উত্তরকাশীর সেই সুড়ঙ্গে উদ্ধারের কাজ। — ফাইল চিত্র।
ঠিক এক মাস আগে তাঁর নেতৃত্বে ১২ জনের উদ্ধারকারী দল উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারায় ‘ইঁদুরের গর্ত’ খুঁড়ে সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিকের প্রাণ বাঁচিয়েছিল। সেই অভিযানের ‘দলপতি’ ওয়াকিল হাসান জানালেন, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামীর দেওয়া ৫০ হাজার টাকা করে পুরস্কারের চেক তাঁরা ভাঙাবেন না!
ওয়াকিল বলেন, ‘‘যে দিন আমাদের চেকগুলি হস্তান্তর করা হয়েছিল সে দিনই আমি মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের অসন্তোষ জানিয়েছিলাম। আধিকারিকদের আশ্বাস দেওয়ার পর আমরা ফিরে এসেছিলাম। আশা করেছিলাম আমাদের সম্পর্কে কিছু ঘোষণা কয়েক দিনের মধ্যে করা হবে। যদি প্রতিশ্রুতি না রাখা হয়, আমরা চেক ফেরত দেব।’’ আর এক উদ্ধারকারী বলেন, ‘‘আমরা যে কাজ করেছি, তার তুলনায় ৫০ হাজার টাকা কিছুই নয়।’’
কেন এমন সিদ্ধান্ত? ওয়াকিলের কথায়, ‘‘উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ধামীর আচরণ আমাদের ভূমিকার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হয়নি। তাই এমন সিদ্ধান্ত।’’ প্রসঙ্গত, গত ২৮ নভেম্বর উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার হওয়া ৪১ জন শ্রমিককে এক লক্ষ টাকার চেক-সহ নানা পুরস্কার এবং সুবিধা দিলেও উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ধামী উদ্ধারকারী ‘র্যাট-হোল মাইনার’ দলের জন্য মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা পারিতোষিক দিয়েছিলেন। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল সে সময়।
গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মতাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। সুড়ঙ্গটি সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় দু’কিলোমিটার দীর্ঘ। ধসে পড়া ভাঙা সুড়ঙ্গের ভিতরে প্রায় ৬০০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পিছনে আটকে পড়েন কর্মরত ৪১ জন শ্রমিক। নানা প্রযুক্তি এবং যন্ত্র ব্যবহার করে উদ্ধারের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। অবশেষে দুর্ঘটনার ১৭ দিন পর ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে ওই ৪১ জনকে উদ্ধার করেছিলেন ওয়াকিল এবং তাঁর ১১ জন সঙ্গী। কোদাল-কুড়ুল-গাঁইতি-বেলচার মতো মান্ধাতার আমলের সরঞ্জাম ব্যবহার করেই এসেছিল সাফল্য।