড়ুন: মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর হুসেন রানার জামিনের আর্জি খারিজ করল মার্কিন আদালত​

রাজস্থান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা গুলাবচন্দ কঠেরিয়া আজ বলেন, "রাজস্থানে রাজনৈতিক সঙ্কটে বিজেপির কোনও ভূমিকা নেই। কংগ্রেস নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্ব আড়াল করার জন্য নাটক করছে। রাজ্যপালের পদকেও কালিমালিপ্ত করতে চাইছে।’’ এদিন সন্ধ্যায় কঠেরিয়ার নেতৃত্বে বিজেপি প্রতিনিধিদল রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছে। আগামী ২৭ জুলাই সচিন শিবিরের বিরুদ্ধে স্পিকার সি পি জোশীর আবেদনের শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। বিজেপি সূত্রের খবর, তার আগে পর্যন্ত ‘স্থিতাবস্থা’ বজায় রাখাই দলের কৌশল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement