স্বামীর চিতায় স্ত্রীর দেহ, সহমরণ কি না প্রশ্ন

রূপ কানোয়ারের স্মৃতি উস্কে দিলেন উষা। মঙ্গলবার স্বামী তুকারাম মানের চিতা থেকে উদ্ধার হয় উষার পোড়া দেহ। তার পর থেকেই ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশ্নটা। উষাও কি সতী হলেন? রবিবার সন্ধেতে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মারা যান মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলার লোহাটা গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর তুকারাম। লাতুরের এসপি দানেশ্বর চহ্বাণ জানান, সেই রাতেই তুকারামের দেহ দাহ করা হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লাতুর শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০৭
Share:

রূপ কানোয়ারের স্মৃতি উস্কে দিলেন উষা।

Advertisement

মঙ্গলবার স্বামী তুকারাম মানের চিতা থেকে উদ্ধার হয় উষার পোড়া দেহ। তার পর থেকেই ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশ্নটা। উষাও কি সতী হলেন?

রবিবার সন্ধেতে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মারা যান মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলার লোহাটা গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর তুকারাম। লাতুরের এসপি দানেশ্বর চহ্বাণ জানান, সেই রাতেই তুকারামের দেহ দাহ করা হয়। কিন্তু সোমবার তাঁর বাড়ির লোকজন দেখেন তুকারামের দেহ ঠিক মতো দাহ হয়নি। আধপোড়া অবস্থায় রয়েছে। তুকারামের দেহ আবার দাহ করা হয়। আর সোমবার রাত থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান পঞ্চাশ বছরের উষা। মঙ্গলবার তুকারামের পরিবার তাঁর চিতা থেকে অস্থি সংগ্রহ করতে গিয়ে স্বামীর চিতায় উষার পোড়া দেহ দেখতে পান। গ্রামবাসীদের ধারণা, স্বামীর সঙ্গে সহমরণে গিয়েছেন উষা। গ্রামবাসীরা আর একটি চিতা তৈরি করে উষার দেহ দাহ করেন।

Advertisement

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, উষা কি নিজের ইচ্ছেয় সতী হয়েছেন? নাকি তাঁকে জোর করা হয়েছে? যে প্রশ্নটা উঠেছিল রূপ কানোয়ারের ক্ষেত্রেও।

১৯৮৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাজস্থানের শিকার জেলার দেওরালা গ্রামে স্বামীর সঙ্গে সহমরণে গিয়েছিলেন বছর আঠারোর রূপ কানোয়ার। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় হয়। কিছু সংবাদমাধ্যেমের দাবি ছিল, অনেকের উপস্থিতিতে জোর করে রূপকে স্বামীর চিতায় তুলে দেওয়া হয়। অন্য কিছু সংবাদমাধ্যমের দাবি ছিল, রূপ নাকি তাঁর দেওরকে জানিয়েছিলেন, তিনি সহমরণে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেই যেন তাঁর স্বামীর চিতায় আগুন দেওয়া হয়।

গত বছরের ডিসেম্বরে বিহার থেকেও সহমরণের খবর পাওয়া গিয়েছিল। সাহারসা জেলার পারমানিয়া গ্রামে ৬৫ বছরের এক মহিলা স্বামীর চিতায় লাফ দিয়ে পুড়ে মরেছিলেন। উষার মতো এই মহিলাও বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। বাড়ির লোকজন খুঁজতে খুঁজতে শ্মশানে গিয়ে দেখেন, স্বামীর চিতায় পুড়ছেন সেই মহিলা। পুলিশি সূত্রের খবর, গ্রামবাসীরা তাদের জানিয়েছিলেন, মহিলাকে স্বামীর চিতায় পুড়তে দেখেও তাঁর বাড়ির লোকজন তাঁকে বাঁচানোর কোনও চেষ্টা করেননি। দাঁড়িয়ে থেকে তাঁকে পুড়ে মরতে দেখেছিলেন।

উষার ক্ষেত্রে কী হয়েছিল, তা জানার জন্য স্থানীয় কিল্লারি থানা দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে। তবে থানার এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, এটা সতী হওয়ার ঘটনা নয়। আর এক পুলিশ কর্তা জানান, বেশ কয়েক দিন ধরেই উষা অসুস্থ ছিলেন। সম্প্রতি তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘উষা বেশ দুর্বল ছিলেন। এই রকম অবস্থায় সোমবার রাত থেকে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পর দিন সকালে স্বামীর চিতায় উষার পোড়া দেহ উদ্ধার হয়।’’ স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এই রকম অসুস্থ, দুর্বল উষার পক্ষে কি নিজে নিজে সতী হওয়া সম্ভব?

উষার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দানেশ্বর চহ্বাণ। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘রবিবার থেকে এত ঘটনা ঘটে গেল, কিন্তু না তুকারাম-উষার পরিবারের লোকজন, না গ্রামবাসী কেউই পুলিশের কাছে কিছু জানালেন না কেন?’’

ফলে বাড়ছে রহস্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement