প্রাক্তন সাংসদের পাশে দাঁড়ালেন দিল্লির মহিলা কংগ্রেস সেবাদলের সভাপতি রাজকুমারী গুপ্ত। ছবি: টুইটার।
তুঘলক লেনের সরকারি বাংলো খালি করে দেওয়ার পর দিল্লিতে কোথায় থাকবেন রাহুল গান্ধী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল দলের অন্দরে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির মঙ্গলপুরী এলাকার নিজের বাড়িটি প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতিকে দিয়ে দিলেন দলেরই এক নেত্রী, দাবি কংগ্রেসের।
সাংসদ পথ খারিজ হওয়ার পর গত সোমবার রাহুলকে লোকসভার সচিবালয় থেকে নোটিস পাঠিয়ে জানানো হয়, সাংসদ হিসেবে তিনি যে সরকারি বাংলোয় থাকছেন, সেই ১২, তুঘলক লেনের বাড়ি ২২ এপ্রিলের মধ্যে খালি করতে হবে। সেই বাড়ি খালি করার চিঠি পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাহুল জানিয়ে দেন, তিনি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সরকারি বাংলো ছেড়ে দেবেন। এমতাবস্থায় দলের অধুনা প্রাক্তন সাংসদের পাশে দাঁড়ালেন দিল্লির মহিলা কংগ্রেস সেবাদলের সভাপতি রাজকুমারী গুপ্ত। ঘটনাচক্রে, এই বাড়িটি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আমলে পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন রাজকুমারী।
শনিবার কংগ্রেস সেবাদলের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি টুইট করে জানানো হয়, রাজকুমারী তার মঙ্গলপুরী এলাকার বাড়িটি রাহুলের নামে করে দিয়েছেন। টুইটে লেখা হয়েছে, "রাজকুমারী বলেছেন, মোদীজি, রাহুলজিকে বাড়ি থেকে উৎখাত করতে পারেন। কিন্তু মানুষের হৃদয় থেকে নয়।"
সুরাতের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট মোদী পদবি নিয়ে মানহানির মামলায় রাহুলকে সাজা শোনানোর পরেই লোকসভার সচিবালয় রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। এ নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেসকে পালটা নিশানা করেছে বিজেপিও। এই টানাপড়েনের মধ্যেই রাহুলকে সরকারি বাংলো খালি করার নোটিস ধরানো হয়।
রাহুলকে নিশানা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেছেন, তুঘলক লেনের বাংলো রাহুলের নয়, জনতার সম্পত্তি। কংগ্রেস শিবির থেকে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীরা সাংসদ বা সরকারি পদে না থেকেও সরকারি বাংলোয় রয়েছেন। গুলাম নবি আজ়াদ দু’বছর আগে সংসদ পদ থেকে বিদায় নিলেও তাঁকে উৎখাত করা হয়নি। কারণ তিনি কংগ্রেস ছেড়ে নিজের দল গড়ে বিজেপিকে সাহায্য করছেন।
রাহুলের আগে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকেও লোদী এস্টেটের সরকারি বাংলো খালি করে দিতে বলা হয়। তিনি এখন বেসরকারি আবাসনে থাকেন। কিন্তু রাহুল কোথায় থাকবেন, তা নিয়েই জল্পনা চলছিল কংগ্রেসের অন্দরে। কারণ, রাহুল নিজেই ভারত জোড়ো যাত্রায় বলেছিলেন, ৫২ বছর বয়স হয়ে গেলেও তাঁর নিজস্ব বাড়ি নেই। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘বিজেপি রাহুলকে দুর্বল করার সব রকম চেষ্টা করবে। রাহুল বাংলো ছাড়লে উনি মায়ের সঙ্গে থাকতে পারেন। আমি একটা বাংলো ছেড়ে দিতে পারি। কিন্তু সরকারের মনোভাব, হেনস্থা, অপমান করার চেষ্টার নিন্দা করছি।’’ এই পরিস্থিতিতেই ত্রাতা হয়ে এগিয়ে এলেন রাজকুমারী।