AICC

AICC: কবে ও কাকে এআইসিসির বঙ্গের দায়িত্ব

কংগ্রেসে ইতিমধ্যে সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকে সদস্যপদ অভিযান শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২১ ০৪:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রায় পাঁচ মাস কেটে গিয়েছে। গত জুন মাসে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। জিতিন প্রসাদের দলত্যাগে এআইসিসি-তে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের পদও খালি হয়ে যায়। জিতিন এর মধ্যে বিজেপিতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের মন্ত্রীও হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেস এখনও সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির কোনও সাধারণ সম্পাদককে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে পাঠাতে পারেননি। এর ফলে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পশ্চিমবঙ্গের কতটা গুরুত্ব রয়েছে, তা নিয়েই দলের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।

কংগ্রেসে ইতিমধ্যে সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকে সদস্যপদ অভিযান শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০২২-এর ২১ জুলাই থেকে ২০ অগস্টের মধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থেকে এআইসিসি-র নতুন সদস্য নির্বাচন হবে। সেপ্টেম্বরে সভাপতি নির্বাচন। এর আগে কি এআইসিসি-তে নতুন করে কাউকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব দেওয়া হবে? না কি সাংগঠনিক নির্বাচনের পরেই বাংলার দায়িত্বে নতুন কাউকে নিয়োগ করা হবে?

Advertisement

কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার দাবি, “খুব শীঘ্রই এআইসিসি-র এক জন সাধারণ সম্পাদককে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে নিয়োগ করা হবে। দলের প্রথা অনুযায়ী, সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া দেখভালের জন্যই একজন সাধারণ সম্পাদক থাকা দরকার। সাংগঠনিক নির্বাচনের পরে নতুন করে এআইসিসি গঠন হলে, তখন আবার দায়িত্ব বণ্টন হবে।” ওই নেতার বক্তব্য, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে এখন আর কোনও রদবদল হবে না। অধীররঞ্জন চৌধুরীই রাজ্যে সভাপতি থাকবেন। সাংগঠনিক নির্বাচনের সময়ে পশ্চিমবঙ্গেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন হবে।

আগামী কয়েক মাসের জন্য কাকে এআইসিসি-তে বাংলার দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়ে অবশ্য এখনও ইঙ্গিত নেই। কিছু দিন আগে সলমন খুরশিদ, গৌরব গগৈয়ের নাম নিয়ে জল্পনা চলছিল। কিন্তু খুরশিদকে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী ইস্তাহার তৈরির দায়িত্ব দিয়েছেন। গগৈ আগে বাংলার দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু এখন তাঁকে অসমেই বেশি সময় রাখা প্রয়োজন বলে কংগ্রেসের বড় অংশের মত। বি কে হরিপ্রসাদের মতো কয়েক জন প্রবীণ নেতার নাম নিয়েও ভাবনাচিন্তা হচ্ছে বলে কংগ্রেস
সূত্রের খবর।

Advertisement

কংগ্রেসের সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নেতাদের অবশ্য দাবি, পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে কোনও সাধারণ সম্পাদক না থাকলেও এআইসিসি-র দুই সম্পাদক, বি পি সিংহ ও মহম্মদ জাভেদকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। এঁদের মধ্যে বি পি সিংহ উপনির্বাচনের সময়ও রাজ্যে গিয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা বি পি সিংহর কাজ মূলত হাই কমান্ডের বার্তা রাজ্যের নেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। মহম্মদ জাভেদ এখন বিহারের কিসানগঞ্জের সাংসদ। ফলে তিনি এখন পশ্চিমবঙ্গে খুব বেশি সময় দিতে পারছেন না। সর্বোপরি প্রদেশ কংগ্রেসের প্রথম সারির প্রবীণ নেতাদের তুলনায় তাঁরা অনেকটাই কম ওজনের নেতা। ফলে তাঁদের পক্ষে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের নির্দেশ দিয়ে কাজ করানোও মুশকিল। এআইসিসি-র এক নেতার বক্তব্য, “গৌরব গগৈ, জিতিন প্রসাদের মতো তরুণ নেতাকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব দেওয়াতেও একই সমস্যা হয়েছিল। তাঁরা এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক হলেও রাজ্যের নেতারা তাঁদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি।”

এআইসিসি-র এক নেতা বলেন, পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে কাউকে পাঠানোর আগে রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সমীকরণ কী হবে, সেটাও স্পষ্ট হওয়া দরকার। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে খালি হাতে ফেরার পরে জিতিন প্রসাদও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে একই কথা বলেছিলেন। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু দিন আগে জাতীয় স্তরে বিরোধী জোট নিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এখন আবার তিনি ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত কংগ্রেসকে নিশানা করছেন। প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী আবার অভিযোগ তুলছেন, মমতা বিজেপির হয়েই বিরোধী জোটে ফাটল ধরাতে চান। এআইসিসি এখনও এতটা কঠোর অবস্থান না নিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়ায় যাওয়ার পরে তৃণমূল নেতৃত্বকে আত্মসমীক্ষার আহ্বান জানিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তাঁরা বিজেপিরই ফায়দা করে দিচ্ছেন
না তো!

তবে কংগ্রেস কোনও ভাবেই তৃণমূলের সঙ্গে জাতীয় স্তরে জোটের দরজা বন্ধ করতে নারাজ। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র নেতারও জানা দরকার, তিনি কলকাতায় পৌঁছে তৃণমূল নেতৃত্বকে কতটা আক্রমণ করবেন, আর কতটা তৃণমূলের
পাশে থাকবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement