Arvind Kejriwal

আজই কি কেজরীর ইস্তফা, পরিবর্তে কে, তৎপরতা আপে

পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তার নাম আপাত ভাবে চূড়ান্ত করতে আজ বৈঠকে বসেছিলেন আপ শীর্ষ নেতৃত্ব। ছিলেন মণীশ সিসৌদিয়া, রাঘব চড্ডা-সহ দলের প্রথম সারির নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:০৭
Share:

অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।

সব ঠিক থাকলে আগামিকাল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছেন আম আদমি পার্টি (আপ)-র আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরীওয়াল। কে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন, তা ঠিক করতে আগামিকালই বৈঠক ডেকেছে আপ। বিজেপির বক্তব্য, যে দিন আবগারি দুর্নীতির কারণে গ্রেফতার হয়েছিলেন, সে দিনেই নৈতিক কারণে ইস্তফা দেওয়া উচিত ছিল কেজরীওয়ালের। গ্রেফতার হওয়ার ১৭৭ দিন পরে অবশেষে আপ প্রধানের নৈতিকতা জেগে উঠেছে।

Advertisement

পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তার নাম আপাত ভাবে চূড়ান্ত করতে আজ বৈঠকে বসেছিলেন আপ শীর্ষ নেতৃত্ব। ছিলেন মণীশ সিসৌদিয়া, রাঘব চড্ডা-সহ দলের প্রথম সারির নেতারা। আপ সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামিকাল বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। যেখানে কেজরীওয়ালের উত্তরসূরি কে হবেন তা ঠিক করা হবে। তারপর বিকেল সাড়ে ৪টেয় দিল্লির উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন কেজরী। দল জানিয়েছে, সেই বৈঠকে সাক্সেনার হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেবেন তিনি।

আপ সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কয়েকটি নাম নিয়ে চর্চা হয়। দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন আপ নেত্রী অতিশী। দলের অন্দরে যিনি কেজরীর বিশেষ আস্থাভাজন বলেই পরিচিত। এ ছাড়া রয়েছেন তরুণ নেতা তথা দিল্লি সরকারের মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ। এ ছাড়া আলোচনা হয়েছে বর্ষীয়ান নেতা গোপাল রাই ও কৈলাস গহলৌতের মতো নেতাদের নিয়েও। দু’জনেই কেজরীওয়ালের কাছের ও দলে কাজের লোক হিসেবে পরিচিত। আলোচনা চলছে দলের দলিত নেত্রী তথা দিল্লি বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার রাখী বিড়লার নাম নিয়েও। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে দিল্লির পাশাপাশি, ভোটের আগে হরিয়ানার দলিত সমাজকে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে। সে ক্ষেত্রে রাখীকে সামনে রেখে দু’রাজ্যের ভোটেই ফায়দা পাবে আপ।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে কালো ঘোড়া হলেন কেজরীওয়ালের স্ত্রী সুনীতা। এ নিয়ে বিজেপির ব্যাখ্যা, কেজরীওয়াল শিবির খুব ভাল করেই জানে, এক বার ক্ষমতা হাত থেকে বেরিয়ে গেলে তা ফিরে পাওয়া কঠিন। সে ক্ষেত্রে দলেই নেতৃত্বের সঙ্কট তৈরি হতে পারে। কেজরীওয়াল ও নতুন মুখ্যমন্ত্রী দু’টি আলাদা ক্ষমতার কেন্দ্র তৈরি হবে। যা আদপেই চান না কেজরীওয়াল। কিন্তু স্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী করলে তাঁর বিরুদ্ধে পরিবারবাদ তথা স্বজণপোষণের অভিযোগ তুলে সরব হবে বিরোধীরা। ভোটে এর ফলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না আপ নেতারা।

গত কাল ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশের পাশাপাশি, নভেম্বরে ভোট ঘোষণার দাবি জানিয়েছিলেন কেজরী। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে ফেব্রুয়ারিতেই ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। এখন আপ নেতৃত্ব যদি বিধানসভা ভেঙে দিয়ে দ্রুত নির্বাচনের জন্য আর্জি জানান, তা হলে সময়ের আগে ভোট করানোর প্রশ্নে কমিশন ভাবনাচিন্তা করতে পারে। জামিনে মুক্ত কেজরীওয়ালের কাছে সমস্যার হল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি স্বেচ্ছায় কোনও ফাইলে সই করতে অপারগ। বিরোধীদের আশঙ্কা, কেজরীওয়াল না পারলেও, নতুন মুখ্যমন্ত্রী যিনি হবেন, তিনি ক্ষমতায় এসেই বিধানসভা ভেঙে দিয়ে ভোটে চলে যেতে পারেন। তা হলে বিরোধী দলগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে পড়তে হতে পারে কংগ্রেস নেতৃত্বকে। তাঁদের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপির নতুন করে কোনও ফায়দা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু কংগ্রেস দিল্লিতে ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়া শুরু করেছিল। এখন দ্রুত ভোট ঘোষণা এবং ভোট ঘোষণার আগে নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে বড় মাপের কোনও জনমুখী ঘোষণা করে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী মেঘকে কাটাতে উদ্যোগী হতে পারেন আপ নেতৃত্ব। তাতে নতুন করে আপের জনপ্রিয়তা বাড়ার সম্ভবনা। যাতে আখেরে ক্ষতি কংগ্রেসরই। দলের বেশ কিছু প্রথম সারির নেতা সে ক্ষেত্রে টিকিটের লোভে আপ শিবিরে যোগদান করতে পারেন বলেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement